Inqilab Logo

সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

প্রতিশোধের ঘোষণা ইরানের

হামলার আশঙ্কায় মার্কিন নাগরিকদের ইরাক ছাড়ার নির্দেশ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০০ এএম

ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ইরানের প্রক্সিযুদ্ধ চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। এর মধ্যেই এবার ইরাকের রাজধানী বাগদাদে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত হলেন ইরান সেনাবাহিনীর এলিট ফোর্স ‘কুদস’-এর প্রধান জেনারেল কাসিম সোলেইমানি। একই সঙ্গে নিহত হয়েছেন ইরাকের প্যারামিলিটারির সহকারী প্রধান আবু মাহদি আল মুহান্দিসসহ ৮ জন। এ ঘটনায় আমেরিকার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিশোধ নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। এমন পরিস্থিতিতে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে। এর ফলে যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে মার্কিন প্রতিরোধ বাহিনীর বিকাশ এবং ইরানের প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে মেজর জেনারেল সোলেইমানিকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবেই বিবেচনা করা হতো। ইসরাইলের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ এবং তারপর বারাক ওবামা পর্যন্ত তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেও পরিণতির কথা ভেবে পরে পিছিয়ে এসেছিলেন। এ কারণে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘খড়ের গাদায় আগুন লাগিয়েছেন’ বলে মন্তব্য করেছেন আসন্ন নির্বাচনের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী প্রবীণ রাজনীতিবিদ জো বাইডেন। সোলেইমানি নিহত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক দুই বারের ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বিবৃতিতে বলেন, মার্কিন প্রশাসন বিবৃতিতে বলেছে, ‘এই হামলার লক্ষ্য ইরানের ভবিষ্যতের আক্রমণ প্রতিরোধ করা। কিন্তু আমি বলব, এই পদক্ষেপটি অবশ্যই প্রায় বিপরীত প্রভাব ফেলবে।’ তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সবেমাত্র খড়ের গাদায় শক্তিশালী একটি বিস্ফোরক (ডিনামাইট) নিক্ষেপ করেছেন। এতে করে তিনি আমেরিকান জনগণের কৌশল এবং আমাদের সেনা ও দূতাবাসের কর্মীদের সুরক্ষিত রাখার পরিকল্পনা বাধাগ্রস্ত করেছেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা হয়তো মধ্যপ্রাচ্যে নতুন বড় ধরনের যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে চলে গেলাম।’

এমন সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই হত্যাকান্ড ঘটালেন যখন কিছুদিন আগেই তার বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট অনুমোদন করেছে মার্কিন কংগ্রেস এবং এক বছরের কম সময়ের মধ্যেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ফলে বিরোধী ডেমোক্র্যাটরা ইতোমধ্যেই এ সিদ্ধান্তের পেছনে রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি দেখতে শুরু করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের সাংবাদিক জুলিয়ান বার্গার লিখেছেন, নভেম্বরে নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে সোলেইমানিকে হত্যার এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি মনে করছেন, ওসামা বিন লাদেনকে হত্যার যে ঘটনা বারাক ওবামার দ্বিতীয় দফার নির্বাচনের প্রচারণায় প্রধান একটি বিষয় হয়ে উঠেছিল, ট্রাম্প হয়তো সেরকমই কিছু করতে চেয়েছেন।

বিবিসির মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সম্পাদক জেরেমি বোয়েন বলেন, অনেকদিন ধরে অপেক্ষা করে আমেরিকানরা এখন কেন এই ‘ট্রিগার’ টিপলো, তার কারণ হয়তো প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মনে করেছেন, এই হত্যাকান্ডের যে ঝুঁকির মাত্রা তার চেয়ে সুবিধার পাল্লা ভারি। তিনি বলেন, ‘ক‚টকৌশল বা পরিকল্পনাকারী হিসেবে সোলেইমানি ছিলেন খুবই ক্ষুরধার। সুতরাং তাকে কখনো হত্যা করা হলে, কী করতে হবে তেমন পরিকল্পনাও হয়তো তিনিই করে গেছেন। ইরান যে তার হত্যার একটা জবাব দেবে, তা নিশ্চিত। সোলেইমানি এতদিন ধরে দেশের বাইরে ইরানের যে প্রভাব প্রতিপত্তি তৈরি করেছেন, তা টিকিয়ে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা ইরান করবে।’

ইরান এবং আমেরিকার মধ্যে একটা যুদ্ধ লেগে যেতে পারে, এই শঙ্কা-সন্দেহ গত বছর খানেক ধরে চলছিল, কিন্তু সেই সাথে যুদ্ধ এড়ানোর একটা চেষ্টাও পাশাপাশি চলছিল। ফ্রান্স এই দুই শত্রæর মধ্যে একটা মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করছিল। কিন্তু বিবিসির প্রধান আন্তর্জাতিক সংবাদদাতা লিস ডুসেট মনে করছেন, সোলেইমানি এবং ইরাকি একটি শিয়া মিলিশিয়া গোষ্ঠীর (পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্স) প্রধান আবু মাহদি আল মোহান্দিসকে হত্যার পর যুদ্ধ এড়ানোর সেই চেষ্টা ধসে পড়বে সন্দেহ নেই। কিন্তু কীভাবে ইরান প্রতিশোধ নেবে - পরিষ্কার করে অনুমান করা শক্ত। লিস ডুসেট মনে করেন, ‘বদলা নেয়ার নানা রাস্তা এবং উপায় ইরানের রয়েছে।’
ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সাবেক একজন সদস্য কার্সটেন ফনটেনরোজকে উদ্ধৃত করে গার্ডিয়ান পত্রিকা লিখছে, ইরানের এই বদলা হয়তো দীর্ঘমেয়াদী এবং নানামুখী হবে। তিনি বলছেন, ‘ইরাকে ইরান সমর্থিত মিলিশিয়ারা হয়ত তাৎক্ষণিকভাবে কিছু হামলা চালাবে, কিন্তু ইরান হয়তো উপযুক্ত সময় এবং স্থানের জন্য অপেক্ষা করবে।’ তিনি বলছেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় এমনকি পশ্চিম আফ্রিকা বা দক্ষিণ আমেরিকাতেও মার্কিন স্বার্থ এবং নাগরিকরা হামলার মুখে পড়তে পারে এবং এই ঘটনা বছরের পর বছর ধরে চলতে পারে। ইরান এমন একটি বার্তা দিতে চাইবে যে, আমেরিকানরা কোথাও নিরাপদ নয়।’

ইরানের মদদপুষ্ট ইরাকি জঙ্গিগোষ্ঠী কায়তাব হিজবুল্লাহর সংগঠকও ছিলেন মুহান্দিস। এই জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গেই গত কয়েক দিন ধরে লড়াই চলছিল আমেরিকার। অভিযোগ, গত সপ্তাহে বাগদাদে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক ঘাটিতে এক মার্কিন কন্ট্রাক্টরকে হত্যা করেছিল ওই জঙ্গিগোষ্ঠী। তারপরেই রোববার ইরাকে অবস্থিত কায়তাব ক্যাম্পে বিমান হামলা চালায় মার্কিন বিমানবাহিনী। তাতে বেশ কিছু কায়তাব শীর্ষ নেতার মৃত্যুর কথা স্বীকার করে জঙ্গি গোষ্ঠীটি। জবাবে বাগদাদে মার্কিন দূতাবাসে আক্রমণ চালায় কায়তাব। সেখানে ভাঙচুর করা হয় এবং আগুন ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা হয়। সেই দিনই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন এর বদলা নেয়া হবে। রাতারাতি বাগদাদে ৭৫০ জন অতিরিক্ত সৈন্য পাঠায় অ্যামেরিকা। ইরান এবং অ্যামেরিকার মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। বদলা নিতে গিয়ে ট্রাম্প যে সরাসরি ইরানের জেনারেলের উপর হামলা করবেন, এতটা আশা করেননি ক‚টনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা। তাদের বক্তব্য, এর ফলে দুই দেশের মধ্যে আর প্রক্সিযুদ্ধ নয়, সরাসরি যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হল।

ইরানের সেনাবাহিনীর নিজস্ব সংবাদমাধ্যম গতকাল জানায়, এদিন আচমকাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো সেকশন বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে। জ্বলতে থাকা কার্গোর কয়েকটি ছবিও প্রকাশ করে তারা। তবে বিস্ফোরণে হতাহতের কোনও খবর তারা প্রাথমিকভাবে জানায়নি। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই পেন্টাগন জানায়, তাদের বিমান হামলায় ইরানের জেনারেলের মৃত্যু হয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যে ইরানের সেনাও খবরের সত্যতা স্বীকার করে নেয়। বলা হয়, বিমানবন্দর থেকে বেরোনোর সময় সেনাবাহিনীর জেনারেলের গাড়ির ওপর বিমান হামলা চলে। তাতেই নিহত হয়েছেন তিনি। ইরানের সেনা জানিয়েছে, এর ফলে আমেরিকাকে কঠিন দাম দিতে হবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশেই এ হামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন। ভবিষ্যতে ইরানকে যেকোনো হামলার পরিকল্পনা থেকে বিরত রাখতেই সোলেইমানিকে হত্যা করা হয়েছে বলেও এক বিবৃতিতে জানিয়েছে সংস্থাটি। বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে অবস্থান করা মার্কিন নাগরিকদের রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।

পেন্টাগন জানিয়েছে, বাংলাদেশ সময় গতকাল ভোররাতে ওই বিমান হানা চালানো হয় বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। ওই সময় বিমানবন্দরের কাছে দু’টি গাড়ির কনভয়ের একটিতে ছিলেন সোলেমানি ও আল-মুহান্দিস। অন্য গাড়িটিতে ছিলেন তাদের সঙ্গীরা। পরে ইরাকের শিয়া জঙ্গি সংগঠনগুলি ওই ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে দেয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বিমান থেকে ফেলা বোমায় গাড়িটি পুড়ে গিয়েছে। সেই জায়গাটায় ছাইয়ের পাহাড়। সেই ছাইয়ের নীচেই দেখা গিয়েছে সোলেমানির রক্তাক্ত দেহ। তার হাত। আঙুলে রয়েছে সেই লাল আংটি, যা এর আগেও সোলেমানির বিভিন্ন ছবিতে দেখা গিয়েছে।
তবে মার্কিন কংগ্রেস এই আক্রমণকে সমর্থন করেনি। কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির প্রধান এলিওট এনজেল এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘কংগ্রেসকে অবগতকরণ কিংবা কোনো আলোচনা ছাড়াই সোলেইমানির বিরুদ্ধে হামলা চালানো হয়েছে।’ কংগ্রেসকে না জানিয়ে এমনতর গুরুতর পদক্ষেপ সরকারের কংগ্রেস অবমাননার শামিল বলেও মন্তব্য করেন এনজেল। ডেমোক্র্যাট নেতা ক্রিস মারফি টুইট করে বলেন, ‘সোলেইমানি আমেরিকার শত্রু, এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু যেভাবে কংগ্রেসে আলোচনা না করেই ট্রাম্প বাগদাদে ঢুকে তাকে হত্যা করলেন, তাতে সমস্যা আরও জটিল হল। যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হল। এটা মেনে নেয়া যায় না।’
এই ঘটনার পরে ইরানও যে চুপ করে বসে থাকবে না, তা-ও স্পষ্ট। ইরানের বৈপ্লবিক সেনার তরফ থেকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, বদলা নেয়া হবে। এ ঘটনায় আমেরিকার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিশোধ নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। তিনি বলেন, সোলাইমানি শহীদ হলেও তার কাজ বন্ধ থাকবে না। যারা নিজেদের হাতে সোলেমানি ও অন্যান্য শহীদের রক্ত লাগিয়েছে, তারা যেন তীব্র প্রতিশোধের অপেক্ষায় থাকে।

সোলেইমানি ইরানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তাকে ইরানে জাতীয় বীরের মর্যাদা দেয়া হতো। সোলেইমানিকে যারা হত্যা করেছে সেই ‘অপরাধীদের’ জন্য ভয়ঙ্কর প্রতিশোধ অপেক্ষা করছে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন খামেনি। খামেনি বলেছেন, ‘প্রতিরোধ বাহিনীর জিহাদ দ্বিগুণ উদ্যমে অগ্রসর হবে, অবশ্যই পবিত্র এ যুদ্ধে যোদ্ধাদের জন্য নিশ্চিত বিজয় অপেক্ষা করছে।’ সোলেইমানির মৃত্যুতে তিনদিনের ‘রাষ্ট্রীয় শোকের’ ঘোষণাও দিয়েছে ইরান।

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানিও। বলেছেন, ‘সোলেমানি শহিদ হওয়ায় আমেরিকাকে রুখতে ও ইসলামি মূল্যবোধ রক্ষায় আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হবে ইরান। এই অঞ্চলে ইরানের মতো যেসব দেশ আমেরিকার কুক্ষিগত হয়ে থাকতে চায় না, কোনও সন্দেহ নেই, তারা সকলেই এর বদলা নেবে।’ ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফও মার্কিন ড্রোন হামলাকে ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ’ বলে নিন্দা করেছেন। ‘আগামী দিনে আমেরিকাকে এর মূল্য দিতে হবে’ বলে তার টুইটে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি। সোলেইমানিকে হত্যার খবরের পরই সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে তেহরান। তিনি বর্তমানে ইরানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিশোধের ঘোষণা দিয়েছে লেবাননের শিয়া মিলিশিয়া গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। এক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ বলেছেন, ‘বিশ্বজুড়ে সব প্রতিরোধ যোদ্ধাদের কাজ ও দায়িত্ব হচ্ছে এসব খুনি অপরাধীদের যথাযথ শাস্তি দেয়া।’ সোলেইমানির দেখানো পথে হিজবুল্লাহ অগ্রসর হবে বলেও জানান নাসরুল্লাহ।
সোলেইমানির হত্যা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা উসকে দেবে বলে মন্তব্য করেছে রাশিয়া। সংবাদ সংস্থা আরআইএ নভোস্টি ও তাস পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, ‘সোলেইমানি পরম বিশ্বস্ততার সঙ্গে ইরানিদের স্বার্থ সুরক্ষায় কাজ করেছেন। আমরা ইরানি জনগণের প্রতি গভীর শোক জানাচ্ছি।’
সোলাইমানি ও ইরাকি কমান্ডার আবু মাহদি আল মুহান্দিসকে হত্যায় মার্কিন হামলার নিন্দা জানিয়েছেন ইরাকের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদেল মাহদি। এই হামলাকে আগ্রাসন আখ্যা দিয়ে এতে বিপর্যয়কর যুদ্ধ লেগে যেতে পারে বলে জানান তিনি। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, একজন ইরাকি সামরিক কমান্ডারকে হত্যা ইরাকি সরকার ও জনগণের বিরুদ্ধে আগ্রাসন। এতে ইরাকি মাটিতে মার্কিন সেনা উপস্থিতির শর্তের গর্হিত লঙ্ঘন ঘটেছে বলেও জানান ইরাকি প্রধানমন্ত্রী। ইরাকি কমান্ডার মুহান্দিস ছিলেন আধা সামরিক বাহিনী হাশেদ আল-শাবির উপপ্রধান।

এদিকে, ইরানের শীর্ষ জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার পর শুক্রবার বাগদাদ দূতাবাস ইরাকে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের অবিলম্বে দেশটি ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছে। ইরানের কুদস ফোর্সের নেতাকে হত্যার পর পাল্টা আঘাতের আশঙ্কায় এই নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইরাক ও অঞ্চলটিতে উত্তেজনা বৃদ্ধির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস আমেরিকার নাগরিকদের ২০২০ সালের ভ্রমণ নির্দেশিকা মেনে চলা এবং অবিলম্বে ইরাক ত্যাগের আহ্বান জানাচ্ছে। মার্কিন নাগরিকদের সম্ভব হলে বিমানে ভ্রমণ করা উচিত। এটি সম্ভব না হলে সড়ক পথে অন্য দেশে চলে যান।
কুদস ফোর্সের প্রধান ও ইরাকের মিলিশিয়া কমান্ডার আবু মাহদি আল-মুহান্দিকে বিমান হামলায় হত্যার কয়েক ঘণ্টা পর এই নির্দেশনা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সূত্র : এপি, রয়টার্স, ডিপিএ, এএফপি।



 

Show all comments
  • Babul Bhuiyan ৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:৫৪ এএম says : 0
    আমেরিকা যা করেছে তাতে অনেক দিন পরে ত্রসে বুজতে পারলাম,,যে সেদিনের টুইন টাওরে হামলা সঠিক ছিল কারন যারা হামলা করেছে তারাও কোন না কোন প্রকার আগাত থেকেই ঐ হামলায় অংশ নিয়েছিল,,, আর আজ আবার পৃথীবি হয়ত আমেরিকার অনেক বড় ধরনের ক্ষতি দেখতে চাইবে ত্রবং দেখতে পাইবে বলে মনে ত্রকটা বড় আকারের বিশ্বাষ জন্ম নিয়েছে দেখা যাক আল্লাহ ভরসা
    Total Reply(0) Reply
  • Md Azhar Rubel ৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:৫৪ এএম says : 0
    বিশ্বের সব দেশে মার্কিন উপস্থিতি প্রতিটি দেশ ও জাতির জাতিসত্ত্বা বিসর্জনের হুমকিতে আছে কারন তারা ক্রমাগত চক্রান্তে লিপ্ত.
    Total Reply(0) Reply
  • Fatema Zahin ৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:৫৪ এএম says : 0
    না দেখা অচেনা দুইজন মানুষের মৃত্যুতে খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। একজন বিডিয়ার বিদ্রোহে নিহত কর্নেল গুলজার,আরেকজন হলেন জেনারেল সোলাইমানি। ওনার কথা অনেক শুনেছি। অত্যাচারি কাফিরদের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন মূর্তিমান আতঙ্ক। আল্লাহ তাদের বেহেস্ত নসিব করুক। ইনশাহআল্লাহ মুসলিম নারীর গর্ভে আল্লাহ তালা এরকম হাজারো সুলাইমানির জন্ম দিবে..এই দোয়া করি।
    Total Reply(0) Reply
  • Kazi Sumon ৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:৫৪ এএম says : 0
    ইরান মেধার সাগরে ভাষা একটা জাতি।তারা মাথাগরম করেনা।ধৈর্য্য ধরে।ঠিক সময়ে শত্রুকে জবাব দেয়।আর তাইতো দুর্বল থেকে আজ তারা মধ্যপ্রাচ্যের ত্রাস। সুলাইমানির অভাব অপূরণীয়।এর জবাব দিয়ে দেওয়া হবেইইই
    Total Reply(0) Reply
  • Md Sumon Rana ৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:৫৫ এএম says : 0
    বিশ্ব এখন ইরানি পরমানু বোমা আর সুপার সনিক ব্যালেস্টিক ক্ষেপনাস্ত্রের তেজ আচ করার জন্য তৈরি থাকুক।পশ্চিমা দুনিয়া তোমরা আগুন নিয়ে খেলেছ কিন্তু জাহান্নামকে দেখনি শীঘ্রই দেখবে ইনসাল্লাহ।
    Total Reply(0) Reply
  • Halal Uddin ৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:৫৫ এএম says : 0
    সত্যি খুবই মর্মাহত হয়েছি যখন শুনলাম কাশেম সোলেমান এই পৃথিবীতে আর নাই পৃথিবীর সেরা একজন জেনারেল আমেরিকা একেবারে শিশুদের মত আচরণ করল তাদের উচিত ছিল নেতার ক্ষমতা যখন কর্মীর হাতে যায় তার পরিণতি কত ভয়াবহ হয় জানি তার পরিণতি ভালো হবে না তারপরও বলি শান্ত হোন!
    Total Reply(0) Reply
  • Golam Faruque ৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:৫৫ এএম says : 0
    আমেরিকা অসহিষ্ণু এবং আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস বাদের এক মাত্র মদদদাতা। তিনি যে বিশ্ব মোরল তা প্রমান করার জন্য বার বার নিরপরাধ মানুষের রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে বিশ্ব জনপদ।
    Total Reply(0) Reply
  • MD Tanvir ৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:৫৬ এএম says : 0
    ভিমরুলের ঝাকে আমেরিকার ঢিল ছুড়ার কি প্রয়োজন ছিলো।মনে রাখতে হবে ইরান কিন্তু ইরাক,আফগানস্তান বা ভিয়েতনাম না।ইরান হচ্ছে পারশ্য সাম্রাজ্যের উত্তরসুরি যার সংগি হিসেবে আছে কাতর,ইয়েমেন,সিরিয়া, হয়তো তুরস্ক এবং রাশিয়া,সরবপরি হিজবুল্লাহ।ইরানের পক্ষে আমেরিকাকে সরাসরি আক্রমণ করা সম্ভব নয়, কিন্তু তারা অনায়েসে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সারথের বিপক্ষে আঘাত করবে যা মধ্যপ্রাচ্যেকে এবার সত্যিকারে অগ্নিগর্ভ করে তুলবে।এক সময় তা ইজ্রায়েলকে আক্রমণের মাধ্যমে ৩য় বিস্বযুদ্ধের সুত্রপাত করবে।এখন আর গঠনার উপর কারোও নিয়ন্ত্রন রইলোনা।
    Total Reply(0) Reply
  • HM Al Amin ৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:৫৬ এএম says : 0
    এমন প্রতিশোধ নিতে হবে যেনো আমেরিকা চোখ তুলে তাকাবার সাহস না পায়।
    Total Reply(0) Reply
  • নজরুল ৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১০:০১ এএম says : 0
    আমেরিকা নামক বিশ্বের ক্যানসার রাষ্টটিকে দুনিয়া থেকে মুছে ফেলে দেয়া উচিত৷
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইরাক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ