মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
নাইন-ইলেভেন বোমা হামলার পর মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়াজুড়ে যুদ্ধ আর সামরিক পদক্ষেপের পেছনে ৬.৪ ট্রিলিয়ন বা ৬ লাখ ৪০ হাজার কোটি ডলার খরচ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই অর্থ এসেছে দেশটির করদাতাদের পকেট থেকেই। এই অর্থ ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকার যত অর্থ ব্যয় করেছে, তার চেয়েও ২ লাখ কোটি ডলার বেশি। ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াটসন ইন্সটিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্স-এর করা গবেষণায় যুদ্ধের পেছনে আমেরিকার এই বিপুল ব্যয়ের চিত্র ফুটে উঠেছে। গত সপ্তাহে জরিপের সার সংক্ষেপ প্রকাশ করা হয়। এ খবর দিয়েছে সিএনবিসি।
গবেষণায় উঠে এসেছে যে, এসব যুদ্ধ-বিগ্রহের কারণে ৯ লাখেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। অবশ্য, নিহতের এ সংখ্যা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। অনেকে মনে করেন- নিহতের সংখ্যা আরো অনেক বেশি। এছাড়া সহিংসতার কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে ২ কোটি ১০ লাখ মানুষ। যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়া থেকে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি প্রত্যাহারের প্রস্তুতি চলার মধ্যেই এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হলো। প্রতিবেদনে বলা হয়, ৬ লাখ ৪০ হাজার কোটি ডলারের এই ব্যয় হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন বিভাগ থেকে।
গবেষক নেতা ক্রফোর্ড বলেন, ৯/১১ পরবর্তী ইরাক, আফগান যুদ্ধ, পাকিস্তান ও সিরিয়ায় সামরিক সংঘাত প্রায় ৮০টি দেশকে নানাভাবে আক্রান্ত করেছে। এসব যুদ্ধ যতই প্রলম্বিত হয়, ততই বেশি সংখ্যক সেনা সদস্য অবসরপরবর্তী বা যুদ্ধাহত ভাতা পাওয়ার দাবিদার হন। ক্রফোর্ড লিখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যদি ২০২০ অর্থ বছরের মধ্যেও সকল বৃহৎ যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করে ও সন্ত্রাসবাদ বিরোধী বৈশ্বিক যুদ্ধ স্থগিত করে, ফিলিপাইন ও আফ্রিকায়, তারপরও এই যুদ্ধের ব্যয় বাড়তেই থাকবে। কারণ, যুদ্ধাহত ও যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সেনাদের পেছনে ব্যয় বাড়তে থাকবে। এছাড়া যুদ্ধের জন্য নেয়া ঋণের সুদও বাড়তে থাকবে।’ মার্চে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ পেন্টাগন হিসাব কষে দেখিয়েছে যে, মাথাপিছু প্রত্যেক আয়করদাতার পকেট থেকে গড়ে ৭৬২৩ ডলার ব্যয় হয়েছে আফগানিস্তান, ইরাক ও সিরিয়ার যুদ্ধের ব্যয় বহনের পেছনে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধ এবং যুদ্ধ সংক্রান্ত কাজে বিশাল অংকের এ অর্থ ব্যয় করার কারণে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য তা উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে কারণ এ ব্যয় টেকসই নয়। স্বচ্ছতা বাড়ানো ও যুদ্ধের অবসান ঘটালে মার্কিন জনগণের সেবা আরো বেশি দেয়া সম্ভব বলেও প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কের বিশ্ব বাণিজ্যকেন্দ্রে কথিত সন্ত্রাসী হামলায় ৩,৫০০ ব্যক্তি নিহতের পর তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ ২০০১ সালের ৭ অক্টোবর আফগানিস্তানে সামরিক আগ্রাসনের মাধ্যমে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ শুরু করেন। এরপর ইরাকে অভিযান চালানো হয় এবং আজও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সে যুদ্ধ চলছে।
এদিকে, ৯/১১ পর থেকে ইসলামকে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জুড়ে দেয়া অপপ্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। নিরীহ মুসলিমদের প্রকাশ্যে সন্ত্রাসবাদী বলে আক্রমণ করা হয়েছে। মানবাধিকার সংস্থা ভিক্টিমস দ্য টেররিজমের প্রধান সেন্ট মার্ক বলছে, বিশ্বে সন্ত্রাসবাদী হামলায় এখন পর্যন্ত ৮০ শতাংশ মুসলিম আক্রান্ত হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।