মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতের লখনৌতে চলমান ডিফেক্সপো ২০২০-তে প্রধান প্রতিপাদ্য যদিও ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’, এরপরও দেশে তৈরি অর্জুন মেইন ব্যাটল ট্যাঙ্ক (এমবিটি) কেনার ব্যাপারে অনীহা দেখিয়ে যাচ্ছে ভারতীয় সেনাবাহিনী, যদিও বিগত বছরগুলোতে এই ট্যাঙ্কের ব্যাপারে তাদের সব ধরনের চাহিদাই পূরণ করা হয়েছে।
ডিফেন্স আরঅ্যান্ডডি অর্গানাইজেশান (ডিআরডিও) দীর্ঘদিন আগে অনুমোদনকৃত ১১৮টি অর্জুন এমবিটির জন্য অপেক্ষা করছে। অন্যদিকে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় গত নভেম্বরে অর্ডিন্যানস ফ্যাক্টরি বোর্ডকে (ওএফবি) হেভি ভেহিকল ফ্যাক্টরিতে ৪৬৪টি রাশিয়ার তৈরি টি-৯০এস ট্যাঙ্ক তৈরি করতে বলেছে। প্রতিটি টি-৯০ ট্যাঙ্কের খরচ পড়বে ২৮ কোটি রুপি। ফলে সবগুলোর মূল্য দাঁড়াবে ১৩,০০০ কোটি রুপি।
সেনাবাহিনী এখনও নিজস্ব অর্জুন ট্যাঙ্ক কেনার ব্যাপারে বাধা দিচ্ছে, যদিও ২০১০ সালের মার্চে রাজস্থান মরুভূমিতে সেনাবাহিনী তুলনামূলক পরীক্ষা চালিয়েছে এবং সেখানে অর্জুন রাশিয়ান টি-৯০ এর সমান বা কখনও তার চেয়ে ভালো করেছে। পরীক্ষাকালে এক স্কোয়াড্রন (১৪টি ট্যাঙ্ক) অর্জুন ট্যাঙ্কের পাশাপাশি একই সংখ্যক টি-৯০ ট্যাঙ্ক ব্যবহার করা হয়েছিল। শীর্ষ সেনাবাহিনীর জেনারেল যারা ওই মহড়ার প্রত্যক্ষ করেন, তারা জানান যে, অর্জুন চমৎকার কার্যক্ষমতা দেখিয়েছে। বালির উপর দিয়ে চলাচল বা শক্তিশালী কামান থেকে টার্গেটে নিখুঁতভাবে আঘাত হানার ক্ষেত্রে অর্জুন ট্যাঙ্ক নিজের সম্ভাবনার পরিচয় দিয়েছে।
কিন্তু বহরে যে ১২৪টি অর্জুন ট্যাঙ্ক সংযুক্ত করেছে, এর বাইরে বারতি ট্যাঙ্ক অর্ডার দিতে অনীহা জানাচ্ছে সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর ভেতরের সূত্রগুলো বলেছে যে, বাহিনীর ভেতরে একটা বিশ্বাস রয়েছে যে, রাশিয়ান ট্যাঙ্কগুলো ভারতীয়গুলোর চেয়ে ভালো। তবে, আনুষ্ঠানিকভাবে এটা বলা হয়েছে যে, ৬২.৫ টন ওজনের অর্জুন ট্যাঙ্ক রাস্তায় এবং ব্রিজে চলাচলের জন্য অনেক ভারি এবং এটা চওড়া হওয়ার কারণে ট্রেনেও এটাকে বহন করা সম্ভব নয়।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সেনাবাহিনীকে আরও ১১৮টি অর্জুন ট্যাঙ্ক কেনার জন্য চাপ দিলে সেনাবাহিনী এগুলোকে আরও কার্যকর করার জন্য এর সক্ষমতা বাড়ানোর দাবি জানায়। ২০১০ সালে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে অর্জুন স্টিয়ারিং কমিটির যে বৈঠক হয়, সেখানে সেনাবাহিনী ট্যাঙ্কের আরও আধুনিক ভার্সান তৈরির দাবি করে, যেটাকে অর্জুন মার্ক ২ বলা হবে।
অর্জুন মার্ক ২ ট্যাঙ্কে সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ৮৩টি পরিবর্তনের কথা বলা হয়, এর মধ্যে ১৫টি প্রধান এবং ৬৮টি অপ্রধান। অবিশ্বাস্য দিক হলো সেনাবাহিনী যেখানে ট্যাঙ্কটিকে খুবই ভারি বলেছে আগে, সেখানে এই নতুন পরিবর্তনগুলো করার পর এটার ওজন আরও ৬ টন বাড়বে।
এর মধ্যে রয়েছে ট্যাঙ্কের উপর মাইন প্লাউ স্থাপন (১.৬ টন অতিরিক্ত), বিস্ফোরক রিয়্যাকটিভ আর্মার (১.৫ টন), সাসপেনশান ইমপ্রুভমেন্ট (এক টন), এবং অন্যান্য বিষয়ে আরও ২ টন। সেনাবাহিনী আগে ৬২.৫ টনে অর্জুন ট্যাঙ্ককে ভারি বলেছিল। এখন তাদের দাবি মেটাতে গিয়ে ট্যাঙ্কের ওজন দাঁড়িয়েছে ৬৮.৫ টনে।
২০১১ সালের আগস্টে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা দিয়েছিল যে, তারা ১২৪টি এমবিটি অর্জুন মার্ক ২ তৈরির অনুমোদন দিয়েছে। তারা জানিয়েছিল যে, প্রতিটি উন্নততর অর্জুনের দাম পড়বে ৩৭ কোটি রুপি এবং এর প্রথম ব্যাচটি প্রস্তুত হবে ২০১৫ সালের মধ্যে।
২০১৫ সালের মধ্যে বেশ কিছু পরীক্ষার মাধ্যমে সেনাবাহিনীর চাহিদার বিষয়গুলো সংযুক্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। ডিআরডিও এরপর অর্ডার দেয়ার আবেদন জানায় এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দেয়।
তবে, এর পর সেনাবাহিনী তিন বছর সময় ক্ষেপণ করে। ২০১৮ সালের মার্চে তারা সম্মত হয় যে মিসাইল নিক্ষেপের সক্ষমতা ছাড়াই এগুলো তারা বহরে যুক্ত করবে। এই ট্যাঙ্কগুলোকে বলা হয় অর্জুন মার্ক ১এ। কিন্তু এক বছর পরও সেনাবাহিনী এখনও এই ট্যাঙ্কের অর্ডার দেয়নি।
অর্ডার না পাওয়ার কারণে হতাশা আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ডিআরডিও চেয়ারম্যান সতীশ রেড্ডি বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, ‘না, আমরা হতাশ হতে পারি না। আমরা ইতিবাচক। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মার্ক ১ এর ট্রায়াল শেষ হয়েছে এবং আমরা এখন এর গোলাবারুদ তৈরি করছি। আমি নিশ্চিত সেনাবাহিনী শিগগিরই অর্জুন মার্ক ১এ কিনবে।’ সূত্র: এসএএম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।