চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
প্রশ্ন : এক ব্যক্তি নামায-কালাম ঠিকমত করে তবে তার স্ত্রীকে পর্দায় রাখে না। এমন স্ত্রীর জন্য তার নামায-বন্দেগীর কোনো ক্ষতি হবে কি না, জানাবেন।
ডাক্তার বাদল, শিপইয়ার্ড স্কুল গেট, খুলনা।
উত্তর : একজন স্বামীর পক্ষে তার স্ত্রীকে পর্দায় রাখা কর্তব্য। কর্তব্যে অবহেলার জন্য স্বামী গোনাহগার হবে। এ জন্যে তার নামায-বন্দেগী বরবাদ হবে না। স্ত্রীর শরীয়ত বিরোধী আচরণ যদি স্বামী নিয়ন্ত্রণ না করে তাহলে এ স্বামীর কঠোর শাস্তির কথা হাদীসে পাওয়া যায়। এক হাদীসে আছে যে, এমন পুরুষ জান্নাতে প্রবেশ করবে না। তবে সর্বাত্মক চেষ্টার পর ব্যর্থ হলে সেটিও আল্লাহ দেখবেন।
প্রশ্ন : মরণোত্তর চক্ষুদান বা অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দান কি শরীয়ত সমর্থন করে?
আব্দুল্লাহ রিফাত, খুলনা।
উত্তর : শরীয়তে মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মালিক সে নিজে নয়। এর মালিক আল্লাহ তায়ালা। সে জন্য কারো জন্যই নিজের রক্ত বা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রয় করা জায়েজ নয়। রক্তদান করা যায়। বিক্রয় করা হারাম। চক্ষু বা অন্যান্য অঙ্গ দান সাধারণত জায়েজ নয়। কারণ ইসলামের দৃষ্টিতে মৃত্যুই মানুষের শেষ নয়। এরপরও তার পুনরুত্থান ও পরকালীন জীবন আছে। তাছাড়া মৃত ব্যক্তির প্রচ্ছন্ন একটি অনুভ‚তি শক্তিও থাকে। সে আশপাশের লোকজনকে বুঝতে পারে। শরীয়তবিরোধী কাজ, বেপর্দা, সীমাতিরিক্ত বিলাপ, কান্নাকাটি তাকে কষ্ট দেয়। জোরে নড়াচড়া, অধিক ঠান্ড বা অধিক গরম পানি ব্যবহারে তার কষ্ট হয়। জানাজা নিয়ে বেশি ছোটাছুটি, ঝাঁকুনি ও আঘাত সে অনুভব করে। কবর থেকে লোকজন চলে যাওয়ার সময় সে পায়ের আওয়াজ পর্যন্ত শুনতে পায়। এমন একজন মৃত ব্যক্তির সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যদি সে দান করে যায় আর মৃত্যুর পরই ছয় ঘণ্টার মধ্যে ডাক্তার এসে তার চোখ খুলে নেয়, হার্ট খুলে নেয়, লিভার খুলে নেয়। উন্নত বিশ্বে এখন শরীরের ভেতর বাইরের সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই ব্যবহারযোগ্য। এমতাবস্থায় শরীরের সব অঙ্গ খুলে নিয়ে গেলে দাফন করা হবে কাকে? এ অবস্থাটি মৃত ব্যক্তির জন্য কী পরিমাণ কষ্টের হবে? সকল আত্মীয়ের জন্য কতটুকু বেদনার হবে তা ভেবে দেখা দরকার। এ জন্যই শরীয়ত এসব দান সমর্থন করে না। একান্ত ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো মাসআলা যদি সামনে আসে তাহলে সবদিক বিবেচনা করে মুফতিগণ সুনির্দিষ্ট ফতোয়া দিতে পারেন।
-আল্লামা মুফতী উবায়দুর রহমান খান নদভী
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।