Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাজকীয় দায়িত্ব ত্যাগ ছাড়া উপায় ছিল না

নিজ দাতব্য প্রতিষ্ঠানের জন্য তহবিল সংগ্রহ অনুষ্ঠানে প্রিন্স হ্যারি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

ব্রিটেনের রাজসিংহাসনের দাবিদারদের একজন প্রিন্স হ্যারি জানিয়েছেন, তিনি ‘বিশ্বাসের ওপর ভর’ করে রাজপরিবারের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এছাড়া তার ‘সত্যি আর কোন উপায় ছিল না’। গত রোববার সন্ধ্যায় এক অনুষ্ঠানে প্রিন্স হ্যারি বলেন, তিনি এবং মেগান রানি ও রাজপরিবারের প্রতি দায়িত্ব পালন করে যেতে চেয়েছিলেন, কিন্তু সেজন্য কোন সরকারি অর্থ বরাদ্দ নিতে চাননি। ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সেটা সম্ভব ছিল না’।

সাবেক অভিনেত্রী স্ত্রী মেগানকে নিয়ে রাজকীয় উপাধি ও দায়িত্ব ত্যাগ করার ঘোষণা দেবার পর এই প্রথম কোন বক্তৃতা দিলেন প্রিন্স হ্যারি। কিন্তু তিনি জানিয়েছেন, তিনি পরিষ্কার করে বলতে চান যে, তিনি এবং মেগান ‘রাজপরিবার থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন না’।
‘যুক্তরাজ্য আমার বাড়ি এবং এই জায়গাটাকে আমি সবচেয়ে ভালোবাসি’-এই অনুভ‚তি কখনো বদলাবে না’।

এর আগে এক যৌথ বিবৃতিতে প্রিন্স হ্যারি এবং তার স্ত্রী মেগান জানান, তারা রাজপরিবারের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিচ্ছেন এবং বলেছেন, তারা আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হবার জন্য কাজ করতে চান। আফ্রিকার এইচআইভি আক্রান্ত শিশুদের জন্য প্রিন্স হ্যারির দাতব্য প্রতিষ্ঠান সেন্টেবালির এক তহবিল সংগ্রহের অনুষ্ঠানে লন্ডনে কথা বলেন তিনি।

হ্যারি বলেন, আমি চাই আপনারা আমার কাছ থেকে সত্যিটা জানুন। যতটুকু আমি বলতে পারি- রাজপুত্র হিসেবে নয়, ডিউক হিসেবে নয়, শুধু হ্যারি হিসেবেই, আমি আপনাদেরই একজন, গত ৩৫ বছর ধরে আপনাদের সামনেই বেড়ে উঠেছি। ব্রিটেন আমার বাড়ি এবং ভালোবাসার জায়গা। বেড়ে উঠায় এ সময়টাতে আমি আপনাদের সহযোগিতা অনুভব করেছি। আপনারা খোলামনে মেগানকে স্বাগত জানিয়েছেন, আমি আমার সারাজীবনের কাক্সিক্ষত ভালোবাসা খুঁজে পেয়েছি। সেই নারীকেই আমি স্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছি যে আমার মতো একই মূল্যবোধ ধারণ করে। সে একই নারী আমি যার প্রেমে পেয়েছি। দেশের পতাকা সমুন্নত রাখতে এবং দেশের দায়িত্ব পালন করতে আমরা সবকিছু করি। যখন আমি মেগান বিয়ে করেছিলাম, আমরা রোমাঞ্চিত ছিলাম, আশাবাদী ছিলাম, আমরা সেবা করার জন্যই এখানে ছিলাম। এসব কারণই আমার মধ্যে বিশাল হতাশা নিয়ে এসেছে যার কারণে আজ এই পরিস্থিতি (রাজপরিবার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত) তৈরি হয়েছে। সরে যাওয়ার যে সিদ্ধান্ত আমি এবং আমার স্ত্রী নিয়েছি, তা হালকাভাবে নিইনি। বহু বছরের প্রতিক‚ল অবস্থার মুখোমুখি হওয়ার পর কয়েকমাস ধরে আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। জানি, আমি সবকিছু সঠিক করতে পারি না, কিন্তু এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে আমার কাছে আর কোনো ‘অপশন’ ছিল না। জনগণের অর্থায়ন ছাড়া আমরা রানী, কমনওয়েলথ, আমার সামরিক প্রতিষ্ঠানের সেবা করতে চেয়েছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেটি সম্ভব নয়।

অনুষ্ঠানে রাজপরিবার ছেড়ে এখন শান্তিতে বসবাস করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন হ্যারি। তিনি দাতব্য প্রতিষ্ঠান ও সামরিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রাখারও অঙ্গীকার করেছেন। বক্তৃতা দেয়ার সময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন হ্যারি। এসময় তিনি মা ডায়ানার কথা দুইবার উচ্চারণ করেন।

গত শনিবার রানি, রাজপরিবারের ঊর্ধ্বতন সদস্যগণ এবং এই জুটির মধ্যে এক আলোচনায় হ্যারি ও মেগান একমত হয়েছেন, এখন থেকে তারা আর আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিটিশ রাজপরিবারের প্রতিনিধিত্ব করবেন না। আসন্ন বসন্ত থেকে তাদের নামের আগে রাজউপাধি আর ব্যবহৃত হবে না এবং আনুষ্ঠানিক সামরিক দায়িত্বসহ তাদের রাজকীয় সব দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হবে। যদিও, বাকিংহাম প্যালেস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রাজপরিবার হ্যারি ও মেগানের জন্য নিজস্ব পৃষ্ঠপোষকতা এবং তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা চালিয়ে যাবে।

এদিকে, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এ যুগলের ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন। পুত্র আর্চিকে নিয়ে ভ্যানকুভার দ্বীপে ছয় সপ্তাহের ছুটি কাটানোর পর হ্যারি এবং মেগান জানিয়েছেন, তারা যুক্তরাজ্য এবং উত্তর আমেরিকায় তাদের সময় ভাগাভাগি করে থাকতে চান। মেগান মার্কেল বর্তমানে ছেলেকে নিয়ে কানাডার ওয়েস্ট কোস্টে রয়েছেন। এর আগে এ মাসের শুরুতে কয়েকদিনের জন্য যুক্তরাজ্যে এসেছিলেন তিনি।

গত ৮ ডিসেম্বর হ্যারি এবং মেগান ঘোষণা করেন যে, তারা রাজপরিবারের সামনের কাতারের দায়িত্ব থেকে অবসর নিতে চান। তারা এই ঘোষণা দিয়েছিলেন রানি বা রাজপরিবারের কোন সদস্যের সঙ্গে আগাম আলোচনা ছাড়াই। এজন্যেই এ ঘটনা এত তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি করে। সূত্র : বিবিসি।



 

Show all comments
  • Faridul Islam ২১ জানুয়ারি, ২০২০, ১:৩৩ এএম says : 0
    Awesome
    Total Reply(0) Reply
  • Md Akhter Hossain Khan ২১ জানুয়ারি, ২০২০, ১:৩৩ এএম says : 0
    Great couple in Royal family members like to do as public workers Congratulations
    Total Reply(0) Reply
  • Md Sadik Khan ২১ জানুয়ারি, ২০২০, ১:৩৩ এএম says : 0
    That's called real Prince
    Total Reply(0) Reply
  • Faija Khan ২১ জানুয়ারি, ২০২০, ১:৩৩ এএম says : 0
    সঠিক সিদ্ধান্ত।
    Total Reply(0) Reply
  • Alamgir Hussain Sumon ২১ জানুয়ারি, ২০২০, ১:৩৪ এএম says : 0
    আমাদের দেশে কেউ যদি খমতায় একবার আসে ছাড়া ছাড়ি নাই আর তারা এতো সুযোগ সুবিধা ভোগ করার পরও তা স্বেস্হায় ছেড়ে চলে যাচ্ছে । ভালো একটা উদাহরণ
    Total Reply(0) Reply
  • MD Shamim Mia ২১ জানুয়ারি, ২০২০, ১:৩৪ এএম says : 0
    এখান থেকে বাংলাদেশের কিছু কিছু লোকদের শিক্ষা নেওয়া উচিত
    Total Reply(0) Reply
  • honesty ২১ জানুয়ারি, ২০২০, ৭:৩১ এএম says : 0
    তৃতীয় বিশ্বের দেশ বাংলাদেশ। একজন বাংলাদেশের নেতার পক্ষে প্রথম বিশ্বের দেশের নেতাদের অনুসরণ করা কঠিন হবে যদি না আমাদের নেতারা বাংলাদেশকে ভালোবাসেন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্রিটেন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ