Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এবার বিজেপির বিরুদ্ধে দিল্লিতে ছাত্রীদের যৌন হেনস্থার অভিযোগ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৫:১৬ পিএম

এ বার দিল্লিতে বহিরাগতদের হাতে যৌন হেনস্থার শিকার হলো গার্গী কলেজের ছাত্রীরা। অভিযোগ, মেয়েদের জন্য সংরক্ষিত ওই কলেজের ফেস্টে পুরুষ বহিরাগতরা ঢুকে যথেচ্ছ হেনস্থা চালায়। ছাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, গত কয়েক দিন ধরে কলেজের গেটের বাইরে সিএএ-র পক্ষে সভা করছিল ভারতের শাসক দল বিজেপি। ট্রাকে করে ওই সভা থেকেই আগত বহিরাগতরা সে দিন কলেজে ঢুকে পড়ে। সেখানে পুলিশ থাকলেও তারা ছিল দর্শকের ভূমিকায়।

ছাত্রীদের দাবি, ফেস্টের সন্ধ্যায় প্রচুর বহিরাগত জোর করে কলেজে ঢুকে পড়ে। কলেজের বাইরে মোতায়েন ছিল পুলিশ ও দাঙ্গা-বিরোধী বিশেষ বাহিনী। কিন্তু তারা ছিল নীরব দর্শক। বহিরাগতরা ভিতরে ছাত্রীদের তাড়া করে। তাদের যৌন হেনস্থা করে। ছাত্রীদের দাবি, অন্তত ৪০ জন ভিতরে ঢুকে পড়েছিল। তার মধ্যে অর্ধেক মদ্যপ। যে সব ছাত্রী তাদের হাতের সামনে চলে আসেন, তারাই যৌন হেনস্থার মুখে পড়েন। দেশের রাজধানী শহরে একটি নামকরা মহিলা কলেজে পুলিশ থাকাকালীন এই ধরনের ঘটনা অভাবনীয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রীর অভিজ্ঞতা হল, বহিরাগতদের তাণ্ডব শুরু হওয়ার পরে তিনি খেয়াল করেন কলেজের প্রধান গেট খালি। প্রধান গেট খালি দেখে তিনি বেরতে যাচ্ছিলেন। তাকে বেরতে দেখেই এক মদ্যপ বহিরাগত তেড়ে আসে। তার সামনে দাঁড়িয়েই হস্তমৈথুন করতে থাকে। ছাত্রী জানিয়েছেন, কোনও মতে সেখান থেকে তিনি পালান। তখনই তার দেখা হয় এক প্রথম বর্ষের ছাত্রীর সঙ্গে। সেই ছাত্রী জানান, চার-পাঁচজন লোক তাকে তাড়া করেছে। দু’জনে লুকিয়ে বাঁচেন।

কিন্তু সকলে লুকিয়ে বাঁচতে পারেননি। আর এক ছাত্রীর অভিজ্ঞতায় উঠে এসেছে আরও ভয়াবহ সব কাহিনি। তিনি জানিয়েছেন, বহু ছাত্রীকে তাড়া করে কলেজের শৌচাগারে ঢুকিয়ে আটকে দেয় বহিরাগতরা। এ বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষকে হস্তক্ষেপ করতে বলা হলে তারা জানিয়ে দেন, কিছু করা সম্ভব নয়। পুলিশের সামনেই গোটা ঘটনাটি ঘটলেও তারাও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ।

সম্প্রতি দিল্লির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুলিশের ব্যবহার প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়েছে। জেএনইউতে পুলিশের সামনে বহিরাগতরা ঢুকে ছাত্রছাত্রীদের বেধড়ক মেরেছে। তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ আক্রান্তদের বিরুদ্ধেই মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ সাংবাদিক বৈঠক করে যে দাবি করেছে, পরে তথ্য জানার অধিকার আইনে সে বিষয়ে জানতে চেয়ে দেখা গিয়েছে, পুলিশের বয়ান সত্য নয়।

বস্তুত শুধু পুলিশ নয়, গণমাধ্যম এবং সমাজমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হওয়ার পরে ঘটনার প্রায় ৪ দিন বাদে কলেজ প্রশাসন নড়েচড়ে বসেছে। সোমবার গার্গী কলেজের ঘটনা লোকসভায় তোলেন কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ। তারপর মানব সম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল জানান, ‘তদন্ত চলছে। কলেজ প্রশাসনকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’ মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালও বলেছেন, দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতী মালিওয়াল এ দিন কলেজে গিয়ে ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন, ছাত্রীদের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে আছে। সিসিটিভি ফুটেজও থাকার কথা। তারপরেও দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেরি হবে কেন? এর দায় পুলিশক এবং কলেজ কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে দাবি তুলেছে নাগরিক সমাজের একাংশ। সূত্র: পিটিআই, এনডিটিভি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ