মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আর্থিক সঙ্কট কাটাতে মোদি সরকার এখন শত্রু সম্পত্তি বিক্রি করতে চাইছে। ভারতে নয় হাজারেরও বেশি শত্রু সম্পত্তি বিক্রি করবে নরেন্দ্র মোদি সরকার। তাদের আশা, এই সম্পত্তি বিক্রি করে পাওয়া যাবে এক লাখ কোটি টাকা। সেই প্রক্রিয়া যাতে দ্রুত ও বাধাহীনভাবে হয়, সে জন্য সরকার তিনটি কমিটি তৈরি করেছে। অমিত শাহের নেতৃত্বে মন্ত্রী পর্যায়ের কমিটি ছাড়াও ক্যাবিনেট সচিব ও স্বরাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে আরও দুটি কমিটি করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পশ্চিমবঙ্গ ও মহারাষ্ট্রের শত্রু সম্পত্তি সরকার দ্রুত বিক্রি করতে চায়। কারণ, এই দুই রাজ্যে সম্পত্তি বিক্রি করে সবচেয়ে বেশি টাকা পাওয়া যাবে। উত্তর প্রদেশে প্রায় পাঁচ হাজার শত্রু সম্পত্তি আছে। তবে সরকারের কাছে অগ্রাধিকার পাবে, কলকাতা বা মুম্বইয়ের শত্রু সম্পত্তি বিক্রি করা। কারণ ওই দুই শহরে জমি ও বাড়ির দাম অনেক বেশি।
দেশভাগের সময় প্রধাণত যে মুসলিমরা ভারত ছেড়ে পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তানে চলে গিয়েছিলেন এই সম্পত্তি ছিল তাদের। হিসাব বলছে, পশ্চিমবঙ্গেই এরকম সম্পত্তির পরিমাণ দুই হাজার ৭২৫টি। দেশভাগের পর পশ্চিমবঙ্গ, বিশেষ করে কলকাতা ছেড়ে তারা চলে গিয়েছিলেন তখনকার পূর্ব পাকিস্তানে। সারা দেশে শত্রু সম্পত্তির পরিমাণ হল নয় হাজার ২৮০টি, যা প্রধাণত মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ, উত্তর প্রদেশে ছড়িয়ে। মুসলিম বাদে চীনাদের ছেড়ে যাওয়া অল্প কিছু সম্পত্তিও আছে।
নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের বিজনেস এডিটর জয়ন্ত রায়চৌধুরি মনে করেন, এখন শত্রু সম্পত্তি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে আর্থিক কারণে। ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেছেন, ‘মূলত কলকাতা ও মুম্বাইয়ের সম্পত্তি বিক্রি করে ভালো টাকা পাওয়া যাবে। তাই ওই দুই শহর বা বলা ভালো দুই রাজ্যের শত্রু সম্পত্তি আগে বিক্রির চেষ্টা করবে সরকার। তবে এই সম্পত্তি বিক্রি করতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। সেই প্রক্রিয়া দ্রুত করার জন্য এতগুলি কমিটি করা হয়েছে। কোনও সন্দেহ নেই এই টাকাপেলে সরকারের সমস্যা কমবে।’
তিন বছর আগে শত্রু সম্পত্তি বিক্রির রাস্তা সুপ্রিম কোর্ট সুগম করে দিয়েছিল। সর্বোচ্চ আদালতের রায় ছিল, শত্রু সম্পত্তি হলে তা বিক্রি করে দেওয়া উচিত। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিতাভ সিনহার মতে, এই সম্পত্তি বিক্রির ক্ষেত্রে কোনও আইনগত জটিলতা নেই। ডয়চে ভেলেকে তিনি জানিয়েছেন, ‘কিছু সম্পত্তি সরকারের কাছে আছে। কিছু জবরদখল হয়ে আছে। সেই সব সম্পত্তি খালি করে বিক্রি করাটা সরকারের দায়িত্ব। সরকার যদি একদিনে দিল্লিতে জবরদখল কলোনি খালি করে দিতে পারে, তা হলে বেআইনি দখলদারদেরও দ্রুত হঠিয়ে দিতে পারে। দরকার হলে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে তা হতে পারে। তবে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ফলে বিক্রির ক্ষেত্রে আইনগত জটিলতা নেই এটা বলা যেতে পারে। আর আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও একই পন্থা অনুসরণ করা হয়।’
তবে জয়ন্ত মনে করেন, ‘জবরদখল হয়ে থাকা শত্রু সম্পত্তি বিক্রি করতে গেলে মামলা হতেই পারে। তার জন্য বিক্রির ক্ষেত্রে কিছুটা দেরি হতে পারে। তবে সরকার দ্রুত বিক্রির ব্যবস্থা করতে চাইছে এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।’ দেশভাগের সময় পূর্ব পাকিস্তান থেকে এসেছিলেন প্রবীণ সাংবাদিক দীপ্তেন্দ্র রায়চৌধুরির পরিবার। ডয়চে ভেলেকে তিনি জানিয়েছেন, ‘যাদের কাছে জমি-বাড়ির দলিল বা প্রমাণপত্র ছিল, তারা টাকা পেয়েছেন। আমাদের কাছে না থাকায় আমরা পাইনি। তেমনই পশ্চিমবঙ্গের জমি, বাড়ি ছেড়ে যাঁরা চলে গিয়েছিলেন, তাঁদের কাছে প্রমাণ থাকলে তাঁরা সম্পত্তির টাকা পেয়ে গিয়েছেন। সেই সম্পত্তি এখন সরকারের। তারা তা বিক্রি করতেই পারে। দ্রুত করার চেষ্টাও অস্বাভাবিক কিছু নয়।’ আর্থিক সঙ্কট কাটাতে তাই শত্রু সম্পত্তি বিক্রির দিকেই নজর দিল মোদি সরকার। সূত্র: ডয়চে ভেলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।