মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
গত ছয় বছরে আর্থিক প্রবৃদ্ধির সর্বনিম্ন রেকর্ড নিয়ে ভারতের অর্থনীতির দশা এখন বেহাল। এমন অবস্থায় আগামী বছরের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে অশনিসঙ্কেত দিলো ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক (রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া)।
মোদি আমলে গত ৪৫ বছরে বেকারত্বের হার আগেই সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছেছে আর শনিবার রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ‘ফাইন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি রিপোর্ট’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, অর্থনীতির করুণ দশার ফলে দেশে ব্যাংকের অনাদায়ী ঋণের বোঝা আগামী এক বছরে বাড়তে পারে। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে তা বেড়ে ৯ দশমিক ৯ শতাংশে পৌঁছবে। একই সাথে দেশটির ব্যাংকের ঋণ বৃদ্ধির হার গত ৫৮ বছরের রেকর্ড ভেঙে তলানিতে ঠেকেছে বলে জানিয়েছে ভারতের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মূল্যায়নকারী একটি সংস্থা।
করুণ এই অর্থনৈতিক অবস্থার জন্য দেশটির বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপকে দায়ী করছেন। তারা বলছেন, অর্থনীতির এই দৈন্যদশা থেকে মানুষের নজর অন্য দিকে সরিয়ে দিতে নতুন নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকা (এনআরসি) নিয়ে এসেছে বিজেপি সরকার।
রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার ওই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর আজ রোববার ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে জরুরি বৈঠকে বসার ঘোষণা দিয়েছেন ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। দেশটির ইংরেজি দৈনিক ইকোনমিক টাইমস এক প্রতিবেদনে বলছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সতর্কবার্তাকে বেশ কিছু দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ, দেশটির রাজস্ব আয়ের পরিমাণ হ্রাসের পাশাপাশি নভেম্বর পর্যন্ত বাজেট ব্যয় (আর্থিক ঘাটতি) ১০৭ শতাংশ অতিক্রম করেছে। ভারতের কেন্দ্রীয় এই ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চাকা সচল রাখার অন্যতম চালিকাশক্তি বেসরকারি বিনিয়োগ কমে গেছে। গত জুলাই ও সেপ্টেম্বরে বাজারে চাহিদাও কমেছে; যার ধাক্কা লেগেছে প্রবৃদ্ধিতে।
দেশটির অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মূল্যায়নকারী একটি সংস্থা বলছে, চলতি অর্থবছরে ভারতে ব্যাংকের ঋণ বৃদ্ধির হার সাড়ে ৬ থেকে ৭ শতাংশের মধ্যে আটকে থাকতে পারে। গত বছর যা ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ ছিল। ব্যাংকঋণ বৃদ্ধির এই হারের পূর্বাভাস যদি সত্যি হয় তাহলে ১৯৬২ সালের পর ভারতে ঋণ বৃদ্ধির হার এই প্রথম এত নিচে নামতে যাচ্ছে। ওই বছর ঋণের বৃদ্ধির হার ছিল ৫ দশমিক ৪ শতাংশ।
রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া বলছে, ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর অবস্থা ভালো নয়। গত বছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধির হার আরো কমেছে, যা মাত্র ৮ দশকি ৭ শতাংশ।
আনন্দবাজার বলছে, দেশটির প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী ভারতের ভেঙে পড়া অর্থনীতির জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তীব্র সমালোচনা করেছেন। রাহুল গান্ধী বলেন, ‘এখন প্রধানমন্ত্রীর যে কাজ, সেটা তিনি করতে পারছেন না। কেউ কিছু কিনছেন না, কলকারখানা বন্ধ, বাজারে মন্দা, প্রবৃদ্ধি তলানিতে। অর্থনীতি কঠিন বিষয় নয়। আগে প্রবৃদ্ধির হার ৯ শতাংশ ছিল, এখন ৪ শতাংশের ঘরে নেমে এসেছে। সূত্র : এনডিটিভি ও আনন্দবাজার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।