Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এনআরসি নিয়ে পিছু হঠল মোদি সরকার

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৫:২৯ পিএম

দেশজোড়া বিক্ষোভ, আন্দোলনের চাপে সুর নরম করতে বাধ্য হচ্ছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সংসদে মঙ্গলবার একটি লিখিত বিবৃতিতে তেমনই দেখা গেল।

সমগ্র ভারতেই জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) চালু করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কিন্তু ভিন্ন তথ্য দিলেন সরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রায়। লোকসভায় এনআরসি সংক্রান্ত আলোচনার মুখে তিনি লিখিত বিবৃতি দিয়ে জানালেন, ‘এখনই দেশ জুড়ে জাতীয় নাগরিকপঞ্জির কাজ শুরু করার কোনও পরিকল্পনা নেই।’ তার এই মন্তব্যকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জবাব বলে ধরে নেয়া হচ্ছে। এবং সেক্ষেত্রে অর্থাৎ এনআরসি নিয়ে অমিত শাহর মৌখিক আস্ফালন অনেকটাই ফাঁকা আওয়াজ বলে মনে করতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ থেকে শুরু করে কেন্দ্রের অন্যান্য মন্ত্রী, এমনকী এ রাজ্যের বিজেপি নেতারাও সিএএ-এনআরসি প্রয়োগ করা নিয়ে বারবারই কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে যাচ্ছেন। এ নিয়ে আসাম-সহ ভারতের বিভিন্ন অংশে চলছে আন্দোলন। যার সর্বাগ্রে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই আন্দোলনে গোটা দেশকেই দিশা দেখিয়েছে তৃণমূলের প্রতিবাদ কর্মসূচি। সংসদের অন্যান্য অধিবেশনের মতো বাজেট অধিবেশনেও এসবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর কৌশল নিয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিরোধী দলগুলি। সংসদের ভিতরে এবং বাইরে এনআরসি-সিএএ বিরোধী বিক্ষোভে শাসকদলকে চাপে রাখতে চান তারা।

সেইমতো মঙ্গলবার অধিবেশন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় বিক্ষোভ। পরে এই সংক্রান্ত একটি প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই লিখিত বিবৃতিতে জানিয়ে দিলেন, ‘এখনও পর্যন্ত, দেশ জুড়ে জাতীয় নাগরিকপঞ্জির কাজ শুরু করার কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার।’ তার এই মন্তব্যের পরই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে আলোচনা। তাহলে কি লাগাতার বিক্ষোভের মুখে পড়ে এনআরসি ইস্যুতে ‘ধীরে চলো’ নীতি গ্রহণ করছে কেন্দ্র? নাকি আসাম থেকে শিক্ষা নিয়ে পিছু হঠছেন নেতারা? অসমে এনআরসি-র পরও বাদ যাওয়া ১৯ লাখ মানুষের মধ্যে ১২ লাখই হিন্দু বাঙালি। যা প্রায় বুমেরাং হয়ে এসেছে বিজেপির কাছে।

বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত, নিত্যানন্দ রাইয়ের এই লিখিত বিবৃতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর বক্তব্যের সঙ্গে অমিল। যেখানে মন্ত্রী বারবারই জাতীয় নাগরিকপঞ্জি প্রয়োগ করতে ব্যস্ত হয়ে উঠছেন, প্রধানমন্ত্রী নিজেও এর প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করছেন বিভিন্ন সভায়, সেখানে প্রতিমন্ত্রীর এই লিখিত বিবৃতিতেই স্পষ্ট যে তাদের সেসব বক্তব্য কেবলই মুখের কথা। আসলে দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি বুঝে, রাজনীতির গতি মেপে তবেই এনআরসি চালুর সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্র। আরেকাংশের মতে, এনআরসি বিষয়টি এতটাই স্পর্শকাতর হয়ে উঠেছে এই মুহূর্তে যে এ নিয়ে কোনও নির্দিষ্ট পরিকল্পনাই গড়ে তুলতে পারেনি মোদি সরকার। সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে।

 



 

Show all comments
  • সাইফ ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৬:৫৩ পিএম says : 0
    এটা এদের চক্রান্ত ছাড়া আর কিছুই নয় যা আন্দোলন কে দুর্বল করার চক্রান্ত।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Azadul Islam ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৭:০৬ পিএম says : 0
    এটা চানক্য নীতি, এই নীতির মূল লক্ষ্য যে ভাবেই হোক নিজের স্বার্থ সিদ্ধিলাভ করা।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ