Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সিএএ ও বাবরি মসজিদ রায় নিয়ে ভারতের তীব্র সমালোচনায় ওআইসি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ পিএম

ভারতের বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)। সম্প্রতি পাস হওয়া সিএএ ও অযোদ্ধার বাবরি মসজিদ মামলার রায়ে মুসলিমদের স্বার্থহানি হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে ওই সংগঠনটি। গত রবিবার (২২ ডিসেম্বর) সউদী আরবের জেদ্দায় অনুষ্ঠিত ওআইসির সাধারণ পরিষদের এক অধিবেশনে এ ব্যাপারে উদ্বেগ জানানো হয়।

বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে নিপীড়নের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পার্সি ও খ্রিস্টানদের নাগরিকত্ব নিশ্চিত করতে এই আইন করে ভারত। গত ১২ ডিসেম্বর রাতে প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরের পরেই আইনে পরিণত হওয়া বিলটি শুরু থেকেই ‘মুসলিমবিরোধী’ আখ্যা পেয়েছে। এর আগে এই আইনকে বৈষম্যমূলক উল্লেখ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

ওআইসির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাতিসংঘ ও অন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো তাদের চার্টারের মাধ্যমে প্রত্যেকটি দেশে সংখ্যালঘুদের অধিকার সংরক্ষিত করেছে। তার বিপরীতে ভারতের এমন আচরণ কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, ভারতের বর্তমান পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে সংগঠনটি। অবিলম্বে মুসলিমদের ওপর অত্যাচার বন্ধ করা ও তাদের পবিত্র স্থানগুলো সংরক্ষণ করতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

৫৭টি মুসলিম দেশের সংগঠন ওআইসির বিবৃতিতে জাতিসঙ্ঘ সনদের নীতিমালা, দায়বদ্ধতা, বাধ্যবাধকতাগুলো তুলে ধরে কোনো রকম বৈষম্য ছাড়া ভারতে সংখ্যালঘুদের অধিকার নিশ্চিতের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আইন পালনের ওপর জোর দেয়া হয়েছে। অন্যথায় ওই অঞ্চলে উত্তেজনা সৃষ্টি এবং গোটা অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

অন্ধ্রপ্রদেশে এনআরসি না করার ঘোষণা : এদিকে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যে জাতীয় নাগরিক তালিকা (এনআরসি) কার্যকর না করার ঘোষণা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন রেড্ডি। এর আগে দেশটির বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) পাস করতে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষে বিজেপিকে সমর্থন দেয় তার রাজনৈতিক দল ওয়াইএসআর কংগ্রেস পার্টি। এই আইনের প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে তীব্র আন্দোলনের মুখে গত সোমবার এনআরসি না করার ঘোষণা দেন মুখ্যমন্ত্রী।

সম্প্রতি ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ সারা দেশে এনআরসি করার ঘোষণা দিলেও পরে টুইটার থেকে সেই মন্তব্য মুছে ফেলে তার দল। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধিতা করে পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থান, কেরালা, মধ্যপ্রদেশ, দিল্লি, বিহার, উড়িষ্যা, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীরা এনআরসি বাস্তবায়ন না করার ঘোষণা দেন। সবশেষ এ তালিকায় যোগ দিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী।

জনসংখ্যা তালিকা হালনাগাদ করার উদ্যোগ : এদিকে জনসংখ্যা তালিকা হালনাগাদ করার উদ্যোগ নিয়েছে ভারতের বিজেপি সরকার। গতকাল মঙ্গলবার এক বিশেষ বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবে আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেয় দেশটির কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। জাতীয় জনসংখ্যা নিবন্ধীকরণ (এনপিআর) সংক্রান্ত নানা বিষয় পর্যালোচনার পর এ অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠকে এ তালিকা হালনাগাদের জন্য আট হাজার ৫০০ কোটি রুপি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

২০২১ সালের আদমশুমারির পাশাপাশি ২০২০ সালের মধ্যে এই জনসংখ্যা তালিকা হালনাগাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। ভারতের জনগণনা সংক্রান্ত কমিশন জানিয়েছে, নতুন করে এ তালিকা প্রণয়নের উদ্দেশ্য হচ্ছে, দেশের প্রতিটি ‘সাধারণ বাসিন্দার’ বিশদ পরিচয় তথা তথ্যবিবরণী তৈরি করা। ওই তথ্য সঙ্কলনে জনসংখ্যার পাশাপাশি বায়োমেট্রিকের বিশদ বিবরণও থাকবে।



 

Show all comments
  • habib ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৯, ২:২৯ পিএম says : 0
    No criticism no condemn should take action...muslim are oppressed around the world because of OIC silent and collaborate with them...
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ