পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আর মাত্র দুই দিন পর ২০-২১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২১তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সম্মেলন প্রস্তুতির সকল কর্মকান্ড শেষ হয়েছে। সম্মেলনে প্রায় চার কোটি টাকার বাজেট ক্ষমতাসীনদের। আওয়ামী লীগের সম্মেলন মানেই টানটান উত্তেজনার রুদ্ধশ্বাস অবস্থা। প্রতি সম্মেলনেই কিছু নেতা কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে ছিটকে পড়েন, আর নতুন কিছু মুখ নেতৃত্বে আসেন। তাই কারা বাদ পড়ছেন আর কারা নতুন পদ পাবেন তা নিয়ে স্নায়ুবিক চাপে রয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদে থাকা এবং পদপ্রত্যাশীরা। কেউ আশা করছেন বড় পদে যাওয়ার, কেউ কমিটিতে অন্তভূক্ত হবার; আবার কেউ বাদ না যেয়ে কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকতে পারলেই খুশি। আশা-নিরাশার দোলাচলে কাটছে আওয়ামী লীগ নেতাদের শেষ মুহূর্ত।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সৎ, দক্ষ ও ত্যাগী নেতৃত্ব খুজছেন। শুদ্ধি অভিযানের ফলে বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির অনেকেই বিতর্কিত কর্মকান্ড ও দলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কাজ করার কারণে পদ হারাতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী দলে সচ্ছ ইমেজের নেতৃত্ব উপহার দিতে চাচ্ছেন। এদিকে দল ও সরকার আলাদা রাখতে মন্ত্রীদের কেন্দ্রীয় পদে রাখা না রাখা নিয়ে আলোচনার তৈরী হয়েছে। একটি অংশের মতে, দলের ইশতেহার বাস্তবায়ন, সরকার ও দলের সমন্বয়ের জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের মন্ত্রিপরিষদে থাকা দরকার, আবার অনেকে যারা দলীয় পদ থেকে বঞ্চিত তারা বলছেন মন্ত্রীরা কেন্দ্রীয় পদে না থাকলেই ভাল। অনেকে মন্ত্রী হয়ে দলীয় কাজে সময় কম দেন তা নিয়ে আর সমস্যা থাকবে না। দলে এই ধরণের আলোচনা থাকার কারণে মন্ত্রীরা দলীয় পদ হারানোর চাপে রয়েছেন।
এছাড়া সম্মেলনে সবচেয়ে আলোচিত ইস্যু সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন আসছে কিনা। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতারাও আগ্রহী হয়ে আছেন দলীয় প্রধানমন্ত্রী কাউকে কোন গ্রিন সিগনাল দিবেন কিনা। গতবার সম্মেলনের একদিন আগে ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক হবার বিষয়ে গ্রিন সিগনাল পেয়েছিলেন। এবার ১৯ ডিসেম্বর রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন আসছে কিনা তার আভাস পাবার জন্য। এখন পর্যন্ত দলীয় নেতাদের মতে, ওবায়দুল কাদের আবারও এই পদে থাকার সম্ভাবনা বেশি। আর যদি পরিবর্তন হয় তাহলে এই পদে আলোচনায় রয়েছেন, সভাপতিমলন্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুুরী, প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র উপ-কমিটি সূত্রে জানা গেছে, ৪১ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা পরিষদ, ১৮০ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় কমিটি, সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড ১১ সদস্য এবং স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড ১৯ সদস্য বিশিষ্ট হচ্ছে। আর কেন্দ্রীয় কমিটির আকার ৮১ সদস্যের থাকছে।
দলের নীতি-নির্ধারণী ফোরাম সভাপতিমন্ডলীতে এবার বয়সের কারণে কয়েকজন উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেতে পারেন। যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকদের মধ্য থেকে দুইজন, উপদেষ্টা পরিষদ থেকে দুইজন এবং জেলা বা মহানগর থেকে ৩ জন সভাপতিমন্ডলীতে স্থান পেতে পারেন।
যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে চার জনের মধ্যে ৩জন নতুন আসবে এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ৮ জনের মধ্যে ৫জন নতুন আসতে পারেন। সম্পাদক মন্ডলী থেকে তথ্যমন্ত্রী ও প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, বন পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইঞ্জি. আবদুস সবুর, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সদস্য এসএম কামাল হোসেন, এবিএম রিয়াজুল কবির কাউসার, আজমতউল্লাহ খান, ইকবাল হোসেন অপু কাজের দক্ষতার জন্য পদোন্নতি পেতে পারেন।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের অনেকেই কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পাবার বিষয়ে আশায় রয়েছেন। এর মধ্যে বাহাদুর বেপারি, লিয়াকত শিকদার, খ ম জাহাঙ্গীর, অজয় কর খোকনসহ কেন্দ্র ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন এমন অনেক নেতা পদ পেতে দৌড়ঝাপ করছেন। আগামী কমিটিতে নারী নেতৃত্বে সংখ্যা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের (আরপিও) কারণে। ২০২১ সালের মধ্যে দলীয় কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্বে আনার বাধ্যবাধকতা রয়েছে এই অধ্যাদেশে। এক্ষেত্রে কমিটিতে প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন নারী পদ পেতে পারেন। সংরক্ষিত আসনের বর্তমান ও সাবেক এমপি, মহিলা লীগ নেত্রীরা পদ পাবার বিষয়ে এগিয়ে রয়েছেন। আওয়ামী লীগের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলামের বোন ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি, সানজিদা খানম, নূর জাহান মুক্তা, মেহজাবিন খালেদ, ডা. নুজহাত চৌধুরীর কেন্দ্রীয় পদে আসার আলোচনায় রয়েছেন। এছাড়া বর্তমানে যারা পদে রয়েছেন তাদের বাদ যাবার সম্ভাবনা কম বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে গঠনতন্ত্র উপ-কমিটি সূত্রে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক পদ বিলুপ্ত করার জন্য প্রস্তাবনা দিয়েছেন তারা। এ পদ নিয়ে বিতর্ক থাকা, পদের নেতাদের বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারণে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে উপ-কমিটি এবং কমিটির সদস্য পদ যথারীতি থাকবে।
সম্মেলনের বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, সম্মেলনে যোগ্য নেতৃত্ব বেছে নেয়া হবে। আরেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, অভিজ্ঞ ও তরুণদের সমন্বয়ে আওয়ামী লীগের কমিটি গঠিত হবে।
এদিকে গত ১২ নভেম্বর থেকে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৩ দিনে ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ২৮ জেলায় সম্মেলন করা হয়েছে। বর্তমানে কেন্দ্রীয় কমিটির ৭৭ নেতার মধ্যে ১৪ জন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর দায়িত্বে আছেন। এর আগের মেয়াদে ২০১৪ থেকে ২০১৮ মেয়াদের মন্ত্রিসভায় দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকা মন্ত্রীর সংখ্যা ছিলো ১৯ জন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।