Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পিলখানায় নিহত পুত্র ও পুত্রবধুর হত্যার বিচার দেখে যেতে চান শতবষি জুলেখা বেগম

চাঁদপুর থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৬:৩৯ পিএম

জীবনের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে জুলেখা বেগম অতীত স্মৃতি আঁকড়ে ধরে ন্যায় বিচারের প্রহর গুণছেন। তার শুধু একটাই চাওয়া কখন এ হত্যাকান্ডের রায় কার্যকর হবে, পুত্র ও পুত্রবধুর হারানোর দৃষ্টান্তমূলক রায় দেবে আদালত। বিডিআর বিদ্রোহে পিলখানায় সস্ত্রীক নিহত লেঃ কর্ণেল (অবঃ) দেলোয়ার হোসেনের মা জুলেখা বেগম (১১০) তাঁর পুত্র ও পুত্রবধুর হত্যাকারিদের বিচারের রায় কার্যকর দেখে যেতে চান।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে বিডিআরের কিছু সংখ্যক বিপথগামী জওয়ানের নৃশংসতায় যে ক’জন সেনা কর্মকর্তা প্রাণ হারিয়েছিলেন লেঃ কর্ণেল (অবঃ) দেলোয়ার হোসেন তাদের মধ্যে একজন। অবসরপ্রাপ্ত এ সেনা কর্মকর্তা চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় এসেছিলেন বিডিআর সপ্তাহের দাওয়াতে আমন্ত্রিত অতিথি হয়ে।
নিহত বিডিআর’র ডিজি শাকিল আহমদ ছিলেন তাঁর ব্যাচম্যাট ও অন্তরঙ্গ বন্ধু। বিডিআর বিদ্রোহের সময় শাকিল আহমদের বাসাতেই স্ত্রী রশনী ফাতেমা আক্তার লাভলীসহ ছিলেন তিনি।
রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০ টায় লেঃ কর্নেল (অবঃ) দেলোয়ার হোসেনের পৈতৃক বাড়ি চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার নিজমেহার গ্রামের পাটোয়ারি বাড়িতে গেলে তাঁর মা জুলেখা বেগম সাংবাদিকদের দেখেই হাউমাউ করে কেঁদে উঠেন।
কান্না জড়িত কন্ঠে তিনি জানান, ‘আজ ১০ বছর হলো আমার দেলুকে বুকে জড়িয়ে ধরতে পারি না, খুনিরা আমার ছেলের বউটাকেও মাফ করেনি। আমার নাতনিরা বাবা মাকে হারিয়ে কত কষ্টে আছে। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে আল্লাহর কাছে আমার মিনতি আমি যেন আমার পুত্র ও পুত্রবধুর খুনিদের বিচার দেখে মরতে পারি।’
নিহত দম্পতির ২ কন্যা সন্তান রয়েছে। বড় মেয়ে শারমিন ফাইরুজ লেখাপড়া সমাপ্ত করে চট্টগ্রামে স্বামীর সাথে রয়েছেন। ছোট মেয়ে নাজিফা ইসমাম ইংল্যান্ডে ইউনিভার্সিটি অব ব্রিষ্টনে উচ্চ শিক্ষা নিচ্ছেন।
নিহতের বড় মেয়ে শারমিন ফাইরুজ মুঠোফোনে সাংবাদিকদের জানান, ‘হত্যাকান্ডের সময় আমি লন্ডন কলেজ অব একাউন্টেন্সিতে সিএ অধ্যয়নরত ছিলাম। আমার ছোট বোন নাজিফা ইশমাম সে সময় চট্টগ্রাম প্রেসিডেন্সি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়তো। ১০ বছর আগের সে দুর্বিষহ স্মৃতি আজো হৃদয়পটে ভেসে উঠে।’
তিনি জানান, মানুষের মা কিংবা বাবা বিদায় নিলে একজন হয়তো পাশে থাকে আমরা এমনই দুর্ভাগা যে দুজনকেই একসাথে হারিয়েছি। আজ সবই আছে শুধু মাথার উপরের সবচেয়ে বড় ছায়া দু’টি হারিয়ে গেছে।’ হত্যাকান্ডের বিচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আদালতে মামলা বিচারাধিন, আমার বিশ্বাস আমরা ন্যায় বিচার পাবো।’
শাহরাস্তি উপজেলার ঠাকুর বাজারস্থ নিজমেহার পাটোয়ারি বাড়ির মৃতঃ আলতাফ হোসেন পাটোয়ারির কনিষ্ঠ পুত্র লেঃ কর্নেল (অবঃ) দেলোয়ার হোসেন। এলাকাবাসীর কাছে তিনি একজন কৃতি সেনা কর্মকর্তা ও সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে খ্যাত ছিলেন। চাকুরি হতে অবসরে গিয়ে চট্টগ্রামে সপরিবারে থাকতেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পিলখানা হত্যা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ