পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সীমান্তে নিরীহ সাধারন মানুষকে হত্যার সংখ্যা শূন্যতে আনা এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনীর প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধে বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশই সম্মত হয়েছে কয়েক বছর আগেই। কিন্তু এরপরও সেটা বন্ধ হয়নি, বরং বেড়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর হিসাবে ২০১৯ সালে সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলি ও শারীরিক নির্যাতনে ৪৭ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। আগের বছর এই সংখ্যা ছিল ১৪জন।
মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)-এর বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহত ৪৭জন বাংলাদেশির মধ্যে ৩৭ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। বাকিদের নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে। এই প্রতিবেদনটি গতকাল ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে আসকের লিখিত প্রতিবেদন পড়ে শোনান সংগঠনটির সিনিয়র উপপরিচালক নিনা গোস্বামী ও আবু আহমেদ ফয়জুল কবির। বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক শীপা হাফিজা।
সংস্থাটির দেয়া তথ্যে জানা যায়, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফের হাতে ৪৬ বাংলাদেশির নিহত হওয়ার অভিযোগ উঠে। ২০১৬ সালে সেই সংখ্যা কমে ৩১ এ দাঁড়ায়। ২০১৭ সালে তা আরও কমে দাঁড়ায় ২৪ এ। মানবাধিকার কর্মীরা সীমান্তে নিরস্ত্র মানুষদের নিহত হওয়ার ঘটনাগুলোকে ঠান্ডা মাথায় হত্যাকান্ড হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
মানবাধিকারকর্মী ও পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, সীমান্তে নাগরিকদের মৃত্যুতে সরকারের পক্ষ থেকে যতটা জোরালো প্রতিবাদ জানানোর রেওয়াজ ছিল, এখন সেটা ততটা জোরালো নয়। অনেকে হয়রানির ভয়ে বিএসএফের নির্যাতনের কথা স্বীকার করছেন না।
মানবাধিকার কর্মী নূর খান বলেন, ভারত সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে দেয়া প্রতিশ্রুতি রাখেনি। বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন, গণমাধ্যম বিভিন্নভাবে সরকারের কাছে বিষয়টি তুলে ধরেছে। দ্বিপাক্ষিক সর্বোচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে ভারত বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও সেটি রাখেনি।
তিনি আরো রবলেন, তারা (ভারত) বলেছিল, সীমান্তে মারণাস্ত্র ব্যবহার করবে না। কিন্তু আমরা দেখলাম, সেটি মুখের বুলি হলো। এখনও প্রতিনিয়ত সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক নিহতের ঘটনা ঘটছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গত ১১ জুলাই সংসদে বলেছিলেন, ২০০৯ সাল থেকে গত ১০ বছরে বিএসএফের হাতে ২৯৪ জন বাংলাদেশি নিহত হন। সীমান্তে হত্যা বন্ধে বিজিবি সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। পাশাপাশি সরকার কূটনৈতিক পর্যায়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে। তিনি সংসদে জানান, ২০১৮ সালে নিহতের সংখ্যা তিনে নেমে এসেছিল। তবে আসকের হিসাবে ২০১৮ সালে সীমান্তে নিহত বাংলাদেশির সংখ্যা ১৪ জন। আর অধিকারের হিসাবে এই সংখ্যা ১১। এর আগের বছর ২০১৭ সালে নিহতের সংখ্যা আসকের হিসাবে ২৪ এবং অধিকারের হিসাবে ২৫।
ঢাকার পিলখানায় গত ১২-১৫ জুন বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা নিয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিককেরা। জবাবে বিএসএফ মহাপরিচালক রজনীকান্ত মিশ্র বলেছিলেন, সীমান্তে হত্যাকান্ড হচ্ছে না, অনাকা্িক্ষত মৃত্যু হচ্ছে। তবে তিনি স্বীকার করে নেন যে সীমান্তে প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার হচ্ছে। এর পেছনে তার যুক্তি ছিল, ভারতীয় সীমান্তের ভেতরে ঢুকে বিএসএফের জওয়ানদের ওপর হামলা চালানোর ঘটনা আছে। প্রাণ বিপন্ন হলেই তারা কেবল গুলি ছুড়ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক পরিসংখ্যায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ২০০৯ সালে কমপক্ষে ৬৬ বাংলাদেশি বিএসএফ এর গুলিতে নিহত হন। ২০১০ সালে ৫৫, ২০১১ ও ২০১২ সালে ২৪ জন করে, ২০১৩ সালে ১৮ জন, ২০১৪ সালে ২৪ জন, ২০১৫ সালে ৩৮ জন, ২০১৬ সালে ২৫ জন, ২০১৭ সালে ১৭ জন এবং ২০১৮ সালে তিনজন নিহত হন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।