Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

তেজগাঁও রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সে চুরির তদন্তে অগ্রগতি নেই

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০০ এএম

রাজধানীর তেজগাঁও রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সে চুরির ঘটনায় তদন্তে কোনো অগ্রগতি নেই। দীর্ঘ ১৭দিনেও চুরি নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না। চুরির ঘটনার ৫ দিন পর কর্তপক্ষ ঘোষণা দেন, কিছুই চুরি হয়নি। কোনো গুরুত্বপূর্ণ নথি এমনকি বালাম বই পর্যন্ত চুরি হয়নি। শুধু ডিভিআর কস্পিউটার হার্ডডিক্স, সিপিইউসহ ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাসহ কিছু ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম চুরি হয়েছে। অনেকেই বলছেন, দীর্ঘ দিনের এই চোর সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কোন প্রশাসনই ব্যবস্থা নিতে পারছে না।

এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার এসআই বাবলুর রহমান গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, রেজিষ্ট্রেশন কার্যালয়ের চুরির ঘটনা নিয়ে তারা এখনও অন্ধকারের মধ্যে আছেন। ঘটনা নিয়ে অনেক রহস্য রয়েছে। সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষর এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করলেও রেজিস্ট্রেশন কার্যালয় থেকে প্রকৃতপক্ষে কি ধরনের সরঞ্জাম চুরি হয়েছে তা জানা যায়নি। চুরির ঘটনায় রেজিস্ট্রেশন কার্যালয়ের কেউ জড়িত আছে কিনা তাও জানা যায়নি। যদিও ঘটনার পরপরই রেজিস্ট্রেশন কার্যালয়ের নিরাপত্তা বিভাগের তিনজনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তারাও ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে। এছাড়া ঘটনায় জড়িত কাউকেই এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা যায়নি।

এক প্রশ্নের জবাবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, পাশের একটি ভবনের সিসি ক্যামেরায় দুজনকে দেখা গেছে, তবে তাদের চেহারা বোঝা যায়নি। আমরা চেষ্টা করছি জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করার।
পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, ঘটনার শুরু থেকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের রেজিষ্ট্রেশন কার্যালয় থেকে গুরুত্বপূর্ণ নথি, মোটা অংকের টাকা, দলিল, কম্পিউটারের হার্ডডিক্স, ডিভিআর ও ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাসহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ জিনিস চুরি হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়। কিন্তু সংশ্লি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষ ঘটনার পরপরই কোন রকম যাচাই বাছাই ছাড়াই মামলার এজাহারে যা যা উলে¬খ করেছে সেই অনুযায়ি তদন্ত চলছে। বিপুল অঙ্কের নগদ টাকা চুরি হওয়ার আলোচনা থাকলেও সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে এখনও পুলিশকে খোলাশা করে কিছু জানায়নি।
যেভাবে চুরি হয়
পাশাপাশি চার তলা ও তিন তলা বিশিষ্ট দুইটি ভবন নিয়ে তেজগাঁও রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্স। চার তলা ভবনটি নতুন। পুরাতন তিন তলা ভবনের পেছনে দলিল লেখকদের টিনশেড স্থাপনা। টিনশেড স্থাপনাটি নতুন ভবনের সঙ্গে সংযোগ রয়েছে। এই টিনশেডের চাল বেয়ে কমপ্লেক্স ভবনের ভেতরে ঢোকে চোরের দল। এরপর নতুন ভবনের দোতলার কলাপসিবল গেটের গ্রিল কেটে পর্যায়ক্রমে দোতলায় বাড্ডা ও তৃতীয় তলায় উত্তরা থানার সাব রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের তালা ভেঙ্গে ফেলে। কক্ষ দুটির স্টিলের আলমারি ও ড্রয়ার ভেঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ নথিসহ মোটা অংকের টাকা চুরি করে। চোরের দল চার তলায় ঢাকা জেলা রেজিষ্ট্রার সাবেকুন নাহারের অফিস কক্ষে ঢোকার আগে তালা ভাঙ্গার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে শাবল দিয়ে দরজার মুল সিটকিনি ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে। তারা সেখান থেকে সংরক্ষিত সিসি ক্যামেরা ও ডিভিআর নিয়ে যায়। এ কারণে সিসি ক্যামেরায় কোন ভিডিও ফুটেজ পাওয়া যায়নি। তবে কমপ্লেক্সের বাইরের একটি সিসি ক্যামেরায় ভিডিও ফুটেজে দুজনকে দেখা গেছে। পুলিশ এ দুজনকে সন্দেহে রেখে ঘটনার রহস্য উৎঘাটনের চেষ্টা করছে।

উল্লেখ্য,গত ১৫জানুয়ারী বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার ভোরের যে কোন সময়ে তেজগাঁও রেজিষ্ট্রেশন কমপ্লেক্সে চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত ১৬ জানুয়ারী বৃৃহস্পতিবার রাতে বাড্ডা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের সাব-রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি মামলা করেন। এর আগে ২০১৬ সালের নভেম্বরে এবং ২০১৮ সালের ফেব্রæয়ারিতে দুই দফা চুরির পর ভবনের বিভিন্ন অংশে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসায় কর্তৃৃপক্ষ। এবার সেই ক্যামেরা ও হার্ডডিস্কও খোয়া গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রেজিস্ট্রেশন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ