ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দিয়ে একের পর এক অবৈধ বসতি গড়ে তুলছে ইসরাইল। এবার দখলকৃত পশ্চিমতীরের হেবরন শহরে নতুন করে অবৈধ বসতি গড়ার পরিকল্পনা করছে ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরাইল। খবর আনাদোলুর।
ইসরাইল গত বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেছে যে জেরুসালেমের উত্তরে ১১ হাজার অবৈধ আবাসন ইউনিট অনুমোদন দেয়া হবে। ফিলিস্তিনের দখলকৃত পশ্চিম তীরে ইসরাইলের বসতিকে বৈধতা দেয়ার মার্কিন সিদ্ধান্তের কয়েক সপ্তাহ পরে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
দখলদার রাষ্ট্রটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী নাফতালি ব্যানেট এরই মধ্যে ওই অবৈধ বসতি স্থাপনের অনুমোদনও দিয়েছেন। ইতিমধ্যে হেবরন পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর নতুন করে ওই অবৈধ বসতি গড়ার অনুমোদনের কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে।
প্রাচীন শহর হেবরনের ইব্রাহিমি মসজিদ ও ইহুদি বসতি আব্রাহাম অ্যাভিনিউর মধ্যবর্তী স্থানে পুরনো মার্কেট ভেঙে নতুন ওই ইহুদি বসতি গড়ে তোলা হবে। হেবরনে এক লাখ ৬০ ফিলিস্তিনির বসবাস। অন্যদিকে সেখানে গড়ে তোলা অবৈধ বসতিতে কড়া নিরাপত্তাবেষ্টনীর মধ্যে বাস করছে ৫০০ ইহুদি সেটেলার।
ইস্ট মনিটরের রিপোর্ট অনুযায়ী, নতুন বসতি ইউনিটগুলো দখলকৃত জেরুসালেমের উত্তরে অবৈধ আটারোট শিল্প বসতিতে ফিলিস্তিনিদের মালিকানাধীন ৫৪ হাজার বর্গমিটার জায়গার ওপরে নির্মিত হবে।
১৯৬৭ সালে ইসরাইলের দখল করা অঞ্চলটি সার্বভৌম ইসরাইলের অঞ্চল নয়, ফিলিস্তিনিরা ইসরাইলি নাগরিক নয় এবং তাদের ভোট দেওয়ার অধিকার নেই। আজও পূর্ব জেরুসালেমে প্রায় ২ লাখ ১৫ হাজার ইহুদি বাস করে। পূর্ব জেরুসালেমের বেশির ভাগ তথা ৩ লাখ ৪০ হাজার ফিলিস্তিনি বাসিন্দা ক্রমবর্ধমান জনাকীর্ণ এলাকাগুলোতে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে যেখানে জায়গা খুব কম।
পিস নাউ জানিয়েছে, ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হওয়ার প্রথম দুই বছরে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ পূর্ব জেরুসালেমের বসতিগুলোতে এক হাজার ৮৬১ আবাসন ইউনিটকে অনুমোদন দিয়েছে। এটি আগের দুই বছরে অনুমোদিত এক হাজার ১৬২ এর তুলনায় ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিসংখ্যানগুলোতে দেখা যায় যে বসতি স্থাপনের জন্য এক হাজার ৮১ জনকে অনুমতি দেয়া হয়েছিল শুধু ২০১৭ সালেই, যা ২০০০ সালের পরে বছরে অনুমোদন প্রাপ্ত সর্বোচ্চ সংখ্যা। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে ফিলিস্তিনিদের জন্য মোট এক হাজার ২৩৩ আবাসন ইউনিট অনুমোদিত হয়েছিল। আন্তর্জাতিক নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে একের পর এক অবৈধ বসতি গড়ে তুলছেন ইহুদিরা।