শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
আবু জাফর দিলু
তবু বেঁচে আছি
এখন আমার বুকে নেই সেই বিপুল সাহস,
নিজ হাতে গোটা সংসার সাজাবার মতো শক্তি,
হাতের মুঠোয় নেই লাঙল-জোয়াল জোড়া মাঠ;
হাতুরী শাবল আর কাস্তের সুঠাম ভালোবাসা
চোখে নেই সমুদ্দুর ছোঁয়া রঙিস স্বপ্নের নদী,
যে নদী আমার পিতৃপুরুষের ভিটেমাটি চেনে।
এখন আমাকে যেন উজ্জ্বল একটি নদী বলে
ভ্রম হয়, মনে হয় এক শুকনো বালুর চরা।
পর-পুরুষেরর হাতে রমণীর অস্হি-মজ্জা খুয়ে
যেন সর্বশান্ত, কাঁপছে ঘর্মাক্ত উদ্দাম শরীর।
নিজের মতোন করে বুকে পোষা সবুজ আমার
লোভের গলা বাড়ানো একঝাঁক নাছোড় জিরাফ
পলে পলে সুকৌশলে ছিঁড়ে-ছিঁড়ে খায় বিষদাঁতে,
নিভে যায় যেন জীবনের আয়ূষ্মান জ্যোতিকাল।
তীরবিদ্ধ বুনো হরিণের মতো ভীত-ত্রস্ত পায়ে
ধুকপুক বুকে নিরাপদ একটি আশ্রয় খুঁজেছি বিস্তার,
কোথাও পাই নি ভিটামিনযুক্ত একটু আশ্বাস,
চতুর্দিকে শুধু সূর্য-বিমুখ পেঁচার অমঙ্গল ডাক।
এভাবে কি বেঁচে থাকা যায় প্রিয়া ? তবু বেঁচে আছি।
খড়ের অলিন্দে যদি জন্ম নেয় ফেনিল উদ্দামী
এক সূর্য-শিশু, যার বুকে সচল একটি নদী,
যে নদী আমার পিতৃপুরুষের ভিটেমাটি চেনে।
বুলা দাস
নতুন গন্তব্যে
মায়াগুলো কেবলি পিছু হাঁটে
এক জীবনে কতো ভাঁজ।
কতো কতো সম্পর্কের বেড়াজাল,
পাড়ার মোড়ের ঐ ফ্লেক্সিলোডের দোকান’টা!
েেসখানে বসে থাকা বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে
যাওয়া কাকা’টা,
ফ্লেক্সি,বিকাশ আর নেটে’র জন্য দিনের পর দিন জ্বালাতন!
মন্দিরের সামনে চা আর পানের দোকান’টায় শত ভীড় উপেক্ষা করেও শখ করে পান খেয়ে লাল মুখে ঘরে ফেরা,
শীতের সন্ধ্যেয় রাস্তার ধারে সেদ্ধ ডিম,পাপড় ভাজা আর গরম গরম চিতই পিঠা
েেচনা রাস্তা, চেনা গলি,চেনা মানুষগুলো
সব কিছু ফেলে যেতে হয় নতুন গন্তব্যে
আবার নতুন করে সব নির্মাণ।
ফেসবুক আর মোবাইলের পাতা নতুন সম্পর্কে ভারী হয়
নতুন মায়া’রা ঘিরে ধরে।
বিষণ্ণ বিকেলে মন জানালায় উঁকি দেয় ফেলে আসা দিন।
সাজ্জাদুর রহমান
সভ্যতার সোনালী কাবিন
ভেতরে ক্ষরণ!
ভীষণ শীৎকারে পোড়ে বসন্তমাঠ
চৈত্র দহনে ঠুকরে জরায়ু সুখ
ক্ষত-বিক্ষত করে কাঠঠোকরা
ভাগ্যের পানপাত্রে রাখা সভ্যতার ইতিহাস
বুদবুদ্ করে জ্বলে ওঠে
দপ্ করে নিভে যায় খেয়ালী বাঁশির সুর্।
অসভ্য অসামাজিক আঙ্গুল চুইয়ে
নেমে আসে নীল বিষ।পৃথিবীর জলাশয়ে
সহস্র মহর্ষির ভ্রুণে খেলে ফুলশয্যা
বিষপেয়ালার নিংড়ানো আমিষ
সেখানে স্থবির করে আগত শান্তির স্নেহাশিস
তখন আর হয়না হেঁটে যাওয়া
চাঁদ-জোছনার সোনালী মিনারের কাছে।
বাড়িগুলো সংসার হয়না
ঘরগুলো গোছালো হয়না
প্রিয়ার গালে চুম্বনের দাগ
অচেনা গলির ভগাঙ্কুরে
নিষ্প্রাণ শুয়ে থাকে সহস্র বছর!
সংসার সভ্যতার সোনালী কাবিনে
জীবন্তপ্রট্রেট হয় দুইজোড়া আর্তির চোখ!
নীলিমা শামীম
বিনিদ্র রজনী
দুপুরের খাবার শেষে অপেক্ষা রজনীর
মধুময় রাত্রির আপেক্ষিক সূর্যাস্থ ধমনীর
শুধু তোমার প্রতিক্ষা প্রিয়তম!
এতো মিষ্টি সময়ের কাছে আমি ঋণী
তোমার বক্ষের বোতামগুলো আমি প্রিয়
চোখের পাপড়িগুলো ছোবে হা হা হা!
বুকের বাম পাশ টায় চিন চিন করছি
ভুলতে দিবনা এই আমাকে তাই বলছি
হাতের মুঠোয় ধরে রেখ, পালাতে দিওনা!
শম্পা মনিমা
ক্ষতের গহ্বরে
প্রতি দিন পিছনে ফেলে হাঁটি সড়কের অধিকার
ত্যাগ করি ঘর,ক্ষুধা-
সব শর্ত ত্যাগ করে সব ক্ষতের গহ্বরে
ঢাকায় মুড়িয়ে দিই মুঠোয় রাখা কৃতকর্মের সান্ত¡না।
অনাহারে কাতর পচন প্রান কেঁদে ওঠে
বিশ্বাসের ঋজু করোটিতে গ্লানির কষ্ট আসে
নতুন মানুষের ভীষণ মোহের আগুনে
দ্বিধাহীন ভাবে ভালোবাসা দ্যাখি শুয়ে আছে।
সময় ডাকছে, ক্ষুধায় অঙ্গার হবো
পৃথিবীর মাটিতে ওরা যেন থাকে,এটুকু বলবো
সন্ত্রাস হয়ে বারুদের মতো ফেটে পড়বো না
বেদনার বাসনায় শেষে নিজেকে পোড়াব চিতায়।
জুবায়ের হোসেন দুখু
পরশ নিয়ে
হোক না আজ অঝরে বৃষ্টি
তুমি শুধু আলতো পরশে ধরো আমার হাতটি।
বিহনে বেলাটুকু বয়ে যায় যাক
শহরে ক্যাম্পাস গুলি ফাঁকা হয়ে যায় যাক
প্রতিটা রাস্তা কোলাহল মুক্ত হয়ে যায় যাক।
কেবল তুমি আমি,তোমার হাতের পরশ নিয়ে
হাটবো এই ঝরোঝরো বৃষ্টিতে
শহরে নিরিবিলি রাস্তা ধরে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।