মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী সরকার যে বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন পাস করেছে, তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল রাজ্য প্রস্তাব পাসের পর ম্যাসাচুসেটস রাজ্যের কেমব্রিজে এবার দ্বিতীয় প্রস্তাব পাস হলো।
কেমব্রিজ সিটি কাউন্সিলে মঙ্গলবার ভারতের সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্টের (সিএএ) বিরুদ্ধে সর্বসম্মত প্রস্তাব পাস হয়েছে। এই প্রস্তাবে আইনটি বাতিল করে এবং ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন্স (এনআরসি) বাদ দিয়ে দেশের সেক্যুলার সংবিধান সমুন্নত রাখার জন্য ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। যুক্তরাষ্ট্রের এই শহরেই রয়েছে বিশ্বখ্যাত হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি এবং ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘এটা সিটি কাউন্সিলের গোচরে এসেছে যে, ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর ভারতের পার্লামেন্টে সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট পাস করা হয়েছে, যেখানে প্রথমবারের মতো ধর্মকে নাগরিকত্বের শর্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।’
কেমব্রিজের প্রস্তাবনায় ঘোষণা দেয়া হয়েছে যে, ‘মোদি সরকারের বর্ণবাদী ও দমনমূলক নীতি’ এই শহরের মূল্যবোধের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়, ‘যেখানে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে দক্ষিণ এশিয়ার সকল সম্প্রদায়ের মানুষকে স্বাগত জানানো হয়।’
কেমব্রিজের অধিকার কর্মী র্যাচেল ওয়াইওনের বাবা-মা ব্রিটিশ হলেও তিনি জন্মেছিলেন ভারতে। আল জাজিরাকে তিনি বলেন সিএএ’র মতো আইনের মধ্য দিয়ে ত্রিশের দশকের নাৎসি জার্মানির প্রতিচ্ছবি দেখা যাচ্ছে। ওয়াইওন বলেন, ‘সিএএ’র মধ্য দিয়ে আমরা অধিকাংশই ত্রিশের দশকের জার্মানির ছবি দেখতে পাচ্ছি, যেখানে নাৎসি জার্মানি একই ধরণের পদক্ষেপ নিয়েছিল – যেটার সাথে এনআরসি আর সিএএ’র যথেষ্ট মিল রয়েছে। আমরা এখন জানি যে, এটা হলো হলোকাস্টের প্রথম পদক্ষেপ।’ প্রস্তাবনার পক্ষে সিটি কাউন্সিলের সামনে তিনি সংহতিও জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সিএএ এবং এনআরসি ‘অসাংবিধানিক এবং কয়েক মিলিয়ন মুসলিম, দলিত এবং অন্যান্য কোনঠাসা হয়ে পড়া গ্রুপগুলোকে বিচ্ছিন্ন করে একটা উগ্র ডানপন্থী ফ্যাসিবাদি রাষ্ট্র গড়ার পদক্ষেপ হিসেবে এই আইন করা হয়েছে’। তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের জনগণ এবং যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া সম্প্রদায়ের এটা জানা উচিত যে, এ ধরণের বৈষম্যমূলক আইনের বিরুদ্ধে বিশ্বের সমর্থন তাদের সাথে আছে।’
সিএএ নিয়ে জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থা, মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচ উদ্বেগ জানিয়েছে। ইউএন হাই কমিশনার ফর হিউম্যান রাইটস এই আইনকে ‘প্রকৃতিগতভাবে মৌলিকভাবে বৈষম্যমূলক’ আখ্যা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক মার্কিন কমিশন ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যাতে ভারতের কট্টরপন্থী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়, যিনি মূলত মোদির ঘনিষ্ঠ সহযোগী।
গত মাসে, ২৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে ভারতীয় আমেরিকানরা সিএএ এবং এনআরসি বিরোধী বিক্ষোভ করেছে। এ দিনে ভারত প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপন করে থাকে। ভারত সরকার অবশ্য বিভিন্ন সময়ে বারবার বলেছে যে, সিএএ তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সূত্র: এসএএম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।