মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইরাকে ইরানের শীর্ষ জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার উদ্দেশ্যে চালানো বিমান হামলা এবং মধ্যপ্রাচ্যে অতিরিক্ত তিন হাজার সেনা পাঠানোর প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের বড় শহরগুলোতে বিক্ষোভ হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে যুদ্ধপরিস্থি’তি সৃষ্টির জন্য দায়ী করেছেন বিক্ষোভকারীরা। ওয়াশিংটনসহ বেশ কয়েকটি বড় শহরের বিক্ষোভ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে মধ্যপ্রাচ্য ছাড়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ৮০টি স্থানে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছে হাজার হাজার মানুষ। খবরে বলা হয়, ইরানের সাথে আমেরিকার চলমান উত্তেজনাকে আর সামনে বাড়তে দিতে চান না ব্রিটেনের প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির সিনিয়র আইনপ্রণেতারা। লন্ডনে ডজনখানেক বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন তারা। লেবার পার্টির শ্যাডো চ্যান্সেলর জন ম্যাকডনেল টুইটবার্তায় জানান, ২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধ থেকে যে অভিজ্ঞতা পেয়েছি আমরা, এখন শান্তির জন্যে আগেভাগেই দৃঢ় অবস্থানে দাঁড়াতে চাই আমরা। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বোরিস জনসনের সরকারি বাসভবনের সামনে বিক্ষোভের আয়োজন করে দ্য স্টপ দ্য ওয়ার কোয়ালিশন। এর আহ্বায়ক লিন্ডসে জার্মান বলেন, সোলাইমানিকে হত্যা সত্যিকার অর্থেই ট্রাম্পের অ্যাক্ট অব ওয়ার। জার্মান আরো বলেন, ইরানের সাথে নিউক্লিয়ার চুক্তি ভেস্তে যাওয়ার পর ট্রাম্প যুদ্ধ বাঁধানোর দিকে আগাচ্ছেন। যদি এ উদ্দেশ্য সাধনে তিনি সফল হন, তবে মধ্যপ্রাচ্যে এযাবতকালের ভয়াবহতম যুদ্ধ দেখতে হবে আমাদের। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে গত শুক্রবার ইরাকের বাগদাদ বিমানবন্দরে রকেট হামলা চালিয়ে ইরানি সামরিক কমান্ডার জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা করা হয়। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, ৬২ বছর বয়সী সোলাইমানি মার্কিন কূটনীতিক ও নাগরিকদের ওপর শিগগিরই মারাত্মক হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছিলেন। ইরান ওই হামলার চরম প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দেওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্যে অতিরিক্ত তিন হাজার সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দেয় ট্রাম্প প্রশাসন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এসব সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শনিবার বেশ কয়েকটি বিক্ষোভের আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরোধী জোট অ্যাক্ট নাউ টু স্টপ ওয়ার অ্যান্ড এন্ড রেসিজম। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় আরও বেশ কয়েকটি সংস্থা। বিক্ষোভ হয়েছে হোয়াইট হাউসের বাইরে, নিউ ইয়র্কের টাইমস স্কয়ার, শিকাগোর ট্রাম্প টাওয়ারের বাইরেও। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে জার্মানির বার্লিন শহরের ব্রান্ডেনবার্গ গেটেও বিক্ষোভ হয়েছে। সেøাগান উঠেছে ‘ন্যায়বিচার নেই, শান্তি নেই, যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্য ছাড়ো’। একটি বিক্ষোভে যোগ দেন ৬৬ বছর বয়সী স্যাম ক্রুক। তার হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘মনোযোগ ঘোরানোর দরকার? যুদ্ধ শুরু করুন’। ইউক্রেন কেলেঙ্কারিতে প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংসিত হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা শুরু করায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘এই দেশ এখন এমন একজনের হাতে যিনি মানসিকভাবে সুস্থ নন, আমার মনে হয় সেটা ডোনাল্ড ট্রাম্পই। তার মাথা এখন ঠিক নেই।’ ওয়াশিংটনের বিক্ষোভে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পেন্টাগনের নথি ফাঁস করে দেওয়া হুইসেলব্লোয়ার ড্যানিয়েল এলসবার্গ ও অভিনেত্রী জেন ফন্ডে। ফন্ডে বলেন, ‘এখানে উপস্থি’ত তরুণদের বলছি, তোমাদের জন্মের পর যতগুলো যুদ্ধ হয়েছে তার সবই হয়েছে তেলের জন্য। তেলের কারণে আমরা আর মানুষের প্রাণ ও পরিবেশ নষ্ট করতে দিতে পারি না।’ মেরিল্যান্ডের বিক্ষোভে যোগ দেওয়া স্টিভ লেন বলেন, ‘মিছিল করা যথেষ্ট নয়, কিন্তু আমরা অন্তত বাইরে বের হয়ে কিছু বলতে পারছি...আর যথেষ্ট সংখ্যক মানুষ যদি একই কাজ করে, তাহলে ট্রাম্পকে শুনতে হবে।’ মার্কিন হামলায় ইরানের শীর্ষস্থানীয় জেনারেল কাসেম সোলাইমানি নিহতের ঘটনায় কেবল ইরাক আর ইরানেই বিক্ষোভ চলছে তা নয়। খোদ মার্কিন মুলুকেই বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে শান্তিপ্রিয় মানুষ। নিউ ইয়র্ক টাইমস স্কয়ারে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। শিকাগোতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। শত শত মানুষর ট্রাম্প টাওয়ারের সামনে জড়ো হয়, বিক্ষোভ দেখায় তারা। ওদিকে ফিলাডেলফিয়াতেও ৫ শতাধিক মানুষ বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউজের বাইরে এক বিক্ষোভ র্যালিতে যোগ দেন অভিনেত্রী জেন ফন্ডা। শিকাগোতে ট্রাম্প টাওয়ারের সামনে দুই শতাধিক মানুষ জড়ো হন। তারা শ্লোগানে মুখরিত করে তোলেন এলাকা। তারা বলতে থাকেন, নো জাস্টিস, নো পিস, ইউএস আউট অব দ্য মিডল ইস্ট। তাদের হাতে প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল স্টপ বম্বিং ইরাক আর ইউএস ট্রুপস আউট অব ইরাক। আমেরিকাভিত্তিক যুদ্ধবিরোধী কোয়ালিশন অ্যাক্ট নাউ টু স্টপ ওয়ার অ্যান্ড রেসিজম (অ্যান্সার) জানিয়েছেন, তারা এবং অন্যান্য গ্রুপগুলো বিক্ষোভ প্রদর্শন অব্যাহত রাখবে। তাদের কর্মসূচি হবে মধ্যপ্রাচ্য নতুন করে যুদ্ধ শুরুকে বাধা দেওয়া এবং ওই অঞ্চল থেকে সকল মার্কিন সেনাকে ফিরিয়ে আনা। ইতোমধ্যে ৭০টিরও বেশি সংখ্যাক পরিকল্পিতভাবে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়েছে। তাদের সাথে যোগ দিয়েছে অন্যান্য যুদ্ধবিরোধী সংগঠন। ডেইলি পোস্ট, রয়টার্স, বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।