Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনায় বন্ধ হলো দেশের পর্যটন স্পট

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০৬ এএম | আপডেট : ১২:২০ এএম, ২ এপ্রিল, ২০২১

করোনার নতুন করে সংক্রমণ বাড়ায় এবং বিরূপ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় গতকাল থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে দেশের পর্যটন স্পটগুলো। আগামী ১৪ দিন স্পট গুলো বন্ধ থাকবে বলে সরকারের এক আদেশে জানা গেছে। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্যে প্রতিবেদন :
কক্সবাজার ব্যুরো জানায় : গত বছর এপ্রিল মাসে করোনাভাইরাস মারাত্মক আকার ধারণ করলে লকডাউন দেয়া হয়েছিল। ওই সময় ভ্রমণ কড়াকড়ি করা হয়েছিল কক্সবাজার সৈকত এলাকায়। তখন সৈকত এলাকা হয়ে পড়েছিল পর্যটক শূন্য। করোনার ২য় ঢেউয়ে এবার এখনো লকডাউন ঘোষণা করা না হলেও কক্সবাজার সৈকতসহ পর্যটন এলাকা ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। এতে সৈকতসহ পর্যটন এলাকা হয়ে পড়েছে পর্যটক শূন্য। গতকাল বিকেলে কক্সবাজার সৈকতের লাবনী পয়েন্টে গিয়ে এই দৃশ্য দেখা গেছে। দুই দিন আগেও যেখানে ছিল লাখো পর্যটকের পদচারণা।

এদিকে কক্সবাজার এর হোটেল মোটেল জোনে খবর নিয়ে জানা গেছে, পর্যটন এলাকায় ভ্রমণে এখনো নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়নি। তবে পর্যটক ৫০ ভাগ সীমিত করণের নির্দেশনা দিয়ে পর্যটকদের কক্সবাজার ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
বান্দরবান জেলা সংবাদদাতা জানান : করোনা সংক্রমন রোধে বান্দরবানে সব ধরণের পর্যটন স্পট গুলো বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন। গত বুধবার জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরিজি এর সভাপতিত্বে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় করণীয় শীর্ষক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এসময় সভায় স্বাস্থ্য বিভাগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আবাসিক হোটেল, রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতি, সরকারী-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

বান্দরবান আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলা করণীয় সভায় স্বাস্থ্যবিধি ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ মেনে হোটেল চালাতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দুজনের কক্ষে একজন করে ভাড়া দেয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে আবাসিক হোটেল বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়নি।

জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরিজি জানান, করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। আবাসিক হোটেল গুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে দু’সপ্তাহ পর পরবর্তী নির্দেশনা দেয়া হবে। এবং সকল গণ-পরিবহণে ৫০ শতাংশের অধিক যাত্রী পরিবহণ করা যাবে না এবং ঠিক একইভাবে সকল হোটেল-মোটেলে ৫০ শতাংশ বুকিং করা যাবে। জেলা প্রশাসক করোনা সংক্রামকের এই সময়টা আগামী দুই সপ্তাহের জন্য বান্দরবানে পর্যটকদের না আসার অনুরোধ করার পাশাপাশি সরকারি নির্দেশনা মেনে স্বাস্থ্যবিধি অনুসারে করোনা মোকাবেলায় সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবানও জানান।
মৌলভীবাজার জেলা সংবাদদাতা জানান : প্রবাসী ও পর্যটন অধ্যুষিত মৌলভীবাজার জেলা দেশের মধ্যে করোনা সংক্রমণের পরিসংখ্যানে শীর্ষে রয়েছে। গতকাল বিকেলে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে এক প্রেসব্রিফিং জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় থাকা জেলাবাসীকে সচেতন করতে ও করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রনে রাখতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয় পৌরসভা। প্রেসব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া, সিভিল সার্জন চৌধুরী ডা. মো. জালাল উদ্দিন মুর্শেদ, মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র মো. ফজলুর রহমান।
প্রেসব্রিফিংয়ে জানানো হয়, সংক্রমণ রোধে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টার পর জেলার সব দোকানপাট বন্ধ রাখা এবং জেলার সকল পর্যটন স্পট বন্ধ রাখা হয়েছে। জাতীয় ভাবে স্বাস্থ্য বিভাগের করোনার ১৮টি নির্দেশনার পাশাপাশি স্থানীয় ভাবে আরও ১১টি নির্দেশনা মানার জন্য সিদ্ধান্ত নির্দেশ জারি করা হয়।

জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে নিয়ে নানা উদ্যোগ নিয়ে মাঠে সক্রিয় রয়েছে প্রশাসন। সংক্রমণ রোধে জনসচেতনতা বাড়তে ইতোমধ্যে জনসমাগমের স্থানগুলোতে কয়েক দিন থেকেই চালিয়েছেন প্রচার প্রচারণা। বিতরণ করছেন মাস্ক। জানানো হয়েছে আইন অমান্য করে অপ্রয়োজনে ঘুরাফেরা, জটলা ও আড্ডা দিলেই জেল জরিমানাসহ নানা কঠোর নির্দেশনা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার পর জেলার সকল দোকানপাট (ফার্মেসী ব্যতিত) বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। ব্যাংকসহ অন্যান্য আর্থিক ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো দিনের বেলায়ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলার কথা বলা হয়। গণপরিবহন ও ছোট যানবাহনকে অর্ধেক যাত্রী পরিবহন ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
ওই প্রেস ব্রিফিংয়ের পূর্বে একইস্থানে জেলার ব্যবসায়ী, রাজনীতিবীদ, সামাজিক সংগঠন, জনপ্রতিনিধি, গাড়ি মালিক ও চালক সংগঠন ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে করোনা সংক্রমণ কমাতে করণীয় বিষয়ে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) উপজেলা সংবাদদাতা জানান : করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের জন্য এ নিষেধাজ্ঞা জারি করে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন। গত বুধবার রাত নয়টায় সকল হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট বন্ধ ঘোষণা করে গুরুত্বপূর্ন স্থানে মাইকিং ও পর্যটন ব্যবসায়ীদের নিয়ে সভা করেছে মহিপুর থানা পুলিশ ও ট্যুরিস্ট পুলিশ। অপরদিকে পটুয়াখালী জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের বরাত দিয়েও মাইকিং করা হয়েছে হোটেল মোটেল বন্ধ রাখার জন্য। এছাড়া বুধবার রাত থেকেই কুয়াকাটা সৈকতে অবস্থানরত সকল পর্যটকদের বাড়ি ফিরে যেতে অনুরোধ জানিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। এদিকে গতকাল থেকে সন্ধ্যা সাতটার পর জেলার সকল দোকান বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম চৌধূরী জানান, আগামী ১৫ দিনের জন্য এ আদেশ বলবৎ থাকবে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত পর্যটন সংশ্লিষ্ট সকল ধরনের সেবা বন্ধ থাকবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ