মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ধর্ম না উন্নয়ন? এই প্রশ্নে দ্বিতীয় বিকল্পকেই বেছে নিল ভারতের রাজধানী দিল্লি। তৃতীয়বারের জন্য দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসতে চলেছেন অরবিন্দ কেজরীওয়াল। আসন কিছুটা কমলেও বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে আম আদমি পার্টি (আপ)। বিজেপির আসন বাড়লেও ধর্মীয় মেরুকরণ, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি), জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টার (এনপিআর)-এর ধাক্কায় এ বারও দিল্লির মসনদ অধরাই থেকে গেল বিজেপির কাছে। কার্যত ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গেল কংগ্রেস।
বুথ ফেরত সমীক্ষায় ইঙ্গিত ছিলই। মঙ্গলবার সকালে ইভিএম খোলা শুরু হতেই দিকে দিকে আপের জয়জয়কার। গণনা শেষে দেখা গেছে ৫৮ টি আসন পেয়ে দিল্লিতে ফের ক্ষমতায় আসতে চলেছে আপ। ২০১৫ সালের নির্বাচনে আপ পেয়েছিল ৬৭ টি আসট। বিজেপি পেয়েছে ১২টি আসন। ভরাডুবির মধ্যে বিজেপির কাছে একমাত্র সান্ত্বনা, গত বারের চেয়ে আসন বাড়ানো। তারা গতবার পেয়েছিল ৩ টি আসন। হারের ক্ষতে কিছুটা প্রলেপ হতে পারে বর্তমান উপ-মুখ্যমন্ত্রী তথা শিক্ষামন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া হারলে। গণনার শুরু থেকেই তিনি বিজেপি প্রার্থীর কাছে পিছিয়ে রয়েছেন।
কিন্তু কী এমন ম্যাজিক দেখিয়েছেন কেজরীওয়াল? প্রথম বার ৪৫ দিনের মাথায় মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে তিনি কার্যত বোকামিই করেছিলেন বলে অনেকেই কটাক্ষ করেছিলেন সে সময়। কিন্তু সেটা যে লম্বা দৌড়ের প্রস্তুতি ছিল, তা বোঝা গিয়েছে গত পাঁচ বছরে কেজরীওয়ালের উন্নয়নের রাজনীতিতে। দিল্লিবাসীর জন্য বিদ্যুতের বিল প্রায় মওকুফ করে দেয়া, মহিলাদের জন্য বিনামূল্য বাসযাত্রা, বিনা পয়সায় ২০ লিটার পর্যন্ত পানি দেয়ার মতো জনমুখী প্রকল্পের উপর আস্থা রেখেছেন দিল্লিবাসী। তার সঙ্গে ছিল প্রায় দুর্নীতিহীন সরকার উপহার দেয়া।
অথচ কয়েক মাস আগের লোকসভা ভোটেও ভরাডুবি হয়েছিল আপের। দিল্লির সাতটি আসনের একটিতেও জিততে পারেনি আপ। সব কটি আসন ঝুলিতে পুরেছিল বিজেপি। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে বিধানসভা নির্বাচনে যে ভাবে আপ ফের ক্ষমতায় ফিরল, তার কৃতিত্ব একমাত্র উন্নয়নের রাজনীতি বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। তার সঙ্গে সিএএ, এনআরসি নিয়ে বিজেপির একগুঁয়েমি, শাহিন বাগ, জেএনইউ-তে হামলার মতো ঘটনাও দিল্লির ভোটে প্রভাব ফেলেছে বলেই মত পর্যবেক্ষকদের।
কিন্তু কেজরীওয়ালের যাত্রা এতটা কুসুমাস্তীর্ণ। এমনকী, ঘনিষ্ঠ মহলে কেজরীওয়াল স্বীকার করেছেন, সরাসরি রাজনীতিতে আসার কথা কেরিয়ারের শুরুতে কখনওই ভাবেননি। কিন্তু ইন্ডিয়ান রেভিনিউ সার্ভিসের নিশ্চিন্ত সরকারি চাকরি ছাড়ার পর থেকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যে ভাবে ঘটনা প্রবাহ এগিয়েছে, তাতে ধীরে ধীরে রাজনীতির গণ্ডিতে কার্যত নিজের অজান্তেই পা দিয়ে ফেলেছিলেন খড়গপুর আইআইটির সাবেক ছাত্র কেজরীওয়াল।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, কেজরীওয়ালের অজান্তেই সেই পথের সূচনা হয়েছিল সমাজকর্মী অন্না হজারের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে দুর্নীতির বিরুদ্ধে টানা অনশন-ধর্না আন্দোলন। লোকপাল বিলের দাবিতে যে ভাবে দিনের পর দিন অনশন ও শান্তিপূর্ণ অবস্থান আন্দোলন করেছিলেন কেজরীওয়াল, তাতে তার মধ্যে এক নতুন নেতার স্ফুলিঙ্গ দেখেছিলেন দেশবাসী। সেই মাফলার ম্যন কেজরীওয়ালের হাত ধরেই দেশবাসী স্বপ্ন দেখেছিলেন এক নতুন ভারতের। এক দুর্নীতিমুক্ত ভারতের। সূত্র: টাইমস নাউ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।