Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বেঙ্গালুরুতে কথিত ‘বাংলাদেশীদের’ বস্তি গুড়িয়ে দেয়ার পর দেখা গেলো সবাই ভারতীয়

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ জানুয়ারি, ২০২০, ৬:৪৫ পিএম

উত্তর বেঙ্গালুরু কারিয়ামানা আগরাহারা এলাকায় অবৈধ বাংলাদেশী অভিবাসীদের হাজার হাজার বস্তি রয়েছে বলে বিজেপি এমএলএ অরবিন্দ লিম্বাভালি তার টুইটারে একটি ভিডিও পোস্ট করার পর গত রোববার কর্তৃপক্ষের লোকজন বুলডোজার নিয়ে এসে ওইসব বস্তি গুড়িয়ে দিয়ে হাজার হাজার মানুষকে গৃহহীন করে ফেলে। তিন দিন আগেই ওই এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু বস্তি গুড়িয়ে দেয়ার পর দেখা গেলো সেখানকার অধিবাসীদের কেউ বাংলাদেশ থেকে আসেনি। এরা সবাই ভারতীয়- আসাম, ত্রিপুরা, এমন কি উত্তর কর্নাটক থেকেও অনেকে এসেছে। তাদেরকে জমি খালি করে দিতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে ব্রুহাত বেঙ্গুালুরু মহানগরা পালাইক (বিবিএমপি) জানায় যে, এসব বস্তি অবৈধভাবে গড়ে তুলেছে ‘বাংলাদেশী’ অভিবাসীরা। এতে আশপাশের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছিল। এ ব্যাপার নগর কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু অভিযোগ পায়। এর আগে ১১ জানুয়ারি বেঙ্গালুরু পুলিশের এক নোটিশে বলা হয় যে কোন পূর্ব অনুমতি ছাড়াই এসব জমিতে বস্তি গড়ে তোলা হয়েছে। পুলিশ দাবি করে যে, এসব বস্তিঘরে অবৈধ ‘বাংলাদেশীরা’ বাস করে। অধিবাসীদের জায়গা খালি করে সব কিছু সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয় পুলিশ। কিন্তু উচ্ছেদের পর হোয়াইটফিল্ড পুলিশের ডিসি এমএন অনুচেত বলেন যে, তিনি জানেন না পুলিশ বস্তির লোকজনকে চলে যেতে বলেছে। তিনি বলেন, আমরা কাউকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেইনি। আমরা শুধু বলেছি সেখানে যারা বাস করে তাদের বিস্তারিত পরিচয় জানার জন্য।

ওই এলাকার এমএলএ লিম্বাভালির এক টুইটের পরপরই বস্তি উচ্ছেদ করা হয়। তিনি আকাশ থেকে তোলা বস্তির কিছু ভিডিও চিত্র তার টুইটারে পোস্ট করেন। এর পরপরই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বস্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়। ১৮ জানুয়ারি পুলিশকে লেখা এক পত্রে বিবিএমপি বস্তি উচ্ছেদকালে সুরক্ষা প্রদানের অনুরোধ করে। কিন্তু উচ্ছেদের পর কথিত ‘অবৈধ বাংলাদেশী অভিবাসী’ দের পরিচয় যাচাই করে দেখা গেলো তাদের বৈধ পরিচয়পত্র রয়েছে। তাদের বেশিরভাগ এসেছে উত্তরপূর্ব ভারত ও উত্তর কর্নাটক থেকে।

আসাম থেকে আসা এক অভিবাসী আহাদুর রহমান বলেন, ‘শনিবার দুপুরে বস্তিটি ভাঙ্গা হয়। সাদা পোশাকে পুলিশ এসে জায়গা খালি করতে বলে। তাদের সঙ্গে পোশাকধারী পুলিশ ছিলো। আমরা বাংলাদেশ থেকে আসিনি। আমরা যে ভারতীয় সেই প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। আমরা এখানে এসেছি জীবিকার সন্ধানে, কাজ করার জন্য।’ কর্নাটক থেকে আসা কারান্না নামে একজন বলেন, কি হলো বুঝতে পারছি না। আমাদের থাকার কোন জায়গা নেই। আমাদেরকে এখান থেকে চলে যেতে বলা হয়েছে। এই বস্তির অধিবাসীদের বৈধ পরিচয়পত্র রয়েছে। এর মধ্যে আধার কার্ড, পান ও ভোটার আইডিও রয়েছে। এছাড়া যারা আসাম থেকে এসেছে তাদের নাম এনআরসি-তে রয়েছে।’ ত্রিপুরা থেকে আসা আরেক অধিবাসী কালারাম ত্রিপুরা বলেন, ‘আমরা সিকিউরিটি স্টাফের কাজ করে মাসে ১২-১৫ হাজার রুপি আয় করি। আমাদেরকে কিছু টাকা বাড়িতেও পাঠাতে হয়। একটি এপার্টমেন্ট ভাড়া নিতে গেলে ২০ হাজার রুপি দিতে হয়। সেখানে কিভাবে যাবো আমরা।’ সূত্র: এসএএম।



 

Show all comments
  • ash ২৩ জানুয়ারি, ২০২০, ৭:১৬ এএম says : 0
    ETAI PROMAN KORE OI FOKIRER DESHE BANGLADESHI THAKE NA !
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ