পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পিলখানা হত্যাকান্ডের ১৩ বছর পূর্ণ হলো গতকাল শুক্রবার। এ উপলক্ষে পিলখানা হত্যাকান্ডে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে। শুক্রবার সকাল ৯টা ১৩ মিনিটে বনানীস্থ সামরিক কবরস্থানে শহীদদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শাহাদাত বরণকারী সেনাকর্মকর্তাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে। প্রথমে প্রেসিডেন্টের পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমদ চৌধুরী সেনাবাহিনীর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
এছাড়া সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম শাহীন ইকবাল ও বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান একসঙ্গে শ্রদ্ধা জানান শহীদের প্রতি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষে সিনিয়র সচিব (জননিরাপত্তা বিভাগ) আখতার হোসেন ও বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম শ্রদ্ধা জানান। এরপর একে একে শহীদ পরিবারের সদস্যরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়া বিএনপি, জাতীয় পার্টি এবং র্যাবের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে।
পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে শহীদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এ সময় কর্মরত সামরিক সদস্যরা স্যালুট প্রদান করেন। পরে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। এছাড়াও এদিন সকল সেনানিবাসের কেন্দ্রীয় মসজিদে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে সব স্তরের সেনাসদস্যগণের উপস্থিতিতে মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
পিলখানা হত্যাকাÐের বিচার হয়েছে, রায়ও কার্যকর হবেঃ পিলখানা হত্যাকান্ডের বিচার হয়েছে এবং রায় যথাযথভাবে কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। গতকাল সকাল ৯টা ১৩ মিনিটে বনানীস্থ সামরিক কবরস্থানে পিলখানা হত্যাকাÐে শহীদদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানানো শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আপনারা বিচারের জন্য যেভাবে ধৈর্য ধারণ করে আসছেন, এভাবে ধৈর্য ধারণ করবেন, আপনারা এ ঘটনার বিচার দেখতে পারবেন। আপনারা এটাও দেখেছেন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচার করতে অনেক সময় লেগেছে। তারপরও আজ আমরা স্বস্তিতে নিঃশ্বাস নিতে পারছি। আমাদের থেকে কালো দাগ মুছে গেছে। আমরা অবশেষে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করতে পেরেছি। এভাবে নৃশংস ও হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটবে আমরা কল্পনাও করিনি। কতিপয় বিপথগামী বিডিআর সদস্যরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
বিচারকার্যের দীর্ঘসূত্রিতার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিচারকার্য দীর্ঘসূত্রতার কারণ হচ্ছে, আমাদের সব উপাদান সংগ্রহ করতে একটু সময় লেগেছে। এছাড়া সাক্ষী জোগাড় করতেও বেশ সময় লেগেছে। চাচ্ছিলাম এই ঘটনার সুন্দর, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বিচার যেন হয়। বিচারকরা তাই করেছেন। আর যেই মামলার বিষয়টি চলমান রয়েছে, সেটা খুব শিগগিরই শেষ হবে। বিচার শেষ হওয়ার পরে আপিল করার একটি সুযোগ থাকে, সেটাও তারা করছেন। আমরা মনে করি, এই প্রক্রিয়া শেষ হলে তারা ন্যায়বিচার পাবেন।
বিশেষ দোয়া মাহফিলঃ রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন (রাওয়া) ২৫ ফেব্রæয়ারি সকালে রাওয়া’র এ্যাংকর হলে তৎকালীন বিডিআর বিদ্রোহে শহিদ সেনা কর্মকর্তাদের স্মরণে একটি বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। এছাড়াও রাওয়া’র উদ্যোগে বনানী সামরিক কবরস্থানে সকালে শহিদ সেনা কর্মকর্তাদের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন সেনাপ্রধান ও রাওয়ার প্রধান পৃষ্ঠপোষক জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, রাওয়া চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আলাউদ্দিন মোহাম্মদ আবদুল ওয়াদুদ, বিপি, এনডিসি, পিএসসি (অব.), রাওয়া সেক্রেটারি জেনারেল লে: কর্নেল কামরুল ইসলাম, পিএসসি (অব.)। গতকাল আইএসপিআরের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজিবি আগের চেয়ে সুশৃঙ্খল বাহিনীঃ বিজিবি ডিজি মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম বলেছেন, বিজিবি আগের চেয়ে অনেক সুশৃঙ্খল ও দক্ষ। শুক্রবার সকালে বনানী সামরিক কবরস্থানে পিলখানা হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহত সেনাকর্মকর্তাদের স্মৃতি প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ কথা বলেন। বিজিবির ডিজি বলেন, এখন বিজিবিতে সরঞ্জামাদিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও অনেক বেশি। ২০১০ সালে বিজিবি আইন হয়েছে, যেটা অত্যন্ত কঠোর।
বিজিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দিবসটি পালন উপলক্ষে বিজিবির সকল স্থাপনায় বিজিবির পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। বিজিবির সকল সদস্য কালো ব্যাজ ধারণ করেছেন। বিজিবির সকল সেক্টর ও ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে হয়েছে বিশেষ দরবার। শুক্রবার জুমার নামাজের পর পিলখানা বিজিবি কেন্দ্রীয় মসজিদ, ঢাকা সেক্টর মসজিদ এবং বর্ডার গার্ড হাসপাতাল মসজিদে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রæয়ারি পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যা করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।