Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রিয় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে জয়ের দীপ্ত শপথ

মো. জাহিদুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০০ এএম

পরিসংখ্যানের পাতা ওল্টালে বুঝতে কষ্ট হবে না টেস্টে বাংলাদেশের প্রিয় প্রতিপক্ষ কে? অথচ ক’দিন আগেই জিম্বাবুয়েকে প্রিয় প্রতিপক্ষ বলায় অনেকটা ক্ষেপে গিয়েছিলেন দলের স্পিনার তাইজুল ইসলাম। অথচ তাইজুলের আচরনের সঙ্গে খাপ খায় না অতীত ইতিহাস। এখন পর্যন্ত টেস্টে পাঁচটি দলের বিপক্ষে জয়হীন টাইগাররা। ভারত, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়াও নবাগত আফগানিস্তানও আছে সেই একই কাতারে। উল্টোদিকে যে দলগুলোর বিপক্ষে জয় সবচেয়ে বেশি, তাদের মধ্যে সবার আগে আসে জিম্বাবুয়ের নাম। মুমিনুলদের ছয় জয়ের বিপরীতে হার সাত ম্যাচে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চারটি জয়, হারের সংখ্যা দশ। এছাড়া শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একটি করে জয় আছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের।

সাস্প্রতিক সময় বিবেচনা করলে বাংলাদেশের অবস্থান কেমন। চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর প্রয়োজন নেই। তবে একটি তথ্য না দিলেই নয়। পাঠকদের মনে আছে কী, সবশেষ কবে টেস্টে জিতেছিল বাংলাদেশ? চলতি বছরে খেলেছে মাত্র একটি ম্যাচ, পাকিস্তানের বিপক্ষে। ফল ইনিংস পরাজয়। চলুন ২০১৯ সালে ফিরে যাই। পাঁচ ম্যাচের চারটিতে ইনিংস পরাজয়। একটি ম্যাচে হার ২২৪ রানে। তাও রশিদ খানদের বিপক্ষে। জয় দেখলেন নাতো। চলুন আর একটু পেছনে যাই। হ্যাঁ, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয়। তার আগে মিরপুরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও ২১৮ রানের একটি জয় আছে। প্রিয় এ প্রতিপক্ষের বিপক্ষে অবশ্য তার আগের ম্যাচেই ছিল হার। সিলেটে ১৫১ রানের ব্যবধানে।

মোটাদাগে এ সবই বাংলাদেশের ব্যর্থতার চিত্র দেখিয়ে দিচ্ছে। চলুন তাহলে জিম্বাবুয়ের সাম্প্রতিক সময়টাও দেখে নেই। এ বছর ঘরের মাঠে দু’টি টেস্ট কেলেছে তারা। শেষ ম্যাচটি ড্র করেছে তারা। অথচ জয়ের সম্ভাবনাও তৈরি করেছিল আফ্রিকান দলটি। তার আগের ম্যাচ ১০ উইকেটের পরাজয়। ফল দেখলে অন্তত লড়াইটা বুঝতে পারবেন না। লঙ্কানদের বিপক্ষে বুক চিতিয়ে লড়েছে নির্বাসন থেকে ওঠা দলটি। তার আগে দলটি টেস্ট খেলেনি এক বছরেরও বেশি। আক্ষেপটা ঝড়ল জিম্বাবুয়ে দলপতি ক্রেইগ আরভিনের কন্ঠে, ‘আমরা সারাবছর খুব একটা টেস্ট খেলার সুযোগ পাই না। যখনই সুযোগ আসে তখনই আমরা সেটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করি। বাংলাদেশে আর আগেও আমরা খেলে গিয়েছি। ফলে আমাদের জানা আছে এখানকার আবহটা কেমন।’

অন্যদিকে বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক জিম্বাবুয়েকে দেখছেন ভালো দল হিসেবে, ‘জিম্বাবুয়ে আমাদের দেশে আসছে মানে খাটো করে দেখার কিছু নেই। কোন দলই কিন্তু খাটো না। সব দলই ভালো। আমি জিম্বাবুয়েকে সবসময় জিম্বাবুয়েকে ভালো দল হিসেবেই কাউন্ট করি।’ হারের বৃত্ত থেকে বের হতে পারলে অনেক কিছুই পরিবর্তন হবে। একটি জয় খেলোয়াড়দের মধ্যে ব্যাপক ইতবাচক সাড়া ফেলবে বলেও মনে করেন টাইগার শিবিরের দলনেতা, ‘আমার কাছে মনে হয় যে আমরা যদি মায়চটা জিততে পারি পুরো জিনিসটাই চেঞ্জ হয়ে যাবে। পুরো জিনিসটা বলতে আগে হারছি ওইটা না, আমরা যে ব্যাড প্যাচের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি সেটা ওভারকাম করা হবে। আমার কাছে মনে হয় খারাপ সময়টা অনেকটাই চেঞ্জ হয়ে যাবে, যেভাবে আমরা অনুশীলন করছি এবং ট্রেনিং সেশন চলতেছে এটা পুরোপুরি আরও সুন্দর হয়ে যাবে।’

বিপরীতে শক্তিশালি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলে আসায় অনেকটা আত্মবিশ্বাসী জিম্বাবুয়ের ৩৫ বছর বয়সী অধিনায়ক, ‘আমরা শ্রীলঙ্কায় দুটি ভাল ম্যাচ খেলেছি। সেই ম্যাচের অভিজ্ঞতার আলোকে এই ম্যাচে আমরা গতি আনতে চাইছি।’

দু’দলের অধিনায়কের কন্ঠেই ভেসে আসলো জয় পাওয়ার দীপ্ত শপথ। তবে মূল কাজটা করে দেখাতে হবে খেলার মাঠেই। যা বাংলাদেশের জন্য কঠিন ও চ্যালেঞ্জিংও বটে। বাংলাদেশ যেখানে নিজেদের সবশেষ জয় পেয়েছিল সাত ম্যাচ আগে। জিম্বাবুয়ে তা জিতেছে চার ম্যাচ আগে। তাও বাংলাদেশের বিপক্ষেই। ভেন্যু ছিল সিলেট। এবারও দলটির লক্ষ্য ঠিক সে রকমই। আফ্রিকানদের লক্ষ্যচ্যুত করে ১৫ মাসের জয়খরা কাটাতে পারবেতো মুমিনুলরা?

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জিম্বাবুয়ে


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ