মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
দীর্ঘ আলোচনা ও দড়ি টানাটানির পরে তালিবানের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি চুক্তির আশা দেখা গেল। এর ফলে নিজেদের ইতিহাসের দীর্ঘতম যুদ্ধ থেকে বের হয়ে আসার পথে আরো এগিয়ে গেল যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি আফগানিস্তানে কয়েক দশক ধরে চলমান সহিংসতাও অবসানের সম্ভাবনাও তৈরি হল।
শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শুরু করে ৭ দিনের জন্য ‘হিংসা কমাতে সম্মত হয়েছে’ আমেরিকা, তালিবান এবং আফগান সরকারি বাহিনী। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারি দোহায় তালিবানের সঙ্গে আমেরিকা শান্তি চুক্তি করবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়ো। একই কথা জানিয়েছেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘানি। এই খবর নিশ্চিত করেছেন তালিবানের মুখপাত্র জাবিউল্লা মুজাহিদও।
এই সিদ্ধান্তে সবাই খুশি হলেও ভারত মোটেও সন্তুষ্ট হতে পারছে না। তারা আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনীর সরে যাওয়ার সম্ভাবনায় উদ্বিগ্ন। তালিবানের সঙ্গে শান্তি চুক্তির দিন ঘোষণার পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আসন্ন ভারত সফরে আলোচনার টেবিলে বিস্তারিত উঠে আসতে চলেছে কাবুল প্রসঙ্গ।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রে খবর, বিষয়টির সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া তথা ভারতের নিরাপত্তার প্রশ্নটি ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। তাই ট্রাম্প তথা মার্কিন শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে, পাকিস্তান-তালিবান যোগসূত্র তুলে ধরে ভারতের উদ্বেগ জানানো হবে। এর পরে আমেরিকার কাবুল-নীতি কোন পথে যাবে তা অনুধাবনের চেষ্টা করবে ভারত। আফগানিস্তান থেকে থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সময়সীমা এবং পরিকল্পনা বিষয়েও বিস্তারিত জানতে চাইবে নয়াদিল্লি।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের বক্তব্য, গত দু’দশকে আফগানিস্তানে যে বিনিয়োগ এবং পরিকাঠামো করেছে ভারত তার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠল এ বার। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে পার্লামেন্ট ভবনটিই শুধু নয়, সালমা বাঁধ পুনর্গঠন, বিভিন্ন স্কুল মেরামত করা, কন্দহর ক্রিকেট স্টেডিয়াম, হাসপাতাল তৈরির মত ৩৬টি বড় প্রকল্প একক ভাবেই করেছে ভারত। নতুন পরিস্থিতিতে এগুলি আর নিরাপদ নয় বলেই মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি কাবুলে ভারতের দূতাবাস এবং কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে।
ভারতীয় নীতি নির্ধারকরা মনে করছে, মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পরে সে দেশে পাকিস্তানের প্রভাবই শুধু বাড়বে না, ওই ফাঁকা পরিসরটিকে কাজে লাগিয়ে লস্কর-ই-তৈয়বা বা জইশ-ই-মহম্মদ-এর মত চরমপন্থী সংগঠনগুলোর প্রভাবও বৃদ্ধি পাবে। ভারত বিরোধিতায় তাদের আরও বেশি করে কাজে লাগানোর সুযোগ থাকবে পাকিস্তানের হাতে। আফগানিস্তানে শান্তিরক্ষায় ট্রাম্প ভারতীয় সেনা চাইতে পারেন কি না, তা নিয়ে শনিবার ট্রাম্প প্রশাসনের এক কর্মকর্তাকে প্রশ্ন করেছিলেন সাংবাদিকেরা। জবাবে তিনি জানিয়েছেন, শান্তি প্রক্রিয়াকে সফল করতে ভারতের সহযোগিতা চাওয়া হবে।
মার্কিন-তালিবান শান্তিচুক্তির কথা ঘোষণা হওয়ায় অবশ্য খুশি সাধারণ আফগানরা। যেমন কাবুলের ট্যাক্সিচালক হাবিব উল্লাহ। শনিবার তিনি বলেন, ‘এই প্রথম সকাল, যখন বোমা বা আত্মঘাতী হামলায় নিহত হওয়ার ভয় ছাড়া আমি বাড়ি থেকে বের হচ্ছি।’ কন্দহরে শুক্রবার মধ্যরাতেই শুরু হয়ে যায় আনন্দ উৎসব। সেখানে রাস্তায় নাচতে দেখা যায় সাধারণ মানুষকে। জলালাবাদে বেরোয় সাইকেল মিছিল। তবে শুক্রবার মধ্যরাতেই বালখ প্রদেশে তালিবান হামলায় নিহত হয়েছেন দুই আফগান সেনা। হামলার খবর মিলেছে মধ্য উরুজগান প্রদেশ থেকেও। শনিবারই প্রকাশিত জাতিসংঘের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত ১০ বছরে আফগানিস্তানে এক লাখেরও বেশি মানুষ নিহত ও আহত হয়েছেন। সূত্র: সিএনএন, টিওআই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।