মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারত প্রতিবেশী পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে যাওয়া অমুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিতে আনা বিলে অনুমোদন দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। বুধবার সকালে নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল বা সিএবি নামের এই বিলটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। দেশটির গণমাধ্যম এনডিটিভির খবরে এমন তথ্য জানা গেছে।
বিলটি পাস হওয়ায় বাংলাদেশ থেকে যেসব হিন্দু ২০১৪ সাল পর্যন্ত মূলত আসাম এবং উত্তর পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে চলে এসেছেন তারা ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকারী হবেন। এ আইনের অধীনে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে আসা হিন্দু, খ্রিষ্টান, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ ও পারসিদের নাগরিকত্ব দেয়া হবে। নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের অবৈধ অভিবাসীদের নাগরিকত্ব দিতে আইনি বাধা দূর করেই চলতি আইনে সংশোধন করে নতুন বিলটি উপস্থাপন করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যখন বিলটি পার্লামেন্টে উপস্থাপন করবেন, তখন বিজেপির পার্লামেন্ট সদস্যদের সবাইকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। আইনটিতে মুসলমানদের বাদ দেয়ায় তা ধর্মনিরপেক্ষ নীতির বিরোধী বলে সমালোচনা করেছেন বিরোধীরা।
রাজনাথ সিং বলেন, প্রতিবেশী তিনটি দেশ মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ। সেখানে বসবাস করা অমুসলিমরা নির্যাতনের শিকার।
এদিকে বিলটি পাস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধিতা শুরু করেছে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজনৈতিক দলগুলো। সোমবার এই ‘বিতর্কিত’ বিল নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের সমালোচনায় এনডিএ ছাড়ে আসামের রাজনৈতিক দল আসাম গণ পরিষদ (অগপ)।-বিবিসি।
এই আইনের কারণে নিজেদের ভূমিতে কোনঠাসা হয়ে পড়ার আশঙ্কায় প্রথম থেকেই আসামের জাতীয়তাবাদী দলগুলো এর বিরোধিতা করে আসছিল। তাদের মতে এই বিলটি ১৯৮৫ সালের আসাম অ্যাকর্ড বা আসাম চুক্তি বিরোধী।
মঙ্গলবার লোকসভায় পাশ হওয়া সংশোধিত বিলটির ফলে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে নীপিড়নের শিকার হয়ে ভারতে পাড়ি জমানো হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি, শিখ ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকজন শরণার্থী হিসেবে ভারতে বসবাসের অধিকার ও পরবর্তীতে নাগরিকত্ব পাবেন।
নাগরিকত্ব পাওয়া এই অভিবাসীদের “সারা দেশে ভাগ করে দেওয়া হবে” বলে মঙ্গলবার সংসদে জানিয়েছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং।
এই আইনটি ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের সংশোধিত রূপ। বর্তমান আইনে ভারতে ১২ বছর বসবাসের পর নাগরিকত্ব পাওয়ার নিয়ম থাকলেও নতুন আইনে তা কমিয়ে ৭ বছর করা হয়েছে। এই সংশোধনী প্রস্তাবটি ২০১৬ সালে লোকসভায় উত্থাপন করা হলেও তখন তা অনুমোদন পায়নি।
এদিকে বিলটিকে ভারতীয় সংবিধানের অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিরোধী হিসেবে আখ্যায়িত করে এর বিরোধিতা করেছে কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ বলেন, “এই আইনটি সংবিধান বিরোধী নয়, এর ফলে প্রতিবেশী তিনটি দেশ থেকে নির্যাতনের শিকার সংখ্যালঘুরা ভারতে আশ্রয়ের সুযোগ পাবে, যেহেতু ভারত ছাড়া তাঁদের আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।”
আইনটিকে ক্ষমতাসীন দলের সাম্প্রদায়িক অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের প্রতিফলন হিসেবে চিহ্নিত করে অন্যান্যদের সাথে মুসলমানদেরকেও আইনে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সংসদে দাবি জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
অপরদিকে নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে তীব্র বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে আসামসহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল। বিজেপির সঙ্গে রাজনৈতিক জোট থেকে সোমবার বের হয়ে যাবার ঘোষণা দিয়েছে অসম গণ পরিষদ।
আসামে স্থানীয় সংগঠনগুলোর ডাকে মঙ্গলবার অর্ধ দিবস বন্ধ পালিত হয়েছে। ত্রিপুরায় আন্দোলনকারীদের সাথে সংঘর্ষে দুজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার সংবাদ দিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম।
অভিবাসন বিরোধী সংগঠন আসাম গণ পরিষদের সংগঠক অতুল বোরা বেনারকে বলেন, “এই বিলটি আইনে পরিণত হলে বর্তমানে অবৈধভাবে আসামে বাস করা দেড় লাখের বেশি বাংলাদেশি হিন্দু নাগরিকত্ব পাবে। আরো অংসখ্য বাঙালি হিন্দু আসামে প্রবেশ করবে। এর ফলে বাঙালি আগ্রাসনের মুখে আসামের মানুষজনের কর্মসংস্থানসহ সংস্কৃতিও মারাত্মকভাবে বিপন্ন হয়ে পড়বে।”
তিনি বলেন, “প্রত্যেক বাংলাদেশিকে আসাম ছাড়তে হবে। বাছাই করা কিছু লোকের জন্য আলাদা নিয়ম হতে পারে না। আমরা আসাম চুক্তি বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর, যাতে বলা হয়েছে, অবৈধভাবে আসামে প্রবেশ করা প্রত্যেক বিদেশিকে তাদের নিজের দেশে ফেরত পাঠানো হবে।”
আসামের নাগরিকপঞ্জি অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার পর থেকে ভারতে পাড়ি জমানো সব বাংলাদেশি অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচিত।
ভারতীয় সংসদের লোকসভায় পাশ হওয়া বিলটি রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর আইনে পরিণত হওয়ার আগে সংসদের উচ্চকক্ষ বা রাজ্যসভায় পাশ হতে হবে। তবে রাজ্যসভায় ক্ষমতাসীন বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।