পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মঙ্গলবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ‘শিবির সন্দেহে’ চার শিক্ষার্থীকে রাতভর মারধর ও নির্যাতন করে হল শাখা ছাত্রলীগ এবং হল সংসদের নেতারা। খোঁজ নিয়ে জানা যায় ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ও একই হলেই থাকেন। নির্যাতনে নেতৃত্ব দেয়া কয়েকজন নেতা তার অনুসারি বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে। কেন্দ্রীয় দায়িত্ব পাবার আগে জয় হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন। বুয়েটের আবরার ফাহাদ হত্যাকান্ডের তিন মাস না যেতেই স্বয়ং ছাত্রলীগ সভাপতির হলে ‘বেপরোয়া’ হয়ে উঠেছে নেতাকর্মীরা। এমন অবস্থায় আওয়ামীলীগ নেতাদের চেষ্টার পরেও ছাত্রলীগ কী সংস্কারের ‘অযোগ্য’ হয়ে পড়েছে কিনা প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।
সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদকে হত্যা করার ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে ছাত্রলীগ আর সন্ত্রাসী কর্যক্রম করবে বলে তাদের ধারণা জন্মেছিলো। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগকে জনগণের আস্থা অর্জন করার নির্দেশ দান ও আওয়ামীগের সাধারণ সম্পাদকের বারবার হুশিয়ার স্বত্তেও একের পর এক অঘটনের জন্ম দিচ্ছে সংগঠনটি। হল সূত্র জানায়, ৪ শিক্ষার্থীকে মারধরে নেতৃত্ব দেয়া আনোয়ার হোসেন ও আমির হামজা আল নাহিয়ান খান জয়ের অনুসারী। তবে ঘটনার জয় হলে ছিলেন না। তিনি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন প্রচারণার কাজে হলের বাইরে ছিলেন।
এদিকে মঙ্গলবারের শিক্ষার্থী নির্যাতনে অংশ নেয়া ছাত্রলীগ নেতারা নানান অপকর্ম, অপতৎপরতার সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে জানা গেছে। বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ, গোয়েন্দা ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে ক্যাম্পাসে সব ধরণের হেন কাজে ছাত্রলীগের এসব পদপ্রত্যাশী অংশ নিয়েছেন। বিভিন্ন অভিযোগে এরআগে তাদের কাউকে বিশ^বিদ্যালয়, কাউকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
হামলায় অংশ নেয়া ছাত্রলীগের সহ সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমির হামজা আল নাহিয়ান খান জয়ের অনুসারী। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০১৮ সালের ২৩ আমির হামজা ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল এলাকায় সেবা ফার্মেসী দোকানে হামলা চালিয়ে শুভ নামের এক কর্মচারীর মাথা ফাটিয়ে দেন। এরপর ঢাবি ছাত্রলীগ তাকে সংগঠন থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের সুপারিশ করে। কিন্তু সংগঠনটির তৎকালীন সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের আশ্রয়ে তিনি ছাত্রলীগে পুনর্বাসিত হন। এরপর ২০১৯ সালে ৬ জানুয়ারি ছিনতাইয়ের অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতারাই তাকে হল থেকে বের করে দেন। হল শাখা ছাত্রলীগ কমিটির নেতারা জানান, আমির হামজা অনেক দিন ধরে হলে মাদক ব্যবসা ও মাদক সেবন, অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় এবং ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকার বিভিন্ন দোকান থেকে চাঁদা আদায়সহ নানা অপরাধ করে আসছিলেন। তার এই অপকর্মের কারণে হল এবং ছাত্রলীগের বদনাম হচ্ছে। তাই আমরা তাকে হল থেকে বের করে দিয়েছিলাম। এছাড়াও রাজধানীর বাটা সিগন্যালের সামনে কোটা আন্দোলনের ৩ নেতাকে মারধরের অভিযোগ মিলেছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া ৭ কলেজের অধিভুক্তি বাতিল চেয়ে ঢাবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অংশ নেয়া বেশ কয়েকজন ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে।
নির্যাতনকারী আরেক নেতা আনোয়ার হোসেন। ২০১৮ সালের জুলাই মাসে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও সমর্থক শিক্ষকদের ওপর হামলাকারী ছাত্রলীগের ১৪ জন নেতাকর্মীকে চিহ্নিত করে দিয়েছিল শিক্ষার্থীরা। এদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন আনোয়ার হোসেন। সেদিন আনোয়ার হোসেন শহীদ মিনার এলাকায় কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করে। এছাড়াও তাকে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময় মারামারিতে প্রথম সারিতে দেখা যায় বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
হল ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহফুজুর রহমান ইমন ঢাবি ছাত্রলীগের মেয়াদউত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের অনুসারী। বর্তমানে হলটিতে ছাত্রলীগের সর্বোচ্চ পদপ্রত্যাশী ইমন ২০১৯ সালের ২২ ডিসেম্বর ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরের উপর হামলা চালায়। পরে হামলার কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।
মারধরে অংশ নেয়া হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও হল সংসদের ভিপি সাইফুল্লাহ আব্বাসী অনন্ত ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। ছাত্রলীগ প্যানেল থেকে হল সংসদে নির্বাচন করে ২৮ বছর পর সচল হওয়া হল সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন তিনি। ডাকসু নির্বাচনের পর ক্যাম্পাসের চিত্র পাল্টে যাওয়ার কথা থাকলেও বর্তমানে হলগুলো অবস্থা হয়েছে ‘যেই ছাত্রলীগ-সেই হল সংসদ’। হল সংসদে নির্বাচিত হওয়ার পর আব্বাসী শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করার পরিবর্তে ত্রাস হয়ে উঠেন। হল সংসদের ক্ষমতা ব্যবহার তরে অনৈতিক ও নীতি বহির্ভূত কাজে জড়ান তিনি। ছাত্রলীগের একটি সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ি, চাহিদা মতো টাকা না দেয়ায় হলে কর্মচারীর নিয়োগ আটকে দেন এ ছাত্রলীগ নেতা।##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।