তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, পরপর তিনবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকার কারণে আওয়ামী লীগে কিছু অনুপ্রবেশকারী ঢুকেছে।সেই অনুপ্রবেশকারীদের অনেক সুযোগসন্ধানী অপকর্মের সাথে যুক্ত। সেই সুযোগ সন্ধানীরা তাদের অপকর্ম ঢাকতে রাজনৈতিক ঢাল ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে আমাদের সাথে যুক্ত হয়েছে। এদেরকে খুঁজে বের করে সংগঠন থেকে বের করে দেবার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর কেউ কোথাও ধরা পড়লেই তাকে আওয়ামী লীগের নেতা বানানোর বাতিক সঠিক নয়।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় সম্মেলন কক্ষে টিভি নাট্য পরিচালকদের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ড এর সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। পুরানো ঢাকায় দু’জনের বাড়ি থেকে অবৈধ অর্থ উদ্ধার ও পাপিয়া’র গ্রেপ্তার ও তাদের সাথে আওয়ামী লীগের সংশ্রব সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাবে হাছান বলেন, যুব মহিলা লীগের সাথে সম্পর্কিত ব্যক্তির বিষয়ে যুব মহিলা লীগ থেকে ইতোমধ্যেই বক্তব্য দেয়া হয়েছে ও তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, পিলখানা বিদ্রোহের বিচারকে সমসাময়িক বিশ্বে বৃহৎ বিচারকাজের এক অনন্য নজীর।এত বড় ঘটনা নিয়ে এতগুলো স্বাক্ষী সম্বলিত বিচার কার্য পৃথিবীর ইতিহাসে কম হয়েছে। আদালতের নির্দেশানুযায়ী সেকাজে সরকার সহযোগিতা করেছে এবং আদালতে রায় হয়েছে। রায়ের প্রেক্ষিতে যারা অভিযুক্ত হয়েছেন তারা সাজাভোগ করছেন।
পিলখানা হত্যাকান্ডের ১১তম বার্ষিকীতে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের সাথে যারা সরাসরি যুক্ত ছিল তাদের বিচার হয়েছে। কিন্তু মির্জা ফখরুল সাহেবের কথা শুনে মনে হয়, পেছনের কলকাঠি পরিচালকদের বিচারের জন্য বেগম খালেদা জিয়াসহ সেসব বিষয় তদন্তের মাধ্যমে বের হয়ে আসা প্রয়োজন। কারণ এ বিদ্রোহ যেদিন হয়, সেদিন ভোরবেলা বেগম খালেদা জিয়া তার ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে যান। আর সেই রাতে এবং দিনে তিনি তারেক রহমানের সাথে ৪০ বারের বেশি ফোনে কথা বলেন। এই রহস্য উন্মোচন হওয়া প্রয়োজন।
মির্জা ফখরুল সাহেবের বক্তব্য প্রথমত: আদালত ও বিচারের প্রতি কটাক্ষ, দ্বিতীয়ত তার দাবি অনুসারে আরো অধিক তদন্তের মাধ্যমে বেগম জিয়া যিনি সকাল এগারোটার আগে ওঠেননা বলে প্রচলিত, তিনি কেন প্রত্য‚ষে উঠে চলে গেলেন, তার পলাতক পুত্রের সাথে এতোবার কথা বললেন তা তদন্ত করে বিচার হওয়া প্রয়োজন বলেন ড. হাছান।
আর বিএনপি সবকিছুতেই ভুলত্রুটি খোঁজার চেষ্টা করে’ উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার শাস্তি নিয়ে আদালতের সাথে দ্বিমত পোষণ, আদালতের প্রতি বৃদ্ধাঙগুলি প্রদর্শন, তারেক রহমানের শাস্তি নিয়েও প্রশ্ন তোলা, আদালতের রায়কে কটাক্ষ করে কথা বলা, আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুমকি দেয়া, আন্দোলনের অপচেষ্টা করা- এই কাজগুলো বিএনপি ক্রমাগতভাবে করে আসছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আগে যথেচ্ছভাবে বিদেশি সিরিয়াল ডাবিং করে দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে প্রচারের মাধ্যমে বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশরোধে আমরা একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছি। এই কমিটি প্রথমে বিদেশি সিরিয়ালগুলো এবং আমাদের সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট পরীক্ষা করে তারপর অনুমতি দেবে। মন্ত্রী বলেন, বিদেশি দ্বিতীয় গ্রেডের শিল্পী দিয়ে বিজ্ঞাপনচিত্র নির্মাণ ও তা টিভিতে প্রচারের হিড়িকের ফলে আমাদের দেশের যোগ্য শিল্পী-কুশলীরা বঞ্চিত হচ্ছিল। এক্ষেত্রে আগে থেকেই পৃথক কর ছিল, কিন্তু তা যথেষ্ট নয়, বিধায় আমরা নূতন উদ্যোগ নিয়েছি। বিদেশী শিল্পী দিয়ে নির্মিত বিজ্ঞাপন স¤প্রচারে অতিরিক্ত কর আরোপের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর সাথে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
বৈঠকে তথ্যসচিব কামরুন নাহারকে পুষ্পস্তবক দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। ডিরেক্টরস গিল্ড সভাপতি সালাহউদ্দীন লাভলু’র নেতৃত্বে সাধারণ সম্পাদক এস এ হক অলিক, সহ-সভাপতি শহীদ রায়হান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক তুহিন হোসেন, কার্যনির্বাহী পরিষদ সদস্য আরিফ আল আহনাফ ও ইসমাইল আহমেদ তালুকদার অয়ন উপস্থিত ছিলেন।