মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতের অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমেনের (এআইএমআইএম) প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বাবরি মসজিদ রায়ের বিরুদ্ধে আরো কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন। তিনি সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষণার পর থেকেই পাঁচ একর জমি চাই না বলে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এবার বাবরি মসজিদ ফেরত চাই বলে সাফ দাবি জানালেন এই মুসলিম নেতা।
জাতীয়স্তরের একটি সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, “যা কিছু ভারতের সংবিধান এবং বহুত্ববাদের বিরোধিতা করে তার বিরোধিতা আমি করবই। আমার জন্য সংবিধানই শেষ কথা। সংবিধানই আমাকে সেই অধিকার দিয়েছে যেখান থেকে শ্রদ্ধার সঙ্গে আমি সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরোধিতা করতে পারি। যা সংবিধানের বিরুদ্ধ তার বিরোধিতা আমি করবই”।
পাশাপাশি আসাদুদ্দিন আরও জানিয়েছেন, “আমাদের যুদ্ধ একটুকরো জমির জন্য নয়। আমার আইনি অধিকার যেন অক্ষুণ থাকে সেইদিকে নজর রাখা। শীর্ষ আদালতও জানিয়েছে মসজিদ তৈরি করার জন্য কোন মন্দির ধ্বংস করা হয়নি। তাই আমি আমার মসজিদ ফেরত চাই।”
শুক্রবার আউটলুক ম্যাগাজিনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ওয়াইসি জানান, অল-ইন্ডিয়া মজলিস-এ-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন নেতা আসাদুদ্দিন ওয়েইসি এই বিষয়ে শুক্রবার একটি ট্যুইট করে জানিয়েছেন, “আমি আমার মসজিদ ফেরত চাই”।
সুপ্রিম কোর্ট মন্দির তৈরিতে শিলমোহর দিয়ে অযোধ্যাতেই মসজিদের জন্য আলাদা পাঁচ একর জমি দেবে বলে জানিয়েছে। সর্বভারতীয় মজলিস-ই-ইত্তিহাদুল মুসলিমিনের প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি বলেছেন, বাবরি মসজিদের মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ে তিনি সন্তুষ্ট না। সুপ্রিম প্রকৃতপক্ষে সর্বোচ্চ কিন্তু ভুলের ঊর্দ্ধে না।
তিনি বলেন, রায়ে আমি সুন্তুষ্ট না। তবে সংবিধানে আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে। আমাদের বৈধ অধিকার নিয়ে আমরা লড়াই করে যাচ্ছি। দান করা পাঁচ একর জমি আমাদের দরকার নেই। অল ইন্ডিয়া মুসলিম পারসোনাল ল’ বোর্ডের সঙ্গে আমি একমত, তারাও রায়ে অসন্তুষ্ট বলে জানান ওয়াইসি।
অযোধ্যার শহরে একটি মসজিদ নির্মাণে পাঁচ একর জমি বরাদ্দে আদালতের নির্দেশ নিয়ে তিনি বলেন, আমরা নিজেদের অধিকারের জন্য লড়ছি। ভারতের এই এমপি বলেন, আমার মত হচ্ছে, ভূমি দানের এই প্রস্তাব আমাদের প্রত্যাখ্যান করা উচিত। আমাদের পিঠ চাপড়াবেন না।
তিনি বলেন, একটুকরো জমির জন্য আইনি লড়াই চালিয়ে যাইনি আমরা। তাছাড়া আদালত যখন এইমর্মে রায় দিয়েছে যে, বিতর্কিত স্থানে কোনো মন্দির ছিল না, সম্রাট বাবর মসজিদ তৈরি করার জন্য কোনো মন্দির ধ্বংস করেননি। তাই জমি চাই না; আমি আমার মসজিদ ফেরত চাই।
তিনি যোগ করেন, ভারত সংবিধানের ওপর পূর্ণ আস্থা রেখেই বলছি এ রায়ে আমি একেবারেই সন্তুষ্ট নই। ওই স্থানেই বাবরি মসজিস পুন:স্থাপন ভারতীয় মুসলিমদের বৈধ অধিকার। দান করা পাঁচ একর জমি আমাদের দরকার নেই। ভূমি দানের এই প্রস্তাব আমাদের প্রত্যাখ্যান করা উচিত বলেই মনে করি আমি।
তিনি বলেন, শুধু আমিই নই; অল ইন্ডিয়া মুসলিম পারসোনাল ল’ বোর্ডও এ রায়ে সন্তুষ্ট হতে পারেনি।
হায়দ্রাবাদের এমপি ওয়াইসি এর আগে বলেছিলেন, বাবরি মসজিদ যদি বৈধ হয় তাহলে এল কে আদভানি ওই জমি কি করে পেতে পারে? শুধু বিশ্বাসের ওপর ভর করে এতো বড় একটা রায় হতে পারে না।
তিনি আরও বলেছিলেন, এ রায় ঘোষণায় ভারতসহ বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায় অপমানিত হয়েছে। ভারতীয় মুসলমানদের ভিক্ষুক বানানোর চেষ্টা করবেন না। আমরা ভারতের সম্মানিত নাগরিক। একটুকরো জমির জন্য নয়, বৈধ অধিকারের জন্য লড়েছি আমরা।
প্রসঙ্গত কয়েক দশকের আইনি লড়াইয়ের পর গত ৯ নভেম্বর উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ মামলার রায় দিয়েছে ভারতের সুপ্রিমকোর্ট।
এতে প্রায় পাঁচশ বছর আগে নির্মিত মসজিদটির জমি মন্দির নির্মাণে হিন্দুদের দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর মসজিদটি ভেঙে মাটিতে মিশিয়ে দেয় দেশটির হিন্দুত্ববাদীরা।
আর মসজিদ নির্মাণে মুসলমানদের শহরের অন্যত্র পাঁচ একরের একখন্ড জমি দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে ভারত সরকারকে। ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ এ রায় দিয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।