Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধর্ষণ শেষে পুড়িয়ে হত্যা, ধর্ষকদের পিটিয়ে মারার দাবিতে থানা ঘেরাও

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৫:১৪ পিএম

শ্বাসরোধে হত্যার পর শরীরে কম্বল জড়িয়ে পেট্রোল ও ডিজেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়ার আগে চার ধর্ষক পালাক্রমে ধর্ষণ করে ২৬ বছর বয়সী নারী পশু চিকিৎসককে। শুধু তাই নয়, ধর্ষণের সময় ওই তরুণী যখন বাঁচার জন্য আর্তচিৎকার করেন, তখন ধর্ষকরা তার মুখে হুইস্কি ঢেলে দিয়ে চিৎকার থামানোর চেষ্টা করে।
সন্দেহভাজন ধর্ষকদের গ্রেফতারের পর রিমান্ডে নিয়ে তাদের কাছে ওই তরুণীকে ধর্ষণ শেষে পুড়িয়ে হত্যার রোমহর্ষক বর্ণনা পেয়েছে ভারতের হায়দরাবাদ পুলিশ। এ ঘটনায় শনিবার সকালের দিকে দেশটিতে ব্যাপক্ষ বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ শুরু করেছেন হাজার মানুষ।
শনিবার সকালের দিকে তেলেঙ্গানা প্রদেশের রাজধানী হায়দরাবাদ থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে শাদনগর থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন তারা। এ সময় ওই ধর্ষকদের জনতার হাতে তুলে দেয়ার দাবি উঠে। বিক্ষোভ থেকে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়িয়ে পড়েছেন তারা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি ধর্ষকদের রিমান্ডে দেয়া জবানবন্দির একটি কপি হাতে পেয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বুধবার রাতে হায়দরাবাদের একটি টোল বুথের কাছে যে চিকিৎসক তরুণীকে ধর্ষণের পর আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে তার রোমহর্ষক বর্ণনা উঠে এসেছে ধর্ষকদের জবানবন্দিতে। অভিযুক্ত ধর্ষকদের প্রত্যেকের বয়স ২০ থেকে ২৬ এর মধ্যে। তাদের সবাইকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
রিমান্ডে দেয়া চার ধর্ষকের জবানবন্দি অনুযায়ী, ওই টোল বুথের কাছে পৌঁছানোর পর এক চর্ম বিশেষজ্ঞের সঙ্গে দেখা করার জন্য সেখানে নিজের স্কুটারটি রেখে যান তিনি। বুধবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে নিজের স্কুটার রেখে ভাড়ায় চালিত ট্যাক্সি নিয়ে ওই চিকিৎসকের কাছে যান তিনি। সেখান থেকে রাত সোয়া ৯টার দিকে ফেরার পর দেখতে পান স্কুটারটির চাকা পাংচার।
এ সময় মোহাম্মদ আরিফ, জল্লু শিবা, জল্লু নবীন এবং চিন্তকুন্ত চেন্নাকেশভুলু নামের চার ট্রাক চালক ও চালকের সহকারী মদ্যপ অবস্থায় ওই তরুণীর ওপর হামলে পড়েন।
সোয়া ৯টার দিকে ফেরার পর ওই তরুণীকে সাহায্য করার ভান করেন তারা। পরে তাদের মধ্যে থেকে তিনজন ওই তরুণীকে জোরপূর্বক টোল বুথের পাশের একটি ঝোপ-ঝাড়ে নিয়ে যান। ওই নারী সাহায্যের জন্য চিৎকার শুরু করলে তার মুখে হুইস্কি ঢেলে থামানোর চেষ্টা করে তারা। তারা ওই নারীকে নগ্ন করে সংজ্ঞা হারিয়ে না ফেলা পর্যন্ত পালাক্রমে ধর্ষণ করে। চেতনা ফিরে আসায় তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে ধর্ষকরা।
পরে তার মরদেহ একটি কম্বলে মুড়িয়ে পাশের সেতুর নিচে ফেলে দেয়। সেখানে ডিজেল ও পেট্রোল ঢেলে বুধবার রাত আড়াইটার দিকে তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায় ধর্ষকরা।
রিমান্ড প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, অভিযুক্ত ধর্ষকদের একজন গত দুই বছর লাইসেন্স ছাড়াই ট্রাক চালিয়ে আসছেন। বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় একদিন আগেই তার গাড়ি জব্দ করেছিল কর্তৃপক্ষ।
এ ঘটনায় তেলেঙ্গানা পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তা, কালক্ষেপণ ও নিহত তরুণীর পরিবারকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। ওই তরুণীর পরিবার বলছে, তারা রাত তিনটা পর্যন্ত আমাদেরকে এক থানা থেকে আরেক থানায় পাঠিয়েছে।
তেলেঙ্গানার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিশান রেড্ডি বলেছেন, পুলিশ জরুরি মুহূর্তে মানবিক বোধ থেকে দায়িত্ব পালন করেনি। বরং তারা নৈমিত্তিক দায়িত্ব পালনের মতো আচরণ করেছে। বিষয়টিকে গুরুতরভাবে নিলে হয়তো ২৬ বছর বয়সী ওই পশু চিকিৎসক তরুণীর প্রাণ বাঁচানো যেতো। পরে বৃহস্পতিবার সকালের দিকে ওই টোল বুথ থেকে একটু দূরে ওই তরুণীর পুড়ে অঙ্গার হয়ে যাওয়া লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।



 

Show all comments
  • Mohammed Kowaj Ali khan ১ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৮:৫১ পিএম says : 0
    মোদির কারণে ভারত অসভ্য ... ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ