বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কেরানীগঞ্জে ভস্মীভূত প্রাইম প্লাস্টিক কারখানা এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আহত ও নিহত শ্রমিকদের স্বজনেরা কারখানা এলাকায় এসে সকাল থেকে আহাজারি করতে থাকে। এসময় তাদো আহাজারিতে এলাকায় আবেগময় পরিবেশের সৃষ্টি হয়। কারখানা ধ্বংস স্তপ দেখার জন্য উৎসুক জনতা ঘটনাস্থলে ভীড় জমায়। নিরাপত্তার স্বার্থে কারখানাটি পুলিশ পাহাড়ায় রাখা হয়েছে।
এদিকে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের সচিব কে.এম. আলী গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় ভষ্মিভূত কারখানাটি পরিদর্শন করেন। তিনি এসময় বলেন যারা এই আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের সবাইকে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে। এই কারখানাটি ননকমপ্লান্স থাকায় ইতিমধ্যে মালিকের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে। এই ঘটনায় একই মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মোল্লা জালালকে প্রধান করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন, একই মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম সচিব সাইফুল ইসলাম, উপ-মহাপরিদর্শক সেফটি কামরুল ইসলাম, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক শিবনাথ রায়। এই কমিটি তদন্ত রিােপর্ট প্রদান করলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে তদন্ত কমিটির প্রধান শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মোল্লা জালাল তিনিও দুপুর সাড়ে ১২টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, আমি ও এই কমিটির অন্যান্য সদস্যরা আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত রিােপর্ট সরকারের দাখিল করবো। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক এম্বুলেন্স আবুল হোসেনের নেতৃত্বে ৪ সদস্য বিশিষ্ট আরো একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলো ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক আবদুল মোমিন, উপসহকারী পরিচালক মোঃ মোস্থফা মহসীন,সিনিয়র স্টেশন অফিসার সাইফুল ইসলাম(কেরানীগঞ্জ)। ফায়ার সার্ভিসের কদন্ত কমিটির প্রধান আবুল হোসেন বলেন, কারখানা যেভাবে ও যে পরিবেশে চলার কথা তার কোন কিছুই এখানে পাওয়া যায়নি। এধরনে কারখানা আবাসিক এলাকায় না থাকাই উত্তম।অন্যদিকে তদন্ত কমিটি ভষ্মিভূত কারখানা পরিদর্শনে আসলেও কারখানাটির মালিক বা শ্রমিকদের কাউকে উপস্থিত পাননি তারা। এছাড়া শুভাড্ডা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাজী ইকবাল হোসেন সকালে ঘটনাস্থলে আসেন। এসময় এই আগুনে ক্ষগ্রিৃস্ত শ্রমিক ও তাদের স্বজনদের ক্ষতিপুরন সহ চিকিৎসার আশ্বাস দেন। এছাড়া তিনি এই কারখানাসহ সকল ঝুঁকিপূর্ণ কারখানা আবাসিক এলাকা থেকে অন্যত্র সরিয়ে দেয়ার দ্রুত ব্যস্থা করবেন বলেন জানান। ঘটনাস্থলে আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রনে রাখার জন্য বিপুল সংখ্যক পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। কারখানার পাশের বাড়ির রোকেয়া বেগম জানান, আমার দুই ভাই এই কারখানায় কাজ করতো। তারা দুজনেই আগুনে দগ্ধ হয়। ইতিমদ্যে আলমগীর হোসেন মারা গেছেন। অপর ভাই রাজ্জাকের অবস্থাও মুমুর্ষ। আমরা সরকারের কাছে ক্ষতিপুরন চাই। এই কারখানা আমাদের এই আবাসিক এলাকায় আর থাকতে না পারে সেজন্য সরকারের কাছে আবেদন জানাই। কারখানার সিকিউরিটি সুপার ভাইজার শাকিল জানান,গ্যাস লিকেজ থেকেই আগুনের সুত্রপাত হয়। দ্রুত কারখানায় রাখা গ্যাস সিলিন্ডার গুলো কারখানা থেকে অন্যত্র সরানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্ত দ্রুত গতিতে আগুন কারখানায় ছড়িয়ে পড়ে। এসময় কারখানার কর্মরত শ্রমিকরা দৌড়াদড়ি করে পালানোর তাদেও বেশিরভাগ আগুনে ঝলসে গিয়ে গুরুতরভাবে আহত হয়। এলাকাবাসী ডা. সেলিম জানান, এই কারখানাসহ অন্যান্য কারখানা আর আমাদেও আবাসিক এলাকায় দেখতে চাই না। খুব দ্রুত সেগুলো অন্যত্র সেিরয় নেয়ার জন্য উর্ধতন কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।
এ পর্যন্ত এই অগ্নিকান্ডে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। নিহত আহতদের অধিকাংশই বরিশাল জেলার। তাদের সঠিক নাম ঠিকানা এখনও জানা যায়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।