পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
’৭১ সালে পাকবাহিনী যেভাবে নির্যাতন করেছে, আওয়ামী লীগ সরকার এখন সে ধরনের নির্যাতন করছে’ বলে মন্তব্য করেছেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলার সময় পাকিস্তানি বাহিনী বাংলাদেশের মানুষের ওপর নির্যাতন করেছে। জনগণের ভোট ছাড়াই প্রশাসন-পুলিশ-র্যাব দিয়ে ক্ষমতায় এসে বর্তমান সরকার সেটাই করছে। এই জুলুম থেকে উত্তরণে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ পরিষদ আয়োজিত ‘বিশ্ব মানবাধিকার পরিস্থিতি ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, দেশের মালিক জনগণ। সেই জনগণের অধিকার বাস্তবায়ন করতে হবে। তাদের অধিকার দিতে হবে। ভোটের অধিকার দেশের জনগণের মৌলিক অধিকার। এ অধিকার হরণকারীরা ডাকাত।
ড. কামাল হোসেন বলেন, যে মানবাধিকারের জন্য ভাষা আন্দোলন, ছয় দফা আন্দোলন, গণঅভ্যুত্থান ও স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছে, সেই মানবতাকে প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। প্রতিটি গ্রামগঞ্জে এ মানবাধিকার আদায়ের বিষয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। তিনি আরো বলেন, আমরা তো পরাধীন নই। সংবিধান অনুযায়ী আমরা স্বাধীন দেশের মালিক। স্বাধীন দেশের মালিক হয়ে আমাদের যে অধিকার সেই অধিকারগুলো এক মুহ‚র্তের জন্য আমরা হারাতে পারি না। যারা মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, কথা বলার অধিকার আমাদের দিয়ে গেছেন, সেই অধিকার আমাদের নেই- এটা মনে করে তাদের সঙ্গে বেঈমানি করতে পারি না।
ড. কামাল হোসেন বলেন, বাঙালি জাতি অন্যায় মেনে নেয়ার জাতি নয়। পাকিস্তান বুঝতে পারেনি, তার জন্য তাদের মাশুল দিতে হয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশের অনেক স্বৈরশাসক বুঝতে পারেনি, তাদেরও মাশুল দিতে হয়েছে। এখনও যদি কেউ মনে করে অন্যায়ভাবে ক্ষমতায় থাকবে তারা থাকতে পারবে না। এই বাঙালি জাতি থাকতে দেবে না।
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে কামাল হোসেন বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছিল দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য। গণতন্ত্রের অর্থ হলো দেশের জনগণের অধিকার। সেই অধিকার যদি কেউ অন্যায়ভাবে হরণ করার চেষ্টা করে, তার মানে এই নয় যে, আমরা অধিকার হারিয়ে ফেলেছি। কেউ যদি অন্যায়ভাবে অধিকার হরণের চেষ্টা করে, তাহলে সেটাই হলো সবচেয়ে বড় ক্রাইম। এই ক্রাইমকে ধ্বংস করে আমাদের সেই অধিকার পুরোপুরিভাবে প্রতিষ্ঠা করতে হলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি বলেন, যারা মানবাধিকার হরণ করে, মানুষের অধিকার হরণ করে, তারা মহা অপরাধী। তাদের আইনের আওতায় আনতে হলে ঐক্য প্রয়োজন।
ড. কামাল হোসেন বলেন, যারা অর্থ-অস্ত্র দিয়ে দেশের মালিকদের দাস বানাতে চায়, তারা আহাম্মকের স্বর্গে বাস করে। আমাদের মৌলিক অধিকার আদায়ে প্রতিবাদ করতে হবে। প্রতিরোধ করতে হবে। পাড়া-মহল্লায় আমাদের আলোচনা করতে হবে। সবাইকে বলতে হবে, কথা বলা আমার অধিকার, মৌলিক অধিকার হরণকারীরা আইন অমান্যকারী।
সাবেক তত্ত¡াবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেন, আমার মনে হয় কোনো এক মুখ্যতার শাসনে আমরা আছি। ব্রিটিশের ধ্যান-ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে পারি না। পুলিশ কাউকে ধরে নিয়ে এলো, অমনি আদালত বললেন জেলে যাও। অথচ কাউকে ধরে জেলে দিতে হলে তার নামে ওয়ারেন্ট, চার্জশিট দিতে হয়। একটি পরিবারের কাউকে জেলে দেয়া মানে সে পরিবারটিকে ধ্বংস করে দেয়ার শামিল। আবার রিমান্ডের নামে চলে অত্যাচার। উচ্চ আদালত জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলছেন কিন্তু মানা হচ্ছে কী। তিনি বলেন, হাস্যকর কিছু বিষয় দেখা যায়। মানহানি বিষয়ে একজন মামলা করতে পারে। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে ২২টি মামলা করা হয়েছে। মানুষের অধিকার নেই। পাকবাহিনী ’৭১-এ জনগণের ওপর জুলুম নির্যাতন করেছে টিকে থাকার জন্য। কিন্তু টিকে থাকতে পারেনি। বর্তমান সরকার এখন একই কাজ করছে। এর উত্তরণে দেশের তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। তরুণদের মাধ্যমে সব সমস্যা দ‚র করলে সত্যিকারের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা হবে বলে আমি আশা রাখি।
বাংলাদেশ মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ পরিষদের সভাপতি নুরুল হুদা মিলু চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন সাবেক রাষ্ট্রদ‚ত মো. মোফাজ্জল করিম, সাবেক মন্ত্রী শেখ শহিদুল ইসলাম, ব্যারিস্টার সারোয়ার হোসেন, অ্যাডভোকেট মাহবুব চিশতি মাসুম, তালুকদার মনিরুজ্জামান মনির, নাসিরুদ্দিন প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।