বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বেগম খালেদা জিয়াকে গণতন্ত্রের সংগ্রামের আপোসহীন নেত্রী অভিহিত করে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলছেন, কোন চাপের কাছে তিনি মাথা নত করবেন না। আইনি প্রক্রিয়ায় জামিন প্রাপ্তি তার সাংবিধানিক অধিকার। এ অধিকার লাভের জন্য তিনি আপোস করবেন না। তাই আমাদের ওপর দায়িত্ব বর্তেছে, রাজপথে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে মুক্ত করা।
শনিবার খুলনায় প্রতিহিংসার বিচারে বন্দি বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সাবেক মন্ত্রী মঈন খান এ কথা বলেন। বিকেল সাড়ে ৩ টায় নগরীর কে ডি ঘোষ রোডে দলীয় কার্যালয়ের সামনে দলের মহানগর ও জেলা শাখার যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় এ সমাবেশ।
সমাবেশে মঈন খান সুন্দরবনকে এ জনপদের রক্ষাকবচ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এখানে কয়লা চালিত তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ হলে সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাবে। পরিবেশ প্রতিবেশ বিনষ্ট হবে। সরকার সমর্থিত গুটিকয়েক লোকের পকেট ভারি করতে সারা বিশ্বে বাতিল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ হবে আত্মঘাতি। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষার স্বার্থে বিএনপি সুযোগ পেলে এই প্রকল্প বাতিল করবে।
মঈন খান বলেন, সরকার প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে বেগম জিয়াকে এক বছর নয় মাস বন্দি করে রেখেছে। হাসপাতালে রাখলেও তার সুচিকিৎসা হচ্ছেনা। যে অভিযোগে তাকে সাজা দেয়া হয়েছে, একই রকম অভিযোগে জামিন দেওয়ার অসংখ্য নজির এই দেশেই আছে। কিন্ত তাকে জামিন দেওয়া হচ্ছেনা। বাংলাদেশের সংবিধানে উল্লেখিত মৌলিক মানবাধিকার তার ক্ষেত্রে লঙ্ঘিত হচ্ছে। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী, তিনি একজন নারী এবং তিনি একজন সিনিয়র সিটিজেন। শুধুমাত্র এই তিন কারণে তিনি জামিন পেতে পারেন।
সরকার উন্নয়নের ফাঁকা বুলি আওড়াচ্ছে। মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দুর্নীতি করছে। ১০০ কোটি টাকা প্রকল্প একনেকে ঢুকছে, পাশ হয়ে বের হচ্ছে এক হাজার কোটি টাকায়। জনগনের পকেট কেটে, ঋণের বোঝা বাড়িয়ে গ্রহণ করা এই সব মেগা প্রজেক্টের বাড়তি টাকা কাদের পকেটে ঢুকছে- জানতে চান ড. মঈন খান। ভাওতাবাজির উন্নয়নের খপ্পরে পড়ে পেয়াজ ৩০০ টাকা, লবণ ২০০ টাকা হচ্ছে। চালের দাম হু হু করে বাড়ছে। দেশে ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান বেড়েই চলেছে। উন্নয়নের জোয়ারে ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়ার গালগল্প শোনালেও যশোর থেকে খুলনা আসার মহাসড়কটির বেহাল দশা ১০ বছরেও শেষ হয়নি। ইউরোপ, আমেরিকা, এমনকি বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের এক কিলোমিটার রাস্তার নির্মাণ ব্যয়ের চাইতে আমাদের ব্যয় কয়েকগুণ।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও নগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু। বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাড. এস এম শফিকুল আলম মনা, নগর সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি, সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, অধ্য্পাক ডাঃ গাজী আব্দুল হক, মীর কায়সেদ আলী, শেখ মোশারফ হোসেন, জাফরউল্লাহ খান সাচ্চু, এ্যাড. গাজী আব্দুল বারী, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, এ্যাড. ফজলে হালিম লিটন, মনিরুজ্জামান মন্টু, শেখ আব্দুর রশিদ, অধ্যাপক আরিফুজ্জামান অপু, মোল্লা খায়রুল ইসলাম, মেজবাউল আলম, মোল্লা মোশারফ হোসেন মফিজ, খায়রুল ইসলাম জনি, রেহানা আক্তার, মেহেদী হাসান দীপু, মাহবুব হাসান পিয়ারু, একরামুল হক হেলাল, মুজিবর রহমান, শরিফুল ইসলাম বাবু এবং হেমায়েত হোসেন। আসাদুজ্জামান মুরাদ ও ওহেদুজ্জামান রানার পরিচলনায় সমাবেশের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন মাওলানা আব্দুল মান্নান।
এর আগে নগরীর সকল ওয়ার্ড ও জেলার সকল উপজেলা থেকে বিএনপি এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের খন্ড খন্ড মিছির সমাবেশ স্থলে হাজির হয়। মিছিল থেকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং অবৈধ অনির্বাচিত সরকারের পদত্যাগ দাবি করে শ্লোগান দেয়া হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।