পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ক্লাসে ফিরতে বিভাগের সামনে একক অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অর্থনীতি বিভাগের এ্যাসিট্যান্ট প্রফেসর ড. রুশাদ ফরিদী। গতকাল বুধবার ও এরআগের দিন মঙ্গলবার তিনি বিভাগের চেয়ারম্যানের রুমের সামনে অবস্থান নেন। তবে বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান জানিয়েছেন এটি আইনি প্রক্রিয়া, আইনের মাধ্যমেই যা করার তা করা হবে।
জানা যায়, ২০১৭ সালে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষকরা অভিযোগ আনেন রুশাদ ফরিদী শিক্ষকসুলভ আচরণ করেননা। ক্লাসে বিভাগের অন্যান্য শিক্ষকের বিরুদ্ধে বাজে মন্তব্য করেন। এসব অভিযোগে বিভাগে জরুরী বৈঠক ডাকা হয়। বৈঠকে অভিযোগ শুনে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে সভা ছেড়ে চলে আসেন। পরে বিভাগ থেকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট পাঠানো হয়। আবেদনে বিভাগের ৩১ জন শিক্ষক রুশাদ ফরিদীর সঙ্গে কাজ করবেন না জানিয়ে স্বাক্ষর করেন। পরবর্তীতে তৎকালীন ভিসি প্রফেসর আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ড. রুশাদ ফরিদীকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ২০১৭ সালের ১২ জুলাই তাকে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য ছুটিতে পাঠানোর চিঠি দেয় সিন্ডিকেট।
রুশাদ ফরিদীর অভিযোগ, তাকে মিথ্যা অভিযোগের মাধ্যমে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়। তিনি বিভাগের বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলেন বলে তার বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলকভাবে অভিযোগগুলো আনা হয়েছে। এসব অনিয়ম নিয়ে তিনি বিভাগের চেয়ারম্যানের কাছে ৭টি চিঠিও পাঠিয়েছিলেন বলে জানান।
সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের পর তিনি চিঠি বাতিল পুনর্বিবেচনার দাবিতে ভিসি, প্রো-ভিসি (শিক্ষা), প্রো-ভিসি (প্রশাসন), রেজিস্ট্রার, বিভাগের চেয়ারম্যান বরাবর উকিল নোটিশ পাঠান। তিনি জানান, একই বছরের ১৩ জুলাই তিনি উচ্চ আদালতে রিট করেন। ২৪ জুলাই সিদ্ধান্তটি কেন অবৈধ নয় সেটি জানাতে উচ্চ আদালত রুল জারি করে। এ বছরের ২৫ আগস্ট উচ্চ আদালতে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের যৌথ বেঞ্চ ড. রুশাদ ফরিদীর বিরুদ্ধে সিন্ডিকেটের দেয়া আদেশ অবৈধ ঘোষণা করে একইসঙ্গে তাকে কাজে যোগদান করারও নির্দেশ দেয়।
তবে আদালতের রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি এখনও না আসায় সোমবার তিনি তার আইনজীবীর রায়ের সার্টিফিকেট ও যোগদানের কাগজপত্র বিভাগের অফিসে জমা দিতে গেলে অফিসের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা জানান চেয়ারম্যানের অনুমতি ছাড়া কোন চিঠি রিসিভ করা যাবে না। তখন তিনি চেয়ারম্যান সঙ্গে দেখা করলে চেয়ারম্যান বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া চিঠি গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন। বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন রায়ের বিষয়টিকে আইনি প্রক্রিয়া উল্লেখ করে যদি রায়ের কপি আসে তারপর তারা তা বিবেচনা করবেন এরআগে তারা কিছু করতে পারবেন না বলে জানান।
এ বিষয়ে রুশাদ ফরিদী বলেন, আদালতের রায় হয়েছে কিন্তু রায়ের কপি এখনো হাতে আসেনি। তবে আমার আইজীবীর সাক্ষরিত একটি কপি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগে জমা দিয়েছি। যদি বিভাগ বা বিশ্ববিদ্যালয় এ ব্যাপারে আদালতে খোঁজ নিতে চায় তারা নিতে পারে কিন্তু তাকে যেন বিভাগের কার্যক্রম চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু বিভাগের চেয়ারম্যান চিঠি গ্রহন না করার কারনে ক্লাসে ফিরতে পারছি না। যার প্রতিবাদস্বরূপ গত দুদিন ক্লাসে ফিরার দাবিতে চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে অবস্থান করছি। তিনি অভিযোগ করেন, বিশ^বিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী ৯০ দিনের বেশি বাধ্যতামূলক ছুটিতে রাখা যায়না। তারপরেও আমি ৭০০ থেকে ৮০০ দিনের বেশি ছুটিতে আছি। তিনি বলেন, আমি নির্দোষ। আমাকে অন্যায় ভাবে দু’বছর ধরে হেনস্থা করা হচ্ছে। কিন্তু মামলার রায় হওয়ার পরও তাদের এখনো বিন্দুমাত্র সহানুভূতি নাই।
বিষয়টি নিয়ে অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান বলেন, মামলা চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে বিভাগের সাথে নয়। মামলার রায়ের কোন কাগজ আমরা এখনো হাতে পায়নি। মামলার রায় হয়েছে দাবি করে তিনি একটি প্রত্যয়ন পত্র ও একটি দৈনিক পত্রিকার একটি নিউজ অফিস বরাবর জমা দিয়েছেন। কিন্তু আমরা কাগজ গ্রহণ করিনি কারণ এটিতো মামলার রায় নয়। আর যদি কোন কাগজ গ্রহণ করতে হয় তাহলে গ্রহণ করবে বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাদের যা বলে আমরা তাই করব। আমাদের আইনের বিরুদ্ধে যাওয়ার কোন ক্ষমতা নাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, বিষয়টি একটি আইনি প্রক্রিয়া। যা করতে হবে আইনের মধ্য দিয়ে করতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।