নতুন সরকার গঠন এবং অর্থনৈতিক সঙ্কট নিরসনের দাবিতে বৈরুতে সহিংস বিক্ষোভ চলছে গত দুদিন ধরে। গতকাল রোববার রাজধানী বৈরুতসহ বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। গত দুই দিনে প্রায় ৫০০ মানুষ আহত হয়েছেন। প্রতিবাদকারীদের রুখতে মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী।
গতকাল রোববার দিনভর বিক্ষোভের পর রাতেও রাজপথ আগলে রাখে আন্দোলনকারীরা। তারা বিভিন্ন স্থানে রাজপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এতে বাধা দিলে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ শুরু হয়।
এ পর্যায়ে জলকামান এবং রাবার বুলেট ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এসময় তাদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ বাধে। নিরাপত্তা বাহিনীর উদ্দেশ্যে পাথর নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীরা। একপর্যায়ে গুলি ছোড়ে পুলিশ। এতে আহত হয় বেশ কয়েকজন। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এসময় বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়।
তারা বলছে, আমরা যখন এখানে আসি, তখনো সহিংসতা চলছিলো। সরকারি এজেন্সিগুলো এর জন্য পুরোপুরি দায়ী। কারণ আন্দোলনকারীরা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ শুরু করলেও পুলিশ তাতে বাধা দেয়।
এটা পরিষ্কার যে, নিরাপত্তা বাহিনীই সহিংসতা সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু কোন অবস্থাতেই আমরা পিছু হটবো না। দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে।
পরে ব্যাপক তান্ডব শুরু করে বিক্ষোভকারীরা। ভাঙচুর করে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি-বেসরকারি ভবন। বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগও করা হয়। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অবস্থার অবনতি হতে থাকলে বৈরুতে সেনা সদস্য মোতায়েন করা হয়। নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার আগ পর্যন্ত তারা সেখানে মোতায়েন থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
রবিবার দিনের শুরুতেই রাজধানী বৈরুতসহ বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীরা জড়ো হতে শুরু করে। তারা সরকারবিরোধী নানা ¯েøাগান দেওয়ার পাশাপাশি অবিলম্বে দাবী পূরণের আহ্বান জানায়। এসময় বিভিন্ন স্থানে ব্যারিগেট তৈরী করে নিরাপত্তা বাহিনী সদস্যরা।
তারা বলছে, সাধারণ মানুষ আগুনের মধ্যে বাস করছে। তাই তারা একসঙ্গে আজ রাস্তায় নেমে এসেছে। দাবী পূরণ হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রতিদিনই এ বিক্ষোভ অব্যাহত থাকবে। আমরা মোটেও ভীত নই। দিন দিন সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। আমরা কখনোই আমাদের বন্ধুদের একা ফেলে আন্দোলন ছেড়ে যাবো না।
গত বছরের অক্টোবরে লেবাননে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পদত্যাগ করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী সাদ আল হারিরি। কিন্তু কয়েক মাস পেরিয়ে গেলেও রাজনৈতিক অচলাবস্থার কারণে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এরপর অর্থনৈতিক মন্দা এবং নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের দাবিতে সহিংস আন্দোলন শুরু করে দেশটির সাধারণ মানুষ।