Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার নান্দনিক পর্যটন স্পটের নাম বান্দরবান জেলা

বান্দরবান থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৬:০৩ পিএম

বান্দরবান পার্বত্য জেলা। বিস্তৃত পর্বতরাজির কোল ঘেঁষে এঁকেবেঁকে বয়ে চলা চঞ্চল্য নদী সাঙ্গু, মাতামুহুরী ও বাঁকখালী। পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে সবুজের মেলা, বয়ে চলা পাগাড়ি ঝর্না। ১১টি নৃতাত্তিক জাতিগোষ্ঠী, পাহাড়ের গায়ে ছোট ছোট মাচাং ঘরে নিত্যদিনের বসতি, জুম চাষ, দিন শেষে ঘরে ফেরা, সন্ধ্যাবেলা পাখির কলকাকলি, বৈশাখের উৎস-সব মিলিয়ে রূপকথার কোনো কল্পকাহিনী মনে হলেও এর সবই রয়েছে এখানে। বান্দরবান জেলা নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে ইতোমধ্যে দেশি-বিদেশী পর্যকটদের কাছে একটি অতি প্রিয় গন্তব্য হিসেবে পরিচিত হতে শুরু করেছে। সবুজের সমারোহে, পাহাড়ে নিস্তব্ধতায়, প্রিয়জনদের একান্ত সান্নিধ্যে কয়েকটা দিন স্বরণীয় করে রাখতে চাইলে অতিথি হতে পারেন বান্দরবানে। তাই অনেকের মতে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া নান্দনিক পর্যটন স্পটের নাম বান্দরবান পার্বত্য জেলা ।

বান্দরবান জেলার নামকরণ
বান্দরবান জেলা নামকরণ নিয়ে একটি বিশেষ কাহিনী রয়েছে। পুরনো বাসিন্দদের মতে, এলাকাটি এক সময় অসংখ্য বানরে পরিপূর্ণ ছিল। বানরগুলো নদীর পাড়ে সারিবদ্ধভাবে পাশ্ববর্তী জঙ্গলে ফলমূল অন্বেষণে যেত। একইভাবে সন্ধা নামলেই সারিবদ্ধভাবে ফিরে আসত। সারিবদ্ধভাবে বানরেরা নদীর পাড় দিয়ে পারাপরের দৃশ্যটিকে দূর থেকে দেখলে বাধের মত মনে হত। যেটি মারমা সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। একে তারা তাদের ভাষায় ‘ম্যক্ছি’ বলত। বাংলায় ‘ম্যক্’ অর্থ বান্দর (বানর)। এবং ‘ছি’ অর্থ বাঁধ (বান)। অর্থাৎ বান্দরের বাঁধ (বান্দরবান)। কালের বিবর্তনে এবং ধ্বনি পরিবর্তনের মাধ্যমে স্থানটি বান্দরবান নামে অভিহিত হয়।

যাতায়াত ব্যবস্থা
বান্দরবানে পর্যকটদের পরিবহন সুবিধা দেবার জন্যে রয়েছে জীপ, মাইক্রোবাস, ল্যান্ড রোভার, নিশান পেট্রোল, প্যাজেরা, চাঁদের গাড়িসহ বিভিন্ন মানের গাড়ি। পরিবহন মালিক সমিতির নির্ধারিত ভাড়ায় এসব গাড়ির সার্ভিস দিয়ে থাকে। শহরে ট্রাফিক মোড়ে সিএনজি স্ট্যান্ড। গাড়ির মান ভেদে ভাড়ার তারতম্য হয়। এখানে সর্বনি¤œ এবং সর্বোচ্চ ভাড়া উল্লেখ করা হয়েছে।

কীভাবে আসবেন
ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও রাঙামাটি থেকে সরাসরি বাস সার্ভিস রয়েছে। চালু আছে এসি, নন-এসি বিভিন্ন মানের বাস। ঢাকা থেকে বান্দরবান আসতে সময় লাগবে প্রায় ৮ থেকে ১০ ঘন্টা। চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট বাস টার্নিমাল হয়ে বাসে আসলে সময় লাগবে প্রায় ২ঘন্টা।

সাইরু রিসোর্ট
বান্দরবান জেলার “সাইরুল রিসোর্ট” পর্যটন প্রেমীদের সর্বশেষ সংযোজন। পর্যকটদের মতে, এটি দার্জিলিংকে ও হার মানাবে। জেলা শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে চিম্বুক সড়কে ওয়াই জংশন নামক সেনা ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় প্রকৃতিক অপরূপ পাদদেশে এটি অবস্থিত। সাইরু নাম করণে ১টি বেদনা বিধূর ইতিহাস ও রয়েছে। সাইরুর অভ্যন্তরে নিজস্ব টমটম নিয়ে আঁকাবাঁকা পাহাড়ে নি:শব্দ গতিতে প্রতিনিয়ত পর্যটকদের নিয়ে চলা সাইরুর জিরো পয়েন্টে নিয়ে যাওয়াকে দারুন আন্দোলিত করা। সাইরুর অন্যতম নান্দনিক নিদর্শন হল সুইমিংপুল। যা ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৮০০ ফুট উপরে অবস্থিত। এখানে আরও উপভোগ্য বিষয় হচ্ছে, সাইরুর পর্বত চূড়ায় একিই স্থান থেকে সূর্যোদয় ও অস্থ যাওয়ার মনোরম দৃশ্য অবলম করা যায়।


মেঘলা
বান্দবানের প্রবেশ পথেই জেলা পরিষদ অফিস সংলগ্ন এলাকায় মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স। ছায়া সুনিবিড় বৈচিত্র্যে ভরা মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স পেতে পারেন অনাবিল আনন্দের সন্ধান। জেলা প্রশাসনের পরিচালনায় বান্দরবান শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরের এই পর্যটন কেন্দ্রে রয়েছে স্বচ্ছ পানির নয়নাভিরাম হ্রদ, হ্রদের ওপর দু’টি ঝুলন্ত সেতু, উন্মুক্ত মঞ্চ, একাধিক পিকনিক স্পট, অরুন সারকী মিউজিয়াম, ক্যান্টিন, মিনি চিড়িয়াখানা, হ্রদের পানিতে প্যাডেল বোটে চড়ার ব্যবস্থা, বিশ্রামাগার, শিশুপার্ক ইত্যাদি

নীলাচল
শহরে খুব কাছেই ১৮শ ফুট পাহাড় চূড়ায় এই পর্যটন স্পট বান্দবানের পর্যটন শিল্পে যোগ করেছে ভিন্নমাত্রা। আকাশ ছোয়ার স্বপ্ন সবারই থাকে। নীলাচল থেকে আকাশ ছোঁয়া না গেলেও মনে হবে আকাশ আপনাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। মেঘের রাজ্যে হারিয়ে যাবার স্বপ্ন যদি কারো থাকে, তাহলে সে স্বপ্নও পূরণ হবে নীলাচাল গেলে। বর্ষায় সেখানে চলে রোদ আর মেঘের লুকোচুরি খেলা। শীতল পরশ বুলিয়ে শুভ্র মেঘ মুছে দেবে আপনার জীবনের সমস্ত ক্লান্তি। নীলাচল থেকে এক নজরে বান্দরবান শহরের পুরোটা দেখা যায়। শহর থেকে নীলাচলের দূরত্ব ৬ কিলোমিটার। নীলাচলের কোল ঘোঁষেই তঞ্চঙ্গ্যা, মারমা ও ত্রিপুরাদের বসবাস। নীলাচলে দাঁড়ালে চারপাশে দেখা যাবে সারি সারি পর্বতমালা। মনে হবে আকাশ যেন নুয়ে পড়েছে পাহাড় চূড়ায়।
শৈল প্রপাত
বান্দরবান শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত প্রাকৃতিক ঝর্না শৈলপ্রপাত। পাহাড়ের কোল বেয়ে স্বচ্ছ পানির অবিরাম ঝর্নাধারা শৈলপ্রপাত বান্দরবানের আকর্ষণীয় পর্যটন স্পটের একটি। দূর থেকে দূরে ছুটে চলা হিমশীতল পানিতে গা জুড়াতে পর্যটকদের আনাগোনা লেগে থাকে সব মৌসুমে। পাহাড়ের পাদদেশে ঝর্নার পাড়ে পিকনিক করার উপযোগী পরিবেশ রয়েছে। বন-বানীর নিস্তব্ধতার মাঝে পাখির কলাকাকলিতে মুখর শৈলপ্রপাত নগর জীবনের কোলাহল থেকে অনেক দূরে।
শৈলপ্রপাতে গেলেই চোখে পড়বে বম নৃ-গোষ্ঠীর জীবনধারা। এখানে রয়েছে বমদের কয়েকটি পাড়া। তাদের হাতে বোনা চাদর, মাফলার, বেডশীটসহ বেত ও বাঁশের তৈরি বিভিন্ন আসবাব ও তৈজসপত্র এখানে পাওয়া যায় এখানে। বন নারী পুরুষরা শৈল প্রপাতকে ঘিরে এসব জিনিসের পসরা সাজিয়ে বসে। নিজেদের বাগানে উৎপাদিত তাজা আনারস, পেঁপে, কাঁঠালসহ নানা ফলমূল ও এখানে বিক্রি করেন তারা।

বুদ্ধ ধাতু জাদি
বান্দরবানের উপশহর বালাঘাস্থ পুল পাড়া নামক জায়গায় এর অবস্থান। অনেক উঁচু পাহাড়ের চূড়ায় নির্র্মিত এ সদৃশ্য জাদি দেশের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম তীর্থস্থান। থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারের স্থাপত্য নকশা ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে জাদিটি। এর আরেক নাম মহাসুখ প্রার্থনা পূরক বুদ্ধধাতু চেতী। এখানে রয়েছে একটি মিউজিয়াম। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অনেক প্রাচীন আমলে তৈরি অন্যন্য সব মূর্তি নিয়ে গঠিত হয়েছে মিউজিয়ামটি।
এই জাদি থেকে এক নজরে বান্দরবানের বালাঘাটা উপশহর এবং সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখা যায়। জাদির চূড়ায় অবস্থিত ঘন্টার টুংটাং আওয়াজ আর হু-হু করা হাওয়ার আকর্ষণ ছেড়ে ফিরতেই মন চাইবে না কারো। এছাড়া এখান থেকে বান্দরবান রেডিও স্টেশন, চন্দ্রঘোনা যাওয়ার আঁকাবাকা পিচঢালা পথও দর্শণীয়।

প্রন্তিক লেক
প্রায় ২৫ বছর জায়গা জুড়ে সৃষ্ট কৃত্রিম জলাশয় প্রান্তিক লেক। এর জলাভূমির আয়তন ২৫ একর হলে ও পুরো কমপ্লেক্সটি আরো অনেক বড়। এর স্পটকিস্বচ্ছ জলে বাতাসের খোলা দেখে আপনি কাটিয়ে দিতে পারেন সারা দিন। বিশেষ করে পিকনিকের জন্য এটি অত্যন্ত লোভনীয় স্থান হিসাবে ইতোমধ্যে পরিচিত পেয়েছে সবত্র। এটি বান্দরবান-কেরণীহাট সড়কের পাশে হলুদিয়া নামক জায়গার অবস্থিত। মূল সড়ক থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৫ কিলোমিটার। এলজিইডির উদ্যোগে লেকটিকে উম্মুক্ত মাটির মঞ্চ, পিকনিক স্পট, বিশ্রামাগার এবং একটি উঁচু গোল ঘর নির্মাণ করে হয়েছে।

চিম্বক
সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে আনুমানিক ১ হাজার ৫শ ফুট উঁচু চিম্বুক পাহাড়ের চূড়া। সমতল থেকে যে পাহাড়গুলো অনেক উঁচু মনে হয়, চিম্বুক পাহাড়ের চূড়া থেকে সেগুলোকে মনে হবে ছোট ছোট টিলার মত। চিম্বুক পাহাড়ের উপর থেকে পরিস্কার আবহাওয়ায় কক্সবাজারের সমুদ্র পর্যন্ত দেখা যায়। পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথে সর্পিল গতিতে চিম্বুক পাহাড়ের দিকে যেতে যেতে অনেক পর্যটকই এটিকে বাংলার দার্জিলিং হিসেবে অ্যাখ্যায়িত করেন। এর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো বর্ষকালে। ভারী মেঘ তখন একদম নিচে নেমে এসে আপনাকে ঢেকে ফেলবে। মেঘের রাজ্যে হারিয়ে যাওয়া কল্পনার ব্যাপার হলেও এখানে তা সত্যি হয়ে যায় কখনো কখনো। এটি বান্দরবান শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। গাড়ি নিয়ে সরাসরি চিম্বুক চূড়ায় পৌঁছা যায়্ চিম্বুক যেতে যেতে আশেপাশে আপনার চোখে পড়বে ¤্রাে নৃ-গোষ্ঠীর গ্রাম।

নীলগরি
সেনাবাহিনী পরিচালিত নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্র বান্দরবানে পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। বান্দরবান শহর থেকে নীলগিরির দিকে যেতে যেতে পাহাড় ক্রমশ: উঁচু হবে। রাস্তার দু’পাশে ঘন সবুজে ঢাকা সারি সারি পাহাড়, জুমচাষ আর ছোট ছোট গ্রাম আপনাকে নিয়ে যাবে এক অন্য জগতে। নীলগিরি ও এর আশপাশের এলাকাগুলোতে প্রায় সারা বছরই মেঘের আনাগোনা লেগে থাকে। রাস্তার কোনো বাঁকে এই রোদের দেখা পেলেন তো পরের বাঁকে আবার সারি সারি মেঘ ছুটে এসে আপনাকে ঢেকে দেবে। মেঘ ছুঁতে চাওয়ার সাধ যদি থাকে, তাহলে নীলগিরিই আপনার কাঙ্কিত ঠিকানা।
এখানকার রাস্তা বেশ ভাল। বান্দরবান শহর থেকে নীলগিরি যাবার রাস্তাটি সেনাবাহিনী নির্মিত অত্যন্ত উন্নতমানের রাস্তা। নীলগিরির কটেজ ও বিভিন্ন স্থাপনার নির্মাণশৈলী পর্যটকদের মুগ্ধ করে খুব সহজেই। বান্দরবান শহর থেকে নীলগিরির দূরত্ব ৪৭ কিলোমিটার।

রিজুক ঝর্ণা
পাহাড়ের গা বেয়ে অবিরল ধারায় সাঙ্গু নদীর বুকে ঝরে পড়া ও জলপ্রপাতটি বান্দরবান শহর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে রুমা উপজেলায় অবস্থিত। প্রায় ৩শ’ ফুট উঁচু থেকে ঝরে পড়া জলপ্রপাতের রিমঝিম সুরের মুর্ছনা আপনাকে নিয়ে যাবে অন্য এক জগতে। এর আশেপাশে জায়গাগুলোও মনকাড়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ভরপুর। রিজুকের আশপাশে মামরা, ¤্রাে ও বন নৃ-গোষ্ঠীর গ্রাম রয়েছে। রিজুক দেখতে গিয়ে নৌকা ভ্রমণের আনন্দ আর ঝর্নার অপরূপ দু’টোই উপভোগ করা যায়। ঝর্নার শীতল জলের ধারায় গা জুড়িয়ে নিতে চাইরে এটিই উপযুক্ত স্থান।

বগা লেক
পাহাড় চুড়ায় প্রায় ১৫ একর জুড়ে স্বচ্ছ জলের মনোরম সরোবর এটি। এ লেক নিয়ে কিংবদন্তী প্রচলিত আছে। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এই লেকের ভেতরে ড্রাগন দেবতা বাস করে। এর গঠনশৈলী দেখে অনেকে এটিকে মৃত আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ বলেও ধারণা করেন। এটি রুমা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। শুকনো মৌসুমে রুমা বাজার থেকে জীপে যাওয়া যায়। তবে বর্ষা মৌসুমে বগা লেক যেতে হলে পায়ে হাঁটা ছাড়া উপায় নেই।

কেওক্রাডং
দেশের উচ্চতম পর্বকশৃঙ্গের মধ্যে একটি হলো কেওক্রাডং। এর উচ্চতা ৩ হাজার ১৭২ ফুট। এটি রুমা উপজেলার রেমাক্রী প্রাংসা মৌজার পাসিং ¤্রাে পাড়ার কাছে অবস্থিত। রুমা উপজেলা সদর থেকে এটি ২৫ কিলোমিটার দুরে। আর বগা লেক থেকে এটির দূরত্ব প্রায় ৮ কিলোমিটার। শুকনো মৌসুমে যানবাহনে বগা লেক থেকে কেওক্রাডং যাওয়া সম্ভব হলেও বর্ষা মৌসুমে সেখানে যাওয়ার একমাত্র উপায় পায়ে হাঁটা।
শুকনো মৌসুমে রুমা বাজার থেকে জীপে চড়ে কেওক্রাডং পাহাড়ের কাছাকাছি যাওয়া সম্ভব। এছাড়া বগা লেক থেকে হেঁটে কেওক্রাডং যাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে ভোরে রওনা দিয়ে চিংড়ি ঝর্ণা ও হারমন পাড়া পেরিয়ে দার্জিলিং পাড়া হয়ে কেওক্রাডংয়ে পৌছতে হবে। স্থানীয় গাইডের সহায়তায় এসব এলাকা পেরিয়ে কেওক্রাডং পৌঁছানো মোটেও কঠিন নয়। শুধু হাটার মনোবল এবং শারিরীক সক্ষমতা থাকতে হবে।

তাজিংডং
এটিও বাংলাদেশের উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গগুলোর মধ্যে অন্যতম। তাজিংডংকে এক সময় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পাহাড় হিসেবে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি তথ্যে উল্লেখ করা হলেও পরে বিভিন্ন ব্যক্তিও প্রতিষ্ঠান বান্দরবানে আরো উঁচু পাহাড়ের তথ্য প্রকাশ করেছেন। তবে এগুলোর কোনোটিই এখনো সরকারিভাবে স্বীকৃত হয়নি। রুমা উপজেলা সদর থেকে তাজিংডংয়ের দূরত্ব ৩৪ কিলোমিটার। বান্দরবানের রুমা ও থানচি দুই উপজেলা থেকেই তাজিংডং যাওয়া যায়।

নাফাখুং ও রেমাক্রীখুং
বান্দরবানের থানচি উপজেলায় অবস্থিত অপরূপ সুন্দর জলপ্রপাত এই নাফাখুং। স্থানীয় মারমা ভাষায় ‘খুম’ অর্থ ঝর্ণা বা প্রপাত। রেমাক্রী খালের পাানি পাথুরে পাহাড় বেয়ে নামতে গিয়ে এই জলপ্রপাতের সৃষ্টি হয়েছে। এর নামকরণের আরো কটি গল্প শোনা যায়। নাফা নামের এক প্রকার মাছ আছে এখানে। মারমা ভাষায় ‘মুখ’ অর্থ লাফ দেওয়া। মাছগুলো ¯্রােতের বিপরীতে লাফিয়ে ঝর্ণা পেরোবার চেষ্টা করে বলেই এই জলপ্রপাতের নাম নাফাখুং হয়েছে বলে অনেকে ধারণা করেন। নামের এক্ষেত্রে খুং এবং খুম দু’টো শব্দই সমান প্রচলিত। নাফাখুম যাবার পথেই রেমাক্রী বাজারের কাছে রয়েছে রেমাক্রীখুম। এর রূপেও যে কোনো সৌন্দর্য পিপাসু মানুষের মন মাতিয়ে দেবে সহজেই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ