Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুসলিমরা ভারতেরই নাগরিক

সিএএ নিয়ে এনডিএ বৈঠকে বললেন প্রধানমন্ত্রী

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:৩৫ এএম

সিএএ’র সমর্থনে এগিয়ে আসতে এনডিএ শরিকদের আবেদন জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গতকাল সংসদে বিজেপির শরিক দলগুলোর সাংসদদের খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। ‘যারা বলবে সিএএ বিভেদমূলক, তাদের বিরোধিতা করুন,’ এনডিএ শরিকদের এমন পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বাজেট অধিবেশনে ট্রেজারি বেঞ্চের ভ‚মিকা কী থাকবে? এ বিষয়ে আলোচনা করতে শরিক দলগুলোকে সংসদের সেন্ট্রাল হলে বৈঠকে ডাকেন প্রধানমন্ত্রী। সেই বৈঠকেই তিনি এমন আবেদন করেছেন।
তিনি বলেন, ‘কিছু মানুষ নাগরিক আইন নিয়ে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছেন। তাদের প্রতিহত করতে হবে। মুসলিমরাও আমাদের দেশের নাগরিক। ওদের সমান অধিকার ও কর্তব্য আছে’। বৈঠকে এনডিএ শরিকরা একটা প্রস্তাব পাস করান। সেই প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থন করে বলা, ‘নাগরিক আইন পাস করিয়ে মহাত্মা গান্ধীর স্বপ্নপূরণ করেছেন নরেন্দ্র মোদি’। পাশাপাশি জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বিলোপ, বড় শান্তি চুক্তি, কর্তারপুর করিডর নির্মাণ প্রসঙ্গে সহমত জানিয়েছেন এনডিএ শরিক দলের সাংসদরা।
এদিকে, একদিকে শাসক বিজেপির প্রশংসার করতালি, অন্যদিকে বিরোধী দলের ‘শেম শেম’' ধ্বনি। গতকাল সংসদে সংশোধিত নাগরিকত্ব বিল বা সিএএ নিয়ে প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দের প্রতিক্রিয়ায় এভাবেই ভিন্ন ছবি দেখা গেল। এদিন সিএএ-র প্রশংসা করে প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমাদের জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীজি দেশভাগের পরে বলেছিলেন যে, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন এবং অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা যদি এ দেশে এসে আশ্রয় প্রার্থনা করে তবে তাদের ভারতের নাগরিকত্ব দেয়া উচিত। আমাদের জাতির জনকের সেই ইচ্ছাকে অবশ্যই সম্মান জানাতে হবে। আমি তৃপ্ত এই জন্যে যে বাপুর ইচ্ছা বাস্তবায়নের জন্য সংসদের উভয় কক্ষের সাংসদরা মিলে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনটি পাস করেছেন’।
প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ডেস্ক চাপড়ে প্রশংসা ব্যক্ত করেন বিজেপি সাংসদরা। কিন্তু একই সঙ্গে শুরু হয় বিরোধীদের ‘শেম শেম'’ ধ্বনি। এদিন সংসদের যৌথ অধিবেশনে বাজেট অধিবেশনের প্রথাগত সূচনা হয় প্রেসিডেন্টের ভাষণের মধ্যে দিয়ে। বিরোধীরা প্রতিবাদে সামনের আসন ত্যাগ করে। কেবলমাত্র প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং সেখানে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও অন্যান্য মন্ত্রীদের সঙ্গে। কংগ্রেসের অন্তবর্তী সভাপতি সোনিয়া গান্ধী যদিও পিছনের সারিতে কংগ্রেস সাংসদদের সঙ্গে বসেছিলেন।
তার ভাষণের শুরুতে প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমার সরকার জনাদেশ পেয়েছে ‘নতুন ভারত’ তৈরি করার জন্য। আমার সরকার সেটাই করার চেষ্টা করছে’। প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘কোনও কিছু হওয়ার আগে সবার প্রথমে আমরা ভারতের নাগরিক এবং নাগরিক হিসেবে ব্যক্তিগত বিশ্বাস ও আকাক্সক্ষার আগে থাকে দেশ’।
অপরদিকে, ইউরোপীয় সংসদে ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন লাগু নিয়ে বিরোধী প্রস্তাব উত্থাপন হলেও শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার তা নিয়ে ভোটাভুটি না করারই সিদ্ধান্ত নিল তারা। আর এই সিদ্ধান্তকেই নিজেদের ‘ক‚টনৈতিক জয়’ হিসাবে দেখছে মোদি সরকার। এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৭৫১ জন সদস্যের মধ্যে ৫৬০ জন সাংসদ সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং জম্মু ও কাশ্মীর প্রসঙ্গে ৬টি বিরোধী প্রস্তাব পেশ করেন। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনকে ‘বৈষম্যমূলক ও বিপজ্জনকভাবে বিভেদমূলক’ বলে প্রস্তাব পেশ হয় ইউরোপীয় ইউনিয়নের সংসদে, সেই বিষয়েই বুধবার দিনভর তর্ক-বিতর্কের পর বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে ভোটাভুটি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই মুহ‚র্তে সেই ভোটাভুটি থেকে পিছিয়ে এল ইউরোপীয় সংসদ। তবে ‘জাতীয়তাবাদের নামে দেশে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা ও মুসলমানদের প্রতি বৈষম্য বাড়ছে’, বলে ভারতকে সতর্ক করেছে ইইউ সংসদ। সূত্র : এনডিটিভি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ