বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
শরীয়তপুর সদর উপজেলার আংগারিয়া ইউনিয়নের দাদপুর, দক্ষিই, পশ্চিম ও উত্তর ভাষাইচর এলাকায় কীর্তিনাশা নদীর পাড়ের মাটি রাতের আঁধারে কেটে ট্রলারযোগে মাদারীপুরের ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। এতে নদীর পাড়ের বসত বাড়ি, মসজিদ, মাদরাসাসহ হুমকির মুখে পড়ছে বেড়িবাঁধ ও রাস্তা।
ইতোমধ্যে দাদপুর গোজা নামক এলাকায় বেড়িবাঁধ ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের কার্পেটিং রাস্তা অনেকটা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ঠিকাদারের মাধ্যমে পাইলিং করে জিও ব্যাগ ফেলে নদী ভাঙন রোধের চেষ্টা করছেন। স্থানীয় ভ্যান ও অটোবাইক চালকরা মিলে স্ব-উদ্যোগে ভেঙ্গে যাওয়া রাস্তা মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করেছে। তবুও ঠেকানো যাচ্ছে না নদী পাড়ের মাটি কাটা।
এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী, দালাল ও জমির মালিক পরিচয়ে প্রভাবশালী একটি মহল এই মাটি বিক্রির সাথে জড়িত রয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। তারা আরও জানান, চলতি বছরের শুরুতে ওই প্রভাবশালী মহলটি ভ্যাকু মেশিন দিয়ে নদীর পাড়ের মাটি কেটে ট্রাক, ট্রলি ও মাহেন্দ্র গাড়ি যোগে ইট ভাটায় বিক্রির প্রক্রিয়া শুরু করে। একপর্যায়ে এলাকাবাসী প্রতিরোধ গড়ে তুললে সদর উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে মাটিকাটা বন্ধ হয়ে যায়। বছরের শেষের দিকে অর্থাৎ নভেম্বর থেকে পুনরায় নদীর পাড়ের মাটি কেটে ট্রলার যোগে মাদারীপুরের কাজীর ইটভাটায় বিক্রি হচ্ছে।
স্থানীয় আব্দুল জব্বার সরদার, জলিল মোল্যা, নাছির উদ্দিন মোড়ল, মো. শাহাবুদ্দিন ঢালী, স্কুলছাত্র তরিকুল ইসলামসহ ভুক্তভোগীরা জনান, আংগারিয়া বাজারসহ জেলা শহরের সাথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম কীর্তিনাশা নদীর পাড়ের বেড়িবাঁধ রাস্তা। সেই রাস্তার ও নদীর মধ্যবর্তী জমির মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি হচ্ছে। স্থানীয় হাবিব সরদার, সাত্তার সরদারসহ অনেক প্রভাবশালীরা নিজেদের জমি পরিচয়ে এই মাটি বিক্রি করে নদী, বেড়িবাঁধ, মসজিদ, মাদরাসা, বসতবাড়ি এককথায় দাদপুর, উত্তর-দক্ষিণ-পশ্চিম ভাষাণচর গ্রাম হুমকির মুখে ফেলছে।
মাটি বহনকারী ট্রলার চালক শাহ আলম মৃধা জানায়, ট্রলার মালিক ও মাটির ব্যবসায়ী মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রাজারচর গ্রামের আক্তার বেপারী। তার নির্দেশে শ্রমিক নিয়ে প্রতিদিন ভোর ৪টা থেকে নদীর পাড়ের জমির মাটি কেটে নিয়ে মাদারীপুরের ইটভাটায় নিয়ে যায়।
ট্রলার মালিক ও মাটি ব্যবসায়ী আক্তার বেপারী জানায়, স্থানীয় এমদাদ আকনের সহায়তায় তিনি জমির মালিকদের কাছ থেকে মাটি কিনে শ্রমিক দিয়ে কেটে ট্রলারযোগে মাদারীপুরের ইটভাটায় বিক্রি করেন। জমির মালিক পরিচয় দানকারী ছাত্তার সরদারের সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, নদীর পাড়ের জমি তাদের রেকর্ডীয় সম্পত্তি। জমি নদীতে ভেঙ্গে যাওয়ার ভয়ে মাটি কেটে বিক্রি করছেন।
মাটিকাটা শ্রমিকরা জানায়, প্রতিদিন ভোররাতে নদীর পাড় থেকে মাটি কেটে ৮-১০টি ট্রলারযোগে মাদারীপুরের কাজীর ভাটায় নিয়ে যায়। প্রতিটি ট্রলারে ৪-৫ শত ঘনফুট মাটি বহন করা সম্ভব। দিনের বেলায় তারা কোন মাটি কাটে না। এ বিষয়ে শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহাবুর রহমান শেখ বলেন, গত বছর ওই এলাকার নদীর পাড় থেকে ভ্যাকু দিয়ে মাটি কাটা শুরু করে। অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনা হয়েছিল। এবারও যদি কেউ রাতের আঁধারে নদীর পাড় থেকে মাটি কাটে তাদেরকে পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।