Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদ জানিয়ে দিল্লিতে বর্ষবরণ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১ জানুয়ারি, ২০২০, ৪:৩১ পিএম | আপডেট : ৫:১০ পিএম, ১ জানুয়ারি, ২০২০

মঙ্গলবার ঘড়িতে রাত ১২ টা বাজতেই শুরু হয়েছে নতুন দশক, আর দিল্লিতে এই নতুন দশক বরণ করা হল নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদ জানানোর মাধ্যমে। নতুন বছরের প্রথম প্রহরে শত শত মানুষ মুক্ত কণ্ঠে গাইলেন ভারতের জাতীয় সংগীত। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে শীতের কামড়কে উপেক্ষা করেই দক্ষিণ দিল্লির শাহীন বাগের কয়েকশো’ মানুষ নতুন বছরের শুরুটাই করলেন এভাবে।

দিল্লিতে গত ১১৮ বছরে দ্বিতীয় শীতলতম ডিসেম্বরেও মূলত মহিলাদের নেতৃত্বে চলা এই বিক্ষোভ দুই সপ্তাহ ধরে চলছে। অনেক মহিলাই তাদের শিশুদেরও বিক্ষোভের স্থানে নিয়ে এসেছেন। কম্বলের গাদার মধ্যে তাঁবু বানিয়ে শয়ে শয়ে মানুষ রয়েছেন এখানে।

‘আমি দেখতে পাচ্ছি যে আমার বাচ্চাদের কোনও ভবিষ্যৎ নেই। মা হিসাবে তাদের ভবিষ্যৎ বাঁচাতেই আমি এখানে এসে প্রতিবাদ করছি। আমাদের অধিকার আমাদের দেওয়া উচিত এবং এটি কেবল আমার লড়াই নয় এটি সংবিধান বাঁচানোর বিষয়। দলিলের অভাবে সারা দেশ জুড়ে প্রচুর ভারতীয় সমস্যার মুখোমুখি হবেন,’ ৩৩ বছর বয়সী সায়মা তার এক সন্তানকে এক গ্লাস দুধ খাওয়াতে খাওয়াতে এনডিটিভিকে বলেন। তিনি আরও জানান, শাহীন বাগে যাওয়ার জন্য শীতে বের হওয়ার আগে তিনি বাচ্চাদের ঘুম পাড়িয়ে যাবেন। তিনি জীবনে প্রথম কোনও প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন।

অন্য মহিলারা যারা তাদের সন্তানদের বাড়িতে ছেড়ে আসতে পারেননি, তারা সন্তানকে সঙ্গে নিয়েই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। ‘আমি ২০১৪ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে জামিয়া থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছি। ধর্মের ভিত্তিতে জামিয়ায় কোনও বৈষম্য নেই... প্রথমবার এ জাতীয় ঘটনা ঘটছে এবং আমি কঠোরভাবে এর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি,’ এক বছরের মেয়েকে কোলে নিয়ে বলেন ২৪ বছর বয়সী সাজিদা খান।

স্থানীয় মানুষরাই বিক্ষোভকারীদের জন্য খাবার নিয়ে আসেন। কম্বল এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী সংগ্রহের জন্য টুইটারে প্রচার চলছে। ৯০ বছর বয়সী আসমা খাতুন জানান, তিনি প্রতিদিন বিকেল ৩ টে থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত শাহীন বাগে বসেছিলেন। ‘আমরা সংবিধানের জন্য এবং আমাদের সকল ভাইয়ের হয়ে লড়াই করছি। যারা আমার থেকে প্রমাণ চাইবেন তাদের বলতে চাই, আপনার পূর্বপুরুষদের নাম কী ছিল? আমি আপনাকে আমার গত সাত প্রজন্মের নাম দেখাতে পারি যারা এখানে বাস করত,’ তিনি বলেন।

মঙ্গলবার ২০১৯ সালের শেষ রাতে শাহীন বাগে বেশ কয়েকজনকেই জাতীয় পতাকা বয়ে বেড়াতে দেখা গিয়েছে। অন্যরা নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইনের বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড নিয়ে আসেন। ঘড়ির কাঁটা ১২ টা ছুঁতেই নতুন বছর শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় সংগীতে গলা মেলান মানুষ।

নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইনে এই প্রথম ভারতে ধর্মকেই নাগরিকত্বের প্রমাণ করে তোলা হয়েছে। সরকার জানিয়েছে যে তারা ২০১৫ সালের আগে ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে ভারতে পালিয়ে আসা তিনটি মুসলিম অধ্যুষিত দেশের সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব পেতে সহায়তা করবে। সমালোচকরা বলছেন এই আইন মুসলিমদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণের জন্যই প্রস্তুত করা হয়েছে এবং সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষ নীতিকে লঙ্ঘন করেছে। সূত্র: এনডিটিভি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ