Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা দেশেই ‘এনআরসি’র ঘোষণা অমিতের, এড়িয়ে গেলেন মুসলিম প্রসঙ্গ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২০ নভেম্বর, ২০১৯, ৬:১২ পিএম

সমগ্র ভারতজুড়েই যে ‘এরআরসি’ করা হবে তা আবারো জোর গলায় ঘোষণা দিলেন দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বুধবার রাজ্যসভায় তিনি জানিয়ে দিলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোতে ধর্মীয় বিদ্বেষের শিকার হিন্দু, জৈন, শিখ, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, পার্সিদেরই শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। এর আগেও অমিত-সহ বিজেপি নেতৃত্ব একাধিক বার প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছেন— বাংলাদেশ, আফগানিস্তান এবং পাকিস্তান থেকে আসা সে সব দেশের সংখ্যালঘুদেরই এ দেশে শরণার্থী হিসেবে গ্রাহ্য করা হবে। যার থেকে স্পষ্ট, এসব দেশগুলোর সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের মানুষদের অর্থাৎ মুসলমানদের ভারতে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করতে চায় বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার।

সংসদের চলতি অধিবেশনে রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশ করার কথা কেন্দ্রীয় সরকারের। তার আগে বুধবার এনআরসি-র প্রসঙ্গে আলোচনা শুরু হলে অমিত শাহ রাজ্যসভায় বলেন, ‘পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানে ধর্মীয় বৈষম্যের শিকার হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, খ্রিস্টান এবং পার্সি শরণার্থীদেরই নাগরিকত্ব পাওয়া উচিত। তাদের ভারতের নাগরিক করে তুলতেই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রয়োজন।’ কিন্তু হিন্দু, খ্রিস্টান-সহ বাকিদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বললেও, শাহ কেন মুসলিমদের এড়িয়ে গেলেন, তা জানতে চান এনসিপি সাংসদ সৈয়দ নাসির হুসেন। জবাবে অমিত শাহ বলেন, ‘আপনি এনআরসি এবং নাগরিক সংশোধনী বিলের মধ্য গুলিয়ে ফেলছেন। এনআরসি তৈরির ক্ষেত্রে কোনও ধর্মকে নিশানা করা হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের তদারকিতেই সব কিছু হয়েছে। ধর্মীয় বিশ্বাস যাই হোক না কেন, দেশের সব নাগরিকেরই নাম নথিভুক্ত হবে এনআরসি তালিকায়। দেশের সর্বত্র এনআরসি হবে। তবে এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই। সকলকে এনআরসি-র আওতায় আনতেই এই প্রক্রিয়া।’

রাজ্যসভায় বক্তৃতা দেওয়ার সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, ‘এনআরসি-তে যাদের নাম বাদ পড়েছে তারা ট্রাইব্যুনালে যেতে পারে এবং আসাম সরকার তাদের আর্থিক সহায়তাও দেবে।’ তিনি জানান, সবাইকে নাগরিক তালিকার অন্তর্ভুক্ত করার জন্য এনআরসি ‘একটি প্রক্রিয়া’ মাত্র। এনআরসি সারা দেশেই করা হবে, আসামেও আবার করা হবে। তবে কোনও ধর্মের কাউকেই এই বিষয়ে উদ্বিগ্ন হতে হবে না।

প্রসঙ্গত, আসামের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন ১৯ লাখ মানুষ। এর মধ্যে বেশিরভাগই এমন ব্যক্তি রয়েছেন যারা তাদের দাবি প্রমাণ করার জন্য পর্যাপ্ত নথি পেশ করতে পারেননি। কর্মকর্তাদের মতে, সরকার জানিয়েছে যে তড়িঘড়িই এই ব্যক্তিদের অবৈধ নাগরিক ঘোষণা করা হবে না। তাদের কাছে বিদেশি ট্রাইব্যুনালে আপিল করার এবং পরে আদালতের কাছে যাওয়ার বিকল্পও রয়েছে। এর আগে, ২০১৬ সালে লোকসভায় নাগরিক সংশোধনী বিল পেশ করে প্রথম মোদি সরকার। পরে সেটি সংসদীয় যৌথ কমিটির কাছে পাঠানো হয়। চলতি বছর জানুয়ারি মাসে তা নিয়ে রিপোর্ট জমা দেয় ওই কমিটি। তার পর সেটি লোকসভায় গৃহীত হয় এবং গত ৮ জানুয়ারি পাশ হয়ে যায়। কিন্তু রাজ্যসভায় এখনও পাশ হয়নি বিলটি। সূত্র: এনডিটিভি, টিওআই।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ