চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
একমাত্র ইসলামই মহিলাদের শ্রেষ্ঠ হক্ব সংরক্ষণকারী। মহান আল্লাহ পাক কুরআন এ পাকে বলেন, অর্থ: ‘হে মানবজাতি, নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে একজন পুরুষ এবং একজন নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং আমি তোমাদের বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে গোত্রে বিভক্ত করেছি যাতে তোমরা একে অপরের পরিচয় লাভ করতে পার, নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে আল্লাহ পাক এর নিকট ঐ ব্যক্তি সবচেয়ে সম্মানিত যে বেশি মুত্তাকী।’ (সূরা হুজরাত : আয়াত ১৩)
ইসলামে মহিলাদের মর্যাদা ও সম্মান: ইসলামে পুরুষ ও মহিলা তথা আদম সন্তানদের মর্যাদা ও সম্মান সম্পর্কে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন- ‘নিশ্চয়ই আমি আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি।’ (সূরা বনী ইসরাঈল: আয়াত ৭০)
মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব মোহাম্মাদ সা. এর উসিলায় গোটা মানবজতিকে আশরাফিয়াত বা শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। যে মর্যাদা সম্মান অন্যান্য মাখলুকাতকে দেয়া হয়নি। পুরুষ ও মহিলা সকলেই সেই মর্যাদা-সম্মানের অধিকারী। আর পুরুষ ও মহিলা উভয় মিলে একে অপরের পরিপূরক। মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন- ‘তারা (মহিলারা) তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা (পুরুষেরা) তাদের পরিচ্ছদ।’ (সূরা বাক্বারা-১৮৭)
অর্থাৎ পুরুষ ও মহিলা উভয়ে মিলে একটি পরিবার, একে অপরের পোশাকস্বরূপ এবং সম্পূরক। আল্লাহ পাক আরো ইরশাদ করেন- অর্থ: পুরুষদেরকে নারীদের উপর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আর আল্লাহ পাক একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এজন্য যে, তারা (পুরুষেরা) তাদের অর্থ ব্যয় করে।’ (সূরা আন নিসা-৩৪)
আল্লাহ পাক মহিলাদেরকে এমন কতগুলো বৈশিষ্ট্য দিয়ে সৃষ্টি করেছেন যার কারণে পারিবারিক জীবনে পুরুষের তত্ত্বাবধানে থাকা তাদের জন্য নিরাপদ। অন্যদিকে পুরুষেরা মহিলাদের জন্য নিরাপদ। আর পুরুষেরা মহিলাদের মহর দিয়ে বিবাহ করে এবং তাদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে থাকে, এজন্য পুরুষদের তত্ত্বাবধানে থাকা মহিলাদের কল্যাণকর যা শরীয়তে আবশ্যক। তবে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক সম্মানিত ঐ ব্যক্তি যে ব্যক্তি সবচেয়ে বেশী মুত্তাকী।’ (সূরা হুজুরাত-৪৯)
আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক সা. ইরশাদ করেন, ‘পুরুষ তত্ত¡াবধায়ক তার পরিবারের। আর মহিলা তত্ত্বাবধায়ক তার স্বামীর ঘরের ও তার সন্তানের।’ (বুখারী শরীফ) আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক সা. পূরুষ জাতির কর্মের পরিধি মহিলা জাতির কর্মের পরিধি থেকে পৃথক করে দিয়েছেন। সে মোতাবেক মহিলারা বাড়ির ভেতরের জন্য দায়িত্বশীল এবং পুরুষেরা বাড়ির বাইরের জন্য দায়িত্বশীল। কাজেই পুরুষ ও মহিলা উভয়জাতিই তাদের স্বীয় অবস্থানে অত্যন্ত সম্মানীত ও ফযীলতপূর্ণ। সুবহানাল্লাহ!
কাফির মুশরিকদের ধর্মে মহিলাদের অবস্থান: নবীদের নবী হুযূর পাক সা. দুনিয়ায় তাশরীফ আনার পূর্বে সমাজে মহিলারা ছিল নির্যাতিত ও উপেক্ষিত। বলতে গেলে সমাজে তাদের কোন মান সম্মানই ছিলো না। প্রাচীনকালে হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মে মহিলাদের সমস্ত পাপ কর্মের উৎস বলা হতো। তাদের বাঁদি মনে করা হতো। মৃত স্বামীর চিতায় হিন্দু বিধবা মহিলাদের জীবন বিসর্জন দিতে হতো। বিধবা-বিবাহ নিষিদ্ধ ছিলো। তাদের পোশাক-আশাক ও খাদ্য সমগ্রী আলাদা ধরনের হতো। কন্যারা পিতার সম্পত্তির ওয়ারিশ হত না, যা এখনও হিন্দু ধর্মে চালু রয়েছে। নাঊযুবিল্লাহ! আরব দেশে প্রাক ইসলামী যুগে মহিলাদের অবস্থা ছিলো বড়ই শোচনীয়। সেখানে বিবাহ এবং বিবাহ বিচ্ছেদের কোনই নিয়ম-কানুন ছিলোনা। মহিলারা ওয়ারিশসূত্রে কোন ধন-সম্পদ পেত না। এমনকি পুরুষেরা তাদের কন্যাদের জীবন্ত কবর দিতো। পৃথিবীর কোন কোন স্থানে মহিলাদেরকে শয়তানের সমতুল্য মনে করা হতো এবং তাদেরকে পশুর মত খাটাতো। আর বলা হতো যে, মহিলাদের আত্মা নেই। যারা ইহুদী-নাসারা ,কাফির-মুশরিক তাদের বিশ্বাস ছিলো যে মহিলাদের আত্মা নেই তাই মহিলাদের সঙ্গে তারা পশু সুলভ আচরণ করত। নাউযুবিল্লাহ!
দীন ইসলামে মহিলাদের অধিকার: ইসলাম বিদ্বেষী, মুসলমানদের চিরশত্রু ইহুদী-নাসারা, কাফির-মুশরিক তথা বিধর্মীরা মহিলাদেরকে দুনিয়াবী কোন সুযোগ সুবিধা দেয়না। এমনকি ধন সম্পদের ওয়ারিশ থেকেও তাদের বঞ্চিত করে থাকে। কিন্তু ইসলাম মহিলাদের কন্যা, স্ত্রী, মা ও ভগ্নি হিসেবে ধন-সম্পদের ওয়ারিশ করেছে এবং স্বামীর উপর স্ত্রীর ভরণ-পোষন ফরয করে দিয়েছে। সম্মানের সাথে মহর দিয়ে বিয়ে করা স্বামীর উপর আবশ্যক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।