Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সিএএ-বিরোধী প্রস্তাবে সম্মতি ছত্তিশগড় মন্ত্রিসভার

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০৩ এএম

কংগ্রেস-শাসিত ছত্তিশগড় মন্ত্রিসভা গত বৃহস্পতিবার বিতর্কিত নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইনের বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। আগামী মার্চে রাজ্য বিধান সভার বাজেট অধিবেশনে প্রস্তাবটি পাস করানোর জন্য উত্থাপন করা হবে। রাজ্য সরকারের এক প্রজ্ঞাপনে এ কথা বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, সিএএ নিয়ে ভারতজুড়ে বিক্ষোভ চলছে।
এখন পর্যন্ত চারটি রাজ্যের বিধান সভায় সিএএবিরোধী প্রস্তাব পাস হয়েছে। গত মাসে ভারতে সিএএ আইন পাস হয়। এতে ২০১৫ সালের আগে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়া অমুসলিমদেরকে দ্রæততার সাথে নাগরিকত্ব প্রদান করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
এই আইনের বিরোধীরা একে বৈষম্যমূলক ও অসাংবিধানিক হিসেবে অভিহিত করে বলছে, এর ফলে সেক্যুলার দেশটিতে নাগরিকত্ব অর্জনের জন্য ধর্মকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে এবং মুসলিমদেরকে বাদ দেয়া হয়েছে। তারা বলছে, দেশব্যাপী জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) বাস্তবায়ন করা হলে নথিপত্র দেখাতে অক্ষম মুসলিমদেরকে ভারত থেকে বহিষ্কার করা হবে বা আটককেন্দ্রে রাখা হবে। গত বছর আসামে এনআরসি বাস্তবায়ন করার ফলে প্রায় ২০ লাখ লোক তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। সরকার অবশ্য এখন বলছে যে, সারা ভারতে এখনই এনআরসি বাস্তবায়ন করার কোনো পরিকল্পনা নেই।
ছত্তিশগড় প্রস্তাবে সিএএ বাতিল করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহŸান জানিয়ে জোরালোভাবে বলা হয়েছে যে এটি সংবিধানের চেতনার পরিপন্থী।
মন্ত্রিসভায় প্রস্তাবটি অনুমোদিত হওয়ার পর ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভুপশে বেঘালও প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখে উল্লেখ করেন যে, সিএএ সংবিধানের মৌলিক ধারার লঙ্ঘন। তিনি বলেন, বর্তমান সংশোধনী অবৈধ। এতে ধর্মের ভিত্তিতে অভিবাসীদের আলাদা করার যে বিধান রাখা হয়েছে তা সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৪-এর পরিপন্থী। তাছাড়া শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, নেপাল ও ভুটানের মতো প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে আসা অভিবাসীদের কথাও এতে নেই।
তিনি বলেন, ছত্তিশগড়ে সিএএবিরোধী বিক্ষোভ হচ্ছে শান্তিপূর্ণভাবে এবং সমাজের বিভিন্ন অংশের লোকজন তাতে অংশ নিচ্ছে। তিনি বলেন, সংবিধানের কাছে সব ধর্মই সমান। কিন্তু সিএএ সংবিধানের এই ধারাটির লঙ্ঘন ঘটিয়েছে। তিনি বলেন, সংবিধান সমাজের সবার সমান অধিকার দিয়েছে।
তিনি বলেন, সংবিধানের পরিপন্থী হয়, এমন কোনো আইন প্রণয়ন করা উচিত নয়। তিনি সংবিধানের চেতনা সমুন্নত রাখার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহŸান জানান।
ছত্তিশগড়ে বিরোধী বিজেপির মুখপাত্র গৌরি শঙ্কর শ্রবাস বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর এসব বক্তব্য সময়ের অপচয় মাত্র। তাছাড়া মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে হবে যে তার সরকার ছত্তিশগড়ে হিন্দুদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত কিনা।
সোমবার চতুর্থ রাজ্য হিসেবে তৃণম‚ল কংগ্রেস-শাসিত পশ্চিমবঙ্গে সিএএবিরোধী প্রস্তাব পাস হয় বিধানসভায়। প্রস্তাবে সিএএকে সংবিধানবিরোধী হিসেবে আখ্যায়িত করে অবিলম্বে তা বাতিলের দাবি জানানো হয়। এর আগে শনিবার কংগ্রেস-শাসিত রাজস্তানের বিধান সভায় সিএএ বাতিলের আহŸান জানানো হয়। বামপন্থীদের শাসিত কেরালা ও কংগ্রেস-শাসিত পাঞ্জাবেও এই ধরনের প্রস্তাব পাস হয়েছে যথাক্রমে ৩১ ডিসেম্বর ও ১৭ জানুয়ারি। কেরালা প্রথম রাজ্য হিসেবে জানুয়ারিতে সিএএকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। উল্লেখ্য ভারতের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৩১ অনুযায়ী, রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হলে তা মীমাংসার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সুপ্রিম কোর্টকে। সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ