মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতের লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি) পাশ করিয়ে নিয়েছে মোদি সরকার। কিন্তু তা নিয়ে ঘরে-বাইরে তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, ওই বিলে ধর্মীয় বৈষম্যকে স্বীকৃতি দেয়ায় এ বার অমিত শাহ-সহ ভারতের শীর্ষস্থানীয় নেতা-মন্ত্রীদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারির দাবি উঠল মার্কিন কংগ্রেসে।
গত সোমবার লোকসভায় নাগরিকত্ব বিলটি পেশ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তা নিয়ে প্রায় ১২ ঘণ্টার তর্ক-বিতর্ক চলার পার, সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থনে মধ্যরাতে সেটি পাশ হয়ে যায়। এ বার রাজ্যসভায় বিলটি পাশ হওয়ার অপেক্ষা। সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকলেও, সেখানেও বিলটি পাশ করিয়ে নেওয়া যাবে বলে আত্মবিশ্বাসী মোদি সরকার।
আর তাতেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত কমিশন (ইউএসসিআইআরএফ)। তাদের মতে, ওই বিলে নাগরিকত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে ধর্মীয় মানদণ্ড বেঁধে দেয়া হয়েছে, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক। সোমবারই সংগঠনের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি পেশ করেছেন, তাতে ধর্মীয় মানদণ্ড বেঁধে দেয়ায় ইউএসসিআইআরএফ ভীষণ উদ্বিগ্ন। সংসদের দুই কক্ষে বিলটি যদি পাশ হয়ে যায়। তাহলে অমিত শাহ-সহ সে দেশের অগ্রগণ্য নেতাদের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানো উচিত মার্কিন সরকারের।’
নাগরিকত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে ধর্মীয় মানদণ্ড বেঁধে দেওয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক বলেও মন্তব্য করে ইউএসসিআইআরএফ। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল একটি অত্যন্ত বিপজ্জনক মোড়, যা ভুল পথে এগোচ্ছে। ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ, বহুত্ববাদী ইতিহাস এবং সে দেশের সংবিধান, যা কি না ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সমানাধিকারের কথা বলে, এই বিল তার পরিপন্থী।’
আসামে নাগরিক পঞ্জি নিয়েও এর আগে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল ইউএসসিআইআরএফ। ইচ্ছাকৃত ভাবে মুসলিমদের বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে সেইসময় দাবি করেছিল তারা। নাগরিক সংশোধনী বিল নিয়েও একই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ওই সংগঠন। তাদের দাবি, ‘আমাদের আশঙ্কা, নাগরিকত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে ধর্মীয় পরীক্ষা নিচ্ছে ভারতীয় সরকার, যা কি না কয়েক কোটি মুসলিমের নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নেবে।’ গত এক দশকে ধর্মীয় বৈষম্য নিয়ে তাদের বার্ষিক রিপোর্টকে ভারত সরকার কোনওরকম গুরুত্ব দেয়নি বলেও দাবি করা হয়েছে ওই বিবৃতিতে।
তবে তাদের এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর মুখপাত্র রবীশ কুমার এ দিন টুইটারে একটি বিবৃতি পোস্ট করে লেখেন, ‘ইউএসসিআইআরএফ-এর দাবি সম্পূর্ণ ভুল। পক্ষপাতদুষ্ট মন্তব্য করেছে তারা। বিষয়টি সম্পর্কে ভাল মতো ওয়াবিহালও নয় ওরা। এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপের অধিকারও নেই ওদের।’
দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তৃতীয় কোনও দেশের হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না বলে এর আগে ইউপিএ আমলেও বার বার জানানো হয়েছিল। এমনকি, ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে সমীক্ষা চালাতে ভারতে আসতে চাইলে, ইউএসসিআইআরএফ-এর কর্মকর্তাদের ভিসার আবেদনও নাকচ করে দেয় তৎকালীন সরকার। এমনিতে তাদের সুপারিশ মানতে বাধ্য নয় কোনও দেশ। তবে মার্কিন সরকারে তাদের রিপোর্টের অসীম গুরুত্ব রয়েছে। ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে কোনও দেশ বা ব্যক্তির উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানো যায় কি না, ইউএসসিআইআরএফ-এর রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই সিদ্ধান্ত নেয় মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। সূত্র: টিওআই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।