মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
নেদারল্যান্ডসের দ্য মিয়েন্ডার মেডিক্যাল সেন্টারে অনেক রোগীর চিকিৎসা হয়। কিন্তু কয়েক বছর আগে সেখানে শারীরিক পরীক্ষার জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল এক হাজার বছর বয়সি এক বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর মূর্তি। এতদিন তার ঠিকানা ছিল নেদারল্যান্ডসেরই একটি মিউজিয়াম।
ওই বৌদ্ধ মূর্তির মধ্যে যে এক মানবদেহ আছে, তা মুখেমুখে প্রচলিত থাকলেও, বিজ্ঞানীরা এতদিন তার সত্যাসত্য জানতেন না। প্রাচীন এই রহস্যের উপর আলোকপাত করার জন্যই মিউজিয়াম থেকে ওই বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর মূর্তিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। সোনালি রঙের ওই ধাতব বৌদ্ধ মূর্তির সিটি স্ক্যান করার পরই তাজ্জব হয়ে যান উপস্থিত চিকিৎসক এবং গবেষকরা। দেখা যায়, বাইরে দেখে যা নেহাতই মূর্তি, তার ভিতরে পদ্মাসনে ধ্যানে মগ্ন এক সন্ন্যাসী! যার নাম লিউকুয়ান।
ওই সন্ন্যাসীর দেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অবশ্য কিছুই ছিল না। পরিবর্তে তার দেহের ভিতরে বৌদ্ধ ভাষায় লেখা কাপড় ভরা ছিল। কী ভাবে তার দেহ থেকে সমস্ত অঙ্গ বার করে নেয়া হল, কী ভাবে তার মমি তৈরি হল তা এখনও রহস্যই রয়েছে। প্রচুর গবেষণাও চলছে এ নিয়ে।
নিজেই নিজের দেহের মমিফিকেশন জাপানে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের মধ্যে খুবই প্রচলিত প্রথা। সমগ্র এশিয়াতেই এমন রীতির প্রচলিত ছিল বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের মধ্যে। চীনেও এ রকম দেখা গিয়েছে। জেরেমিয়া কেন নামে এক লেখকের ‘লিভিং বুদ্ধা’ নামে বইয়ে এই পদ্ধতির উল্লেখ রয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, আগ্রহী সন্ন্যাসীরা খুব কঠিন ডায়েট চার্ট অনুসরণ করেই নাকি এমন করতেন। এটা খুব ধীর গতির প্রক্রিয়া। তারা খাদ্যতালিকায় চাল, গম, সোয়াবিন জাতীয় কোনও বস্তু রাখতেন না। পরিবর্তে বাদাম, বেরি, গাছের ছাল খেতেন। এতে নাকি ক্রমে তাদের শরীরের চর্বি গলে যেত এবং শরীর আর্দ্রতা হারিয়ে ক্রমশ শুষ্ক হয়ে উঠত।
মৃত্যুর পর শরীরে ব্যাকটিরিয়ার বৃদ্ধি আটকাতে জীবিতাবস্থায় বিভিন্ন ভেষজ উদ্ভিদ খেতেন তারা। আর খেতেন বিশেষ এক ধরনের চা। যা বিষাক্ত হার্ব দিয়ে বানানো হত। এই চা পান করার ফলে তাদের শরীরও বিষাক্ত হয়ে উঠত এবং মৃত শরীরে ম্যাগট তৈরি হতে পারত না। এইভাবে দীর্ঘদিন ধরে কড়া ডায়েটের ফলে ওই সন্ন্যাসী যখন একেবারেই মৃতপ্রায়, তখন তাকে মাটির নীচে একটি কক্ষে স্থানান্তর করা হত। তিনি সেই কক্ষের ভিতরেই ধ্যানে বসতেন। আর বাঁশের তৈরি একটি ফানেলের মধ্যে দিয়ে শ্বাস নিতেন। ওই কক্ষে সন্ন্যাসীর সঙ্গে শুধু একটা ঘণ্টা থাকত। প্রতিদিন তিনি ঘণ্টা বাজিয়ে বোঝাতেন যে, তিনি বেঁচে আছেন। যে দিন তিনি ঘণ্টা আর বাজাবেন না, সে দিনই ধরে নেয়া হত তিনি মারা গিয়েছেন। তার পর বাঁশের ফানেলটা খুলে নেয়া হত।
এই ভাবেই তিনি মাটির নীচে ওই কক্ষে পড়ে থাকতেন। তিন বছর পর অন্য সন্ন্যাসীরা তাকে কক্ষ থেকে বার করে মন্দিরে নিয়ে গিয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতেন। কোনও সন্ন্যাসীর যদি মমিফিকেশন না হয়ে থাকে, তা হলে তাঁকে কবর দেয়া হত। বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের কাছে মমিফায়েড সন্ন্যাসীরা মৃত নন। তারা অমরত্ব লাভ করেছেন এবং এ ভাবেই ধ্যানে মগ্ন। তবে যারা নিজেদের মমি করার চেষ্টা করেছেন, তাদের মধ্যে খুব কমই সফল হয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
চলতি বছরের জানুয়ারিতেও পদ্মাসনে ধ্যানমগ্ন হয়ে বসে থাকা প্রায় দুশো বছরের পুরনো এক বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর মমি পাওয়া গিয়েছিল। পূর্ব এশিয়ার মঙ্গোলিয়ায় ওই মমির খোঁজ মেলে। তার সারা দেহ পশুর চামড়া দিয়ে আবৃত ছিল। তবে বৌদ্ধ মূর্তির মধ্যে সন্ন্যাসীর মমির খোঁজ এই প্রথম মিলল বলে জানাচ্ছেন ইতিহাসবিদেরা। হাঙ্গেরির ন্যাশনাল মিউজিয়ামে বহুদিন ধরেই ওই মূর্তি প্রদর্শিত হয়েছে। তারপর ইউরোপের লুক্সেমবার্গ মিউজিয়ামেও কিছুদিন রাখা ছিল মূর্তিটি। তারপর থেকে নেদারল্যান্ডসের ড্রেন্টস মিউজিয়ামই তার ঠিকানা। সূত্র: ইউএসএ টুডে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।