Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সিটিজেনশিপ অ্যাক্ট ভূরাজনৈতিক বিভাজন গভীর করতে পারে

ভারতকে সতর্ক করলো দক্ষিণ এশিয়ার নাগরিকরা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

দক্ষিণ এশিয়ার ১৪ জন বিশিষ্ট নাগরিক ভারতের সিটিজেনশিপ অ্যাক্ট সংশোধনের সমালোচনা করেছেন। তারা বলেছেন, এই আইনের কারণে এ অঞ্চলে ‘ভূরাজনৈতিক বিভাজন আরও গভীর হওয়ার’ আশঙ্কা রয়েছে। এমন সময় এটা করা হলো যখন এখানকার দেশগুলোর শান্তি ও পারস্পরিক বোঝাপড়ার জন্য চেষ্টা করা উচিত।
সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্টটি ১১ ডিসেম্বর ভারতের পার্লামেন্টে পাস করা হয়েছে। পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আসা ছয়টি ধর্মীয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠীকে এই আইনে ভারতের নাগরিকত্ব দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে। কিন্তু মুসলিমদের এই তালিকা থেকে বাদ দেয়ায় এই আইনকে মুসলিম-বিরোধী আইন বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। অন্যদিকে যে ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন্স তৈরির প্রস্তাব করা হয়েছে, সেটির মাধ্যমে আসল ভারতীয় নাগরিকদের থেকে কাগজপত্রহীন নাগরিকদেরকে আলাদা করা হবে।
বৃহস্পতিবার দেয়া এই বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানে স্থপতি ও অধিকার কর্মী আরিফ হাসান, কলম্বো বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক জয়াদেবা উইয়ানগোদা, সাবেক পাকিস্তানী অর্থমন্ত্রী মুবাশির হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এমিরেটাস সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ও নেপালের ইতিহাসবিদ প্রত্যুষ ওনতা।
এক বিবৃতিতে তারা বলেছেন, ‘এই আইনটি বৈষম্যমূলক, কারণ এতে আইনের উদ্দেশ্যের ঊর্ধ্বে গিয়ে মুসলিমদেরকে টার্গেট করা হয়েছে। নাগরিক, বিদেশি বা দেশি যাই হোক না কেন, তাদেরকে ধর্মের ভিত্তিতে পার্থক্য করাটা যে কোন দেশের জন্যই অগ্রহণযোগ্য, আর যাদের সেক্যুলার সংবিধান রয়েছে, তাদের জন্য এটা আরও বেশি প্রযোজ্য। তাছাড়া, এই আইনটি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভূ-রাজনৈতিক বিভাজন আরও গভীর করবে, বিশেষ করে এমন একটা সময় যখন এখানকার দেশগুলোর শান্তি ও পারস্পরিক বোঝাপড়ার জন্য চেষ্টা করা উচিত’।
তারা বলেছেন, দেশজুড়ে প্রস্তাবিত ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন্সের ফলে বহু মিলিয়ন মানুষ অসহায় হয়ে পড়বে। এতে আরও বলা হয়েছে, ‘ভারতের পর্যবেক্ষক হিসেবে আমরা নাগরিকত্বকে ভারতের প্রধান গুরুত্বর্পর্ণ সমস্যা মনে করিনি, যেখানে সামাজিক ন্যায়বিচারের মতো আরও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু রয়েছে। আমাদের আশঙ্কা, এই ধরনের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে গেলে তার মারাত্মক পরিণতি হতে পারে, বিশেষ করে সেক্যুলার সংবিধানের ছাতার অধীনে যে ২০০ মিলিয়ন মুসলিম বাস করছে, তাদের জন্য এই সমস্যা হতে পারে’।
তারা বলেছেন, ‘একটি গণতান্ত্রিক, বহুত্ববাদী ভারত যেখানে ভৌগলিক সীমার মধ্যে বিভিন্ন জাতিগত, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে সংহতি, সহাবস্থান এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধাকে মর্যাদা দেয়া হয়, তেমন একটি ভারত সার্বিকভাবে দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও স্থিতির জন্য জরুরি। সূত্র : সাউথ এশিয়ান মনিটর।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ