পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী (বিএসএফ) বাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিকদের অব্যাহত হত্যার প্রতিবাদে টানা ১২ দিন অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থী। সীমান্ত সমস্যা সুরাহার আগ পর্যন্ত তিনি কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। অবস্থানরত শিক্ষার্থীর সাথে সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও অনুষদের শিক্ষার্থীদের তার সাথে অবস্থান নিতে দেখা গেছে। শিক্ষার্থীর অবস্থান কর্মসূচির মধ্যেই একই দাবিতে ক্যাম্পাসে কর্মসূচি পালন করেছে সন্ত্রাস বিরোধী ছাত্র ঐক্য। শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা তৈরীর লক্ষ্যে পালন করা এ কর্মসূচির ফলে ভারতীয় সম্প্রসারণবাদ বিরোধী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ‘আরে! দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা!’ স্লোগানটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
কর্মসূচি পালন করা নাসির আব্দুল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের আবাসিক ছাত্র। তিনি ঢাবি মার্কেটিং বিভাগের মাস্টর্সের শিক্ষার্থী এবং ছাত্র ফেডারেশনের কর্মী। গতমাসের ২৫ তারিখ থেকে ঢাবি সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান করছেন তিনি। তার সাথে ঐক্যমত পোষণ করে বিভিন্ন সময়ে আরও একাধিক শিক্ষার্থী অবস্থানে যোগ দেন। সংহতি জানিয়ে অবস্থান করতে দেখা গেছে ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনকেও। সংহতি জানানো শিক্ষার্থীরা মিলে অবস্থানস্থলে বাঁশ ও কাপড় দিয়ে তাঁর জন্য ছোট একটি প্যান্ডেল করেছেন।
আন্দোলনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে নাসির আব্দুল্লাহ বলেন, সীমান্তে প্রতিনিয়ত অসংখ্য বাংলাদেশিকে হত্যা করা হচ্ছে। আমি চাই প্রত্যেকটি মানুষ বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে নিক এবং জাতীয় সংসদে বিষয়টি আলোচনায় আসুক। এভাবে একটি দেশ চলতে পারে না। যতদিন ভারত সীমান্তে নির্বিচারে বাংলাদেশি হত্যার প্রতিরোধ গড়ে তোলা না হবে এবং এসব হত্যাকান্ডের বিষয়ে মানুষ সতেচন না হবে ততদিন তার অবস্থান কর্মসূচী অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
পারিবারিক ও সামাজিক হেনস্তার অভিযোগ: এদিকে ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী এ শিক্ষার্থী পারিবারিক ও সামাজিকভাবে হেনস্তার শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন। তিনি ইনকিলাবকে জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আমার এলাকায় গিয়ে খোঁজ নিয়েছেন এবং বলেছেন আমি রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতা চালাচ্ছি। আমি তো খোলা আকাশের নিচে বসে আছি তারা চাইলে আমার সাথে এসে কথা বলতে পারে আমরা এলাকায় গিয়ে এভাবে ভয় দেখানো কতটা যৌক্তিক সেটা রাষ্ট্রের ভেবে দেখা উচিত।
মুঠোফোনে সাক্ষাৎকারে নাসির আব্দুল্লাহ বলেন, রাষ্ট্রের যে অর্গানগুলোর দেশের সার্বভৌমত্ব্ রক্ষা করার কথা তারা ব্যর্থ হচ্ছে। আমরা আমাদের স্বাধীনতাকে যথাযথভাবে রক্ষা করতে পারছি না। রাষ্ট্রের জনগণও বিষয়টি নিয়ে কনসার্ন। তারা আমার কাছে আসছেন সংহতি জানাচ্ছেন কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কথা বলাকে নিজেদের জন্য হুমকি মনে করছেন। কর্মসূচি কতদিন পর্যন্ত চলবে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি যতদিন সীমান্ত সমস্যা সুরাহা না হবে বিষয়টি নিয়ে কথা বলে যাব। এখানে আমি তীব্র ঠান্ডা ও ধুলাবালির মধ্যে অবস্থান পালন করছি। ফলে শারিরীকভাবে দূর্বল হয়ে পড়েছি। আমার শরীরে যতক্ষণ শক্তি আছে আমি আমার এ অবস্থান চালিয়ে যাব।
শিক্ষার্থীদের সচেতনতা বাড়ছে: এদিকে নাসির আব্দুল্লার অবস্থানের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা মুখ খুলতে শুরু করেছেন। তার অবস্থান কর্মসূচির মধ্যেই ২৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ-ভারতে সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিক হত্যার প্রতিবাদে ঢাবি ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল করে সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্র ঐক্যের নেতাকর্মীরা। তাদের উদ্যোগে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘সীমান্ত আখ্যান’ চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী করা হয়। এসব কর্মসূচিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অংশ নিতে দেখা যায়। সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্র ঐক্যের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন (গণসংহতি আন্দোলন), বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন (বদরুদ্দীন উমর), সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট (বাসদ), সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (মার্কসবাদী), বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলন, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, নাগরিক ছাত্র ঐক্য, স্বতন্ত্র জোট ও ছাত্র গণমঞ্চ। এছাড়াও ডাকসু সতন্ত্র জোট, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা নাসির আব্দুল্লাহর সাথে সংহতি জানিয়েছে।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।