মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতের সঙ্গীত পরিচালক এ আর রহমানের কন্যা খাতিজা রহমান এবং বাংলাদেশের বিতর্কিত নারীবাদী লেখিকা তসলিমা নাসরিনের মধ্যে সম্প্রতি উত্তপ্ত বাকযুদ্ধ চলছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। খাতিজা রহমানের বোরকা পরা নিয়ে গত সপ্তাহে সর্বশেষ দফা বাকযুদ্ধের সূচনা করেছেন তসলিমা নাসরিন। এবার এই আক্রমণের মুখে খাতিজা আর নিশ্চুপ না থেকে শক্ত ভাষায় আক্রমণের জবাব দিলেন তিনি নিজেই।
খাতিজার বোরকা এবং নেকাবে আবৃত মুখের ছবি টুইট করে তসলিমা লিখেছিলেন, ‘I absolutely love A R Rahman's music. But whenever i see his dear daughter, i feel suffocated. It is really depressing to learn that even educated women in a cultural family can get brainwashed very easily!’ অর্থাৎ এ আর রহমানের সঙ্গীত আমি খুবই পছন্দ করি। কিন্তু যখনই আমি তার কন্যাকে দেখি, আমার দমবন্ধ হয়ে আসে। একটি সংস্কৃতিবান পরিবারের শিক্ষিত নারীও যে এরকম মগজ ধোলাইর শিকার হতে পারে, সেটি খুবই পীড়াদায়ক।
তসলিমার এমন টুইট সাংঘাতিকভাবে ক্ষুব্ধ করেছে খাতিজা রহমানকে। তিনি এর উত্তরে ইনস্টাগ্রামে একের পর পোস্টে শক্ত ভাষায় তসলিমার আক্রমণের পাল্টা জবাব দিয়েছেন। একটি পোস্টে তিনি মন্তব্য করেন, তসলিমার যদি এতই দমবন্ধ লাগে, তার উচিৎ বাইরে গিয়ে তাজা বাতাসে শ্বাস নেয়া।
বোরকা নিয়ে বিতর্ক:
খাতিজা রহমানের বোরকা পড়া নিয়ে ভারতে এটাই প্রথম বিতর্ক নয়। গত বছরও সোশ্যাল মিডিয়ায় এ নিয়ে বিতর্কের ঝড় ওঠেছিল।
সেবার এই বিতর্কে খাতিজা রহমানকে যখন তীব্রভাবে আক্রমণ করা হচ্ছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়, তখন তার সমর্থনে এগিয়ে এসেছিলেন বাবা এ আর রহমান। কন্যা খাতিজার বোরকা পড়াকে সমর্থন করে তিনি তখন একটি ছবি টুইট করে লিখেছিলেন, 'পোশাক বেছে নেয়ার স্বাধীনতা' সবার আছে।
তার টুইট করা সেই ছবিটিতে ছিলেন এ আর রহমানের স্ত্রী, দুই মেয়ে এবং ভারতের বিশিষ্ট শিল্পপতি মুকেশ আম্বানির স্ত্রী নীতা আম্বানি। ছবিতে সবার মুখ দেখা গেলেও খাতিজার মুখ ছিল পুরো বোরকা এবং নেকাবে ঢাকা। গত বছর খাতিজা নিশ্চুপ থাকলেও এবার তিনি তার নীরবতা ভেঙ্গে তসলিমা নাসরিনের ব্যক্তিগত আক্রমণের জবাব দেন।
'নীরবতাকে অজ্ঞতা বলে ভেবো না'
ইনস্টাগ্রামে খাতিজা রহমান আগুনের শিখার একটি ছবি পোস্ট করেন, তার নীচে লেখেন কারসন কোলহফ বলে একজনের উদ্ধৃতি: "আমার নীরবতাকে অজ্ঞতা বলে ভুল করো না, আমার নিস্তব্ধতাকে ধরে নিওে না সম্মতি কিংবা আমার উদারতাকে দুর্বলতা বলে।" এরপরে তিনি লিখেছেন, "যাদের দম বন্ধ হয়ে আসছে বলে মনে হচ্ছে, তারা বাইরে গিয়ে তাজা বাতাসে শ্বাস নিন।"
এরপর খাতিজা আরেকটি পোস্ট দেন তসলিমা নাসরিনের টুইটের স্ক্রীনশটসহ। এবার তিনি লিখেন, এক বছর পার হয়নি, এর মধ্যে আবার এই বিষয় নিয়ে কথা চলছে। দেশে এখন কত কী ঘটছে, অথচ লোকের সব চিন্তা যেন এক টুকরো কাপড় নিয়ে যেটি একজন নারী পরতে চায়। আমি আসলেই চমকে যাচ্ছি।
তিনি আরও লিখেছেন, যতবার এই বিষয়টি নিয়ে কথা হয়, আমার মনের ভেতর আগুন জ্বলতে থাকে এবং আমার অনেক কিছু বলতে ইচ্ছে করে। গত এক বছরে আমি অন্য এক আমাকে আবিস্কার করেছি, যাকে আমি আগে কখনো দেখিনি। আমি দুর্বল হবো না কিংবা যে জীবন আমি বেছে নিয়েছি সেটি নিয়ে আমার কোন অনুতাপ নেই। আমি যা করছি তা নিয়ে আমি সুখী এবং গর্বিত। আমি যা, সেভাবেই যারা আমাকে মেনে নিয়েছেন তাদের ধন্যবাদ।
আরেক পোস্টে খাতিজা সরাসরি তসলিমা নাসরিনকে সম্বোধন করে লিখেছেন, "প্রিয় তসলিমা নাসরিন, আমার পোশাক দেখে যে তোমার দমবন্ধ হয়ে আসে, সেজন্যে আমি দুঃখিত। আমার কিন্তু দমবন্ধ হয় না বরং আমি যা বিশ্বাস করি, তার জন্য আমি গর্বিত এবং নিজেকে আমার আরও বলীয়ান মনে হয়। আমার পরামর্শ হচ্ছে, সত্যিকারের 'নারীবাদ' কি জিনিসে তা দয়া করে গুগলে সার্চ করে দেখো। নারীবাদ মানে অন্য নারীকে আক্রমণ করা নয়, তাদের বাবাকে বিতর্কে টেনে আনা নয়।"
তসলিমা নাসরিন যে অনুমতি ছাড়া তার ছবি পোস্ট করেছেন সেজন্যেও খোঁচা দিয়ে তিনি লিখেছেন, "আমার তো মনে পড়ছে না আমার ছবি তোমার কাছে পাঠিয়েছিলাম বলে।"
তসলিমা নাসরিনের প্রত্যুত্তর
খাতিজার এসব কথার পর তসলিমা নাসরিনও চুপ করে নেই, তিনিও একের পর এক টুইট করে পাল্টা আক্রমণ অব্যাহত রেখেছেন। তসলিমার নারীবাদ নিয়ে খাতিজার কটাক্ষের জবাবে তিনি লিখেন, "প্রিয় খাতিজা, যদি গুগল করো, তাহলে জানতে পারবে গত চার দশক ধরে মেয়েদের সমান অধিকারের জন্য আমার লড়াই।”
আরেকটি টুইটে তসলিমা লিখেছেন, যদি ইসলাম অনুসরণ করতে চাও, পুরোপুরি করো। ইসলামে সঙ্গীত, গান গাওয়া, নাচ এগুলো নিষিদ্ধ। ইসলামে মানুষের ছবি আঁকা নিষিদ্ধ। ছবি আঁকা, ছবি তোলা বন্ধ করে দাও, একদম সহজ।
সূত্র : বিবিসি বাংলা
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।