Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অন্দর মহলের নিভৃতচারী ভাষাসৈনিক ক’জন

চেমন আরা | প্রকাশের সময় : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:৩২ এএম

ফেব্রুয়ারি মাস এখন। চারিদিকে তুলকালাম কান্ডকারখানা চলছে একুশকে কেন্দ্র করে। চিটাগাং গেছিলাম দিন পাচেকের জন্য। সেখানেও সাহিত্য সেবী, সংস্কৃতি কর্মী, কবি ও শিল্পীদের মধ্যে দারুণ উৎসাহউদ্দীপনা লক্ষ্য করলাম। প্রতিদিন শহরের প্রধান প্রধান জায়গায় একুশকে বরণ করে নানান ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে। সাহিত্য সেমিনার হচ্ছে। কবিতা, কবিয়াল, মুর্শিদী, জারি গানের আসর বসছে। দেশীয় শিল্পের প্রদর্শনী চলছে। বিদগ্ধ গুরুজনদের স্মৃতিকে স্মরণ করে নিবেদিত হচ্ছে নানান অনুষ্ঠান মালার বিষয়সূচী। সাগরের জোয়ারের পানির মতো বাংলা ভাষার শব্দ সম্ভারে নেমেছে লাবণ্যের ঢল। ঢাকাতেও বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় পাড়াতেও একুশ যেন নতুন সাজে, নতুন বেশে মনের মাঝে দোলা জাগাচ্ছে। বাংলা একাডেমীতে বসেছে লেখক, শিল্পী, কবি ও বুদ্ধিজীবীদের মিলন মেলা। বইয়ের স্টলে স্টলে শোভা পাচ্ছে নজরকাড়া । প্রচ্ছদপটে শোভিত রকমারী বই-পুস্তকের সমাহার। প্রতিদিন বসছে স্মরণীয় ও বরণীয় ব্যক্তিত্বদের সাহিত্য কর্মের উপর আলোচনা সভা। শ্রোতারা কিছু ভাল কথা শুনতে পারছেন। এক কথায় একুশকে নিয়ে বাংলা ভাষী জনগোষ্ঠী প্রাণের-মনের আগল খুলে দিয়ে প্রাণের আনন্দ প্রবাহে ভাসছে। একুশ জাতির জীবনে একটি অবস্মিরণীয় দিন। রক্ত ঝরা এই দিনে জাতির আত্মউপলব্ধির উন্মেষ ঘটেছিল বাংলার উর্বর মাটিতে সোনালী ফসল বোনার মতো বাঙ্গালীর হৃদয় মাটিতে সৃজনশীল সাহিত্য কর্মের নবনব উৎসারণ- এই একুশেরই দান। এই একুশ আমাদের নিয়ে গেছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদায় । একুশ আমার গর্ব, আমার অহংকার। কিন্তু আমি ব্যথা অনুভব করি যখন দেখি একুশের গোড়ার ইতিহাস বিকৃত হচ্ছে। মিথ্যার বেসাতি সাজিয়ে একদল বুদ্ধিজীবী নবীন প্রজন্মদের বিভ্রান্ত করতে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন। দেশের সচেতন নাগরিক হিসেবে দায়িত্ব বোধের তাগিদে স্কুলজীবন থেকে ভাষা আন্দোলনে সামান্য শরীকানার অহংকারে আমি সামান্য কিছু কথা পাঠক গোষ্ঠীকে সম্পূর্ণ নতুন আলোকে উপহার দিতে চাই। আমরা সাবই জানি পাকিন্তান সৃষ্টির পরপরই মাত্র পনে দিনের মাথায় পয়লা সেপ্টেম্বর তমান্দুন মজলিস নামে একটি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান অধ্যাপক আবুল কাসেমের নেতৃত্বে ১৯নং আজিমপুর গঠিত হয়েছিল এবং এই সংগঠন থেকেই রাষ্ট্রভাষা।
বাংলা দেশের স্বপক্ষে প্রথম দাবী উতলে ওঠেছিল এই আন্দোলনে। দুর্জন, দুর্মূখরা যত কথাই বলুক না কেন- অধ্যাপক কাসেম যে এই আন্দোলনের বুনিয়াদ নির্মাণ করেছিলেন তা নিতান্ত অর্বাচীন ব্যক্তি ছাড়া কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। ভাষার আন্দোলন ছাড়াও এই প্রতিষ্ঠানের আরও লক্ষ ছিল নব গঠিত মুসলিম রাষ্ট্রের বাঙালী মুসলমানদের তাহজিব তমদ্দুন, ধর্ম, সৃষ্টি ও সভ্যতাকে সুসংহত রেখে পাকিস্তানকে কিভাবে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেয়া যায়। এই লক্ষ্য হাসিলের পথে তখনকার অনেক শিক্ষিত, মেধাবী, সমাজ-মনষ্ক তরুণরা এগিয়ে আসেন। যার ফলে ১৯নং আজিমপুর, অধ্যাপক কাসেমের বাস ভবন হয়ে উঠে বুদ্ধি, মেধা, প্রজ্ঞার, সমন্বয়ে দেদীপ্যমান তারুণ্যের উদ্ভাসিত একঝাক তরুণের আর্শিবাদ স্বপ্নভূমি। এই স্বপ্নভূমিতে যারা কাসেম ভাইকে সার্বক্ষণিক সংগ দিতেন, পরামর্শ দিতেন, চিন্তা-চেতনার খোরাক যোগাতেন তাদের প্রায় সবাই সুধীজনের কাছে পরিচিত। তাদের কথাও আমি এখানে অবতারণা করবো না। কারণ, কালের ইতিহাসে এই গুণীজনদের নামও লেখা হয়ে গেছে ভাষা সৈনিক হিসেবে। এসব বহুল পরিচিত ভাষা সৈনিকদের কথা বাদ দিয়ে আমি যেতে চাই ১৯নং আজিমপুরের অন্দর মহলে যাদেরও এই ভাষা আন্দোলনের ভিত্তিকে মজবুত করার জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছিল। অনেক ভূমিকা ছিল। অথচ তারা বিশ্রুত ইতিহাস। এই বিশ্রুত ইতিহাস থেকে একুশের বিপুল সমারোহের মতো হাসি হাসি মুখে আমার চোখে ভেসে উঠে একজন মানুষের ছবি- তিনি হচ্ছেন কাসেম ভাইয়ের শ্বশুর জনাব আজিজুর রহমান তালুকদার। তার স্নেহ, প্রশ্রয় ও অর্থাৎ আনুকুল্য না পেলে দেশের কাসেম ভাইয়ের কল্যাণকামী চিন্তা-চেতনার সুষ্ঠু বিকাশ সম্ভব ছিল না। তার পরে মনে করতে হয় কাসেম ভাইয়ের স্ত্রী রাহেলা আপার তিন ভাইয়ের কথা-এরা কোন সভা-সমিতিতে সক্রিয় অংশ না নিয়েও ভাষা আন্দোলনকে জোরদার করার লক্ষ্যে নীরবে কাজ করে গেছেন। এদের মধ্যে একজন ডঃ সামসুল আলম তালুকদার পিএইচডি, এমবিবিএস। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগের সিনিয়র অধ্যাপক ও প্রসিদ্ধ হোমিও প্যাথিক ডাক্তার। তার কথায় তিনি তখন ১৯নং আজিমপুর বড়বোন শ্রদ্ধেয়া রাহেলা আপার বাড়ীতে থাকতেন। ঘরে জায়গা ছিল না বলে একটি বাথরুমকে একটু স¤প্রসারণ করে তার থাকার জায়গা করা হয়েছিল। তার কাজ ছিল রাতের অন্ধকারে নজরুল নামের এক ছেলেকে সংগে নিয়ে পুরনো ঢাকার অলিতে গলিতে পোস্টার লাগানো। পোস্টারের ভাষা ছিল নানারূপ- একটা হচ্ছে সকল ভাষা আল্লাহর দান, আল্লাহ তুমি মেহেরবান। আর কোনটিতে থাকতো শুধু রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবীতে সাপ্তাহিক সৈনিক প্রকাশিত হলে কর্মচারী স্বল্পতার কারণে মাঝে মাঝে কাগজ ভাঁজ করার কাজেও হাত দিতেন। তার আরেক ভাই নুরুর রহমান জামালী। তার মনটা ছিল আকাশের মতো উদার। কাসেম ভাইকে ভালবাসতেন আপন ভাইয়ের মতো। ঐ বাড়ীতেই থাকতেন নব পরিনীতা স্ত্রী রোকেয়া ভাবীকে নিয়ে। রোকেয়া ভাবীর কাজ ছিল রান্নাবান্নায় সারা দিন রাহেলা আপাকে সাহায্য করা। একটা আদর্শিক আন্দোলনের কর্মক্ষেত্র বিশাল বলে সারাদিন লোকজনের আনাগোনায় সরগরম থাকতে বাড়ীর পরিবেশ। প্রায় সারাদিনই রান্না-বান্না চলতো। রোকেয়া ভাবীর মুখের কথা- ঘুমাতে হতো প্রায় রাত একটার ওপর। তারপরও নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারতাম না। এত মানুষের আনাগোনা যেখানে ওখানে কি ঘুম আসে? অনেক সময় কাসেম ভাই অনেক বাজার এনে রান্না ঘরে ঢেলে দিয়ে বলতো রাহেলা চুলায় আগুন দাও। এক্ষুণি যেতে হবে অমুকের বাসায় চাদার জন্য। কোন প্রতিবাদ করা যেতো না। রান্না-বান্নার কাজ সামলাতে হতো রোকেয়া ভাবীকে একা একা। জামালী ভাই মাঝে মাঝে রান্না ঘরের দোরগোড়ায় এসে স্মিত হাসি দিয়ে চলে যেতেন। কাসেম ভাইয়ের বোন রহিমা নূরী ভাইয়ের প্রথমা স্ত্রী তাকেও রান্না ঘরের কাজে ও কাগজ ভাঁজ করার কাজে সাহায্য করতো। এই বাড়ীর জীবন ছিল এক ধরনের তাঁবু জীবন। অনেকে আসা-যাওয়া করতেন এই বাড়ীতে। কাসেম ভাইয়ের চিন্তা চেতনার সাথী হিসেবে স্থায়ীভাবে এই বাড়ীতে থাকতেন চারজন। গফুর ভাই, নুরী ভাই, হাসান ইকবাল ভাই ও কথাশিল্প শাহেদ আলী। রােকেয়া ভাবীর মুখের কথায় জানা যায় মাঝে মাঝে ভাত কম হলে এদের মধ্যে কেউ কেউ রাগ করে ভাত খেতেন না। তার মধ্যে শাহেদ আলী সাহেবেই প্রবীণ। বড়বোনের আদর দিয়ে তার মান ভাংগাতো রাহেলা আপা। সারদিন মানুষের আসা-যাওয়া, সভা-মিটিং-এর মধ্যে তাকে দিন কাটাতে হতো। কোন পারিবারিক জীবন ছিল না তার। স্বামীর আদর্শের কাছে নিবেদিত এই মহিলা নিজেও মোমবাতির মতো জ্বলেছেন আর পুড়েছেন। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আদর্শবাদী তরুণদের মধ্যে তিনি আগরবাতির মতো সুগন্ধ ছড়াতেন। যার জন্য তারা ব্যক্তিগত আরাম-আয়েসের তোয়াক্কা না করে দরকার হলে ছাপাবিহীন পত্রিকা বিছিয়ে রাত যাপন করেও এই বাড়ীতে তৃপ্ত থাকতেন। মাঝে মাঝে এইসব তরুণদের মধ্যে কেউ কেউ রোমান্টিক কথাবার্তা বলে তাঁবু জীবনকে আনন্দসিক্ত করে রাখতেন। নববধু রোকেয়া ভাবী পর্দা করতেন। সহজে কারো সামনে আসতেন না। অথচ জামালী ভাইয়ের নির্দেশ ছিল শাহেদ আলী, আব্দুল গফুর, নূরী আপার ভাইয়ের মতো থাকতে। ওদের সামেন যেতে আমার কোন আপত্তি নাই। তারপরও তিনি লজ্জার কারণে তাদের সামনে যেতেন না। তারা কিন্তু তাকে দেখলে মাঝে মাঝে রসিকতা করতেন। বলতেন মনে হয় চিনি চিনি উহারে। এই সব স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এখনও তিনি উল্লসিত হয়ে উঠেন। আর রাহেলা আপার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে বলেন- রাহেলা বু যে কাসেম সাহেবকে কি ভাল বাসতেন আর ভাষা আন্দোলনে কেমন কাজ করেছেন তার একটি প্রমাণ দিলেই আপনি বুঝতে পারবেন। তিনি বলেন বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষিতে গোটা দেশ উত্তপ্ত । চারিদিক পুলিশের ধর-পাকড় চলছে। এমন এক পর্যায়ে গভীর রাতে পুলিশ এসে হাজির- ভাষা আন্দোলনের মুখপাত্র সৈনিকের সম্পাদক আবদুল গফুর ও ভাষা আন্দোলনের স্থপতি আবুল কাসেমকে ধরার জন্য ১৯নং আজিমপুর বাসায়। এই সময় রাহেলা বু অসীম সাহস ও বিচক্ষণতার সংগে পুলিশের মোকবেলা করেন। পিছনের দরজা দিয়ে কাসেম ভাই ও গফুর ভাইকে বের করে দিয়ে তিনি বাড়ীর প্রবেশ মুখে দরজা ধরে দাঁড়িয়ে থেকে এত রাতে একটি পারিবারিক বাসস্থানে কেন এসেছে এই প্রসঙ্গ তুলে পুলিশের সঙ্গে অনেকক্ষণ বাদানুবাদ করে দরজা ছেড়ে দেন। পুলিশ ঘরে ঢুকে ওদের না পেয়ে চলে যায়। কাসেম ভাইয়ের অনেক সমস্যার মোকাবেলা রাহেলা - বু ধৈর্য ও সাহসের সঙ্গে অনেক বার করতে দেখেছি। তারপরও তার মন জয় করতে পারিনি। অনেক দুঃখের বোঝা নিয়ে তাকে পৃথিবী থেকে চলে যেতে হয়েছে। গফুর ভাই একুশের উপর কিছু লিখতে বলার পর থেকে ভাবছিলাম কি লিখবো। নানাজনে নানানভাবে সত্য-মিথ্যা দিয়ে একুশকে উপস্থাপন করছে। ভাষা আন্দোলনের শরীকদার হতে চাচ্ছে। আমরা যারা সেই সময় কাজ করেছি- যাদের প্রেরণায় কাজ করতে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলাম সে সব কথা এখন কেউ কেউ স্বার্থের কারণে বলতেও চায় না। বাকবাকুম দলের অতি মাত্রার কলরবে সেকালের সত্য কথাগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। তাই ভাবলাম কাসেম ভাইয়ের জমজমাট বৈঠকখানার নামী-দামী ভাষা সৈনিকদের অবদানের কথা না লিখে অন্দর মহলে ঢুকে পড়ি। রাহেলা আপা, রোকেয়া ভাবী, রহিমা, সামসুল আলম ভাই, জামালী ভাইদের কথা মানুষ জানুক। ভাষার ক্ষেত্রে তাদের অবদানকে স্বীকার করুক।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভাষাসৈনিক


আরও
আরও পড়ুন
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->