নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
নেপাল সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমস দোরগোড়ায়। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি মাসের শেষ দিকেই শুরু হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার অলিম্পিক খ্যাত এই গেমসের মাঠের লড়াই। আগামী ১ ডিসেম্বর কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে গেমসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলেও খেলা শুরু হবে ২৭ নভেম্বর থেকে। এদিন ত্রিপুরেশ্বরি কভার্ড হলে ভলিবল ডিসিপ্লিনের খেলা দিয়ে শুরু হবে নেপাল এসএ গেমসের কার্যক্রম। গেমসের পর্দা নামবে ১০ ডিসেম্বর। এসএ গেমসের ১৩তম আসরের খেলা হবে কাঠমান্ডু ও পোখারা শহরে।
এবারের আসরে ২৭টি ডিসিপ্লিনে খেলা হলেও বাংলাদেশ অংশ নিচ্ছে ২৫টিতে। যার অন্যতম হচ্ছে অ্যাথলেটিক্স। এই ডিসিপ্লিনে রৌপ্য ও ব্রোঞ্জের পাশাপাশি অন্তত একটি স্বর্ণপদক আশা করছে লাল-সবুজরা। বাংলাদেশ অ্যাথেেলটিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রকিব মন্টুর প্রত্যাশা হাইজাম্প কিংবা ৪০০ মিটার স্প্রিন্টে স্বর্ণ পাবেন লাল-সবুজের অ্যাথলেটরা।
একটা সময় ছিল যখন দক্ষিণ এশিয়ার অ্যাথলেটিক্সে বাংলাদেশের অ্যাথলেটদের নজরকাড়া পারফরম্যান্স সবাইকে অবাক করে দিতো। মরহুম শাহ আলম ও মাহবুব আলমরা যার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। একমাত্র স্প্রিন্টার হিসাবে শাহ আলম দু-দু’বার দক্ষিণ এশিয়ার দ্রুততম মানব হওয়ার বিরল কৃতিত্ব অর্জন করেন ১৯৮৫ এবং ১৯৮৭ সালের সাফ গেমসে। ১৯৯৫ সালে মাদ্রাজ সাফ গেমসের স্বর্ণজয়ী স্প্রিন্টার মাহবুব। তবে সময় যতই গড়িয়েছে ততই দক্ষিণ এশিয়ার অ্যাথলেটিক্সে বাংলাদেশের বিবর্ণ চেহারা দেখেছেন ক্রীড়াপ্রেমীরা। এসএ গেমসের সর্বশেষ দু’আসরে তো একেবারেই যাচ্ছে-তাই পারফরম্যান্স ছিল বাংলাদেশের অ্যাথলেটদের। পদকপ্রাপ্তিও ছিল যেমন-তেমন। ২০১০ সালে ঢাকা এসএ গেমসে নারীদের ১০০ মিটার হার্ডলসে সুমিতা রানী মাইক্রো সেকেন্ডে স্বর্ণপদক হারান। চার গুনিতক একশ’ মিটার রিলেতে সতীর্থদের সঙ্গে নিয়ে আরও একটি রৌপ্য এনে দেন তিনি। তখন স্বাগতিকদের ঝুলিতে বাকি চারটি ছিল ব্রোঞ্জপদক। ২০১৬ সালে গৌহাটি-শিলং এসএ গেমসে গৌহাটির ইন্দিরা গান্ধী অ্যাথলেট স্টেডিয়ামে স্বর্ণ তো দূরে থাক, একটি রুপাও জিততে পারেননি বাংলাদেশের পুরুষ ও নারী অ্যাথলেটরা। নারীদের চার গুনিতক একশ’ মিটার রিলে এবং চার গুনিতক চারশ’ মিটার রিলেতে দু’টি ব্রোঞ্জই তাদের সেরা সাফল্য।
তবে এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। ধীরে ধীরে উঠে এসেছেন তরুণ অ্যাথলেটরা। তাই তাদের ঘিরে প্রত্যাশাটাও বেশি।
এবার এসএ গেমসের ১৩তম আসরে নেপাল যাচ্ছেন বাংলাদেশের ১৪ জন পুরুষ ও আট নারী অ্যাথলেট। পুরুষদের ১০০ মিটার স্প্রিন্টে সেনাবাহিনীর হাসান মিয়া, চার গুনিতক একশ’ মিটারে নৌবাহিনীর ইসমাইল হোসেন, রাকিবুল হাসান ও আবদুর রউফ দৌঁড়াবেন। একই সংস্থার ইবাদ আলী ৪০০ মিটার হার্ডলস ও চার গুনিতক চারশ’ মিটারে, নৌবাহিনীর সাইফুল ইসমাইল খান ২০০ মিটার স্প্রিন্ট এবং দু’টি রিলেতে, সেনাবাহিনীর শরিফুল ইসলাম দুই রিলেতে, ট্রিপল জাম্পে সেনাবাহিনীর সোহেল রানা, ১১০ মিটার হার্ডলসে একই সংস্থার মির্জা হাসান, ৪০০ মিটার স্প্রিন্ট ও চার গুনিতক চারশ’ মিটার রিলেতে নৌবাহিনীর জহির রায়হান, চার গুনিতক চারশ’ মিটারে সেনাবাহিনীর মাসুদ রানা ও আবু তালেক অংশ নেবেন। হাইজাম্পে খেলবেন নৌবাহিনীর মাহফুজুর রহমান এবং লংজাম্পে একই সংস্থার আল আমিন। নারী বিভাগে দেশের দ্রুততম মানবী নৌবাহিনীর শিরিন আক্তার একাই ১০০ ও ২০০ মিটার স্প্রিন্ট এবং দু’টি রিলেতে ট্র্যাকে নামবেন। একই সংস্থার সোহাগী আক্তার ২০০ মিটার স্প্রিন্ট ও দু’টি রিলেতে, সেনাবাহিনীর শরিফা খাতুন ১০০ মিটার স্প্রিন্ট ও দু’টি রিলেতে দৌড়াবেন। নৌবাহিনীর প্লাবনী হক হাই জাম্পে, একই সংস্থার তামান্না আক্তার ১০০ মিটার হার্ডলস ও চার গুনিতক একশ’ মিটার রিলেতে, সেনাবাহিনীর সুমি আক্তার ৪০০ ও ৮০০ মিটার স্প্রিন্ট ও চার গুনিতক চারশ’ মিটার রিলেতে, নৌবাহিনীর সাবিহা আল সোহা চার গুনিতক চারশ’ মিটার রিলেতে এবং নৌবাহিনীর রিংকি খাতুন লংজাম্পে পদকের আশায় লড়বেন।
এবার গেমসে পদক পাওয়া প্রসঙ্গে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মন্টু বলেন, ‘আমরা যে কোন ইভেন্টে রৌপ্য ও ব্রোঞ্জতো পাবোই। তবে হাইজাম্পে মাহফুজুর রহমান কিংবা ৪০০ মিটার স্প্রিন্টে জহির রায়হানের কাছ থেকে অন্তত একটি স্বর্ণপদক প্রত্যাশা করছি। সাম্প্রতিক সময়ে তাদের পারফরম্যান্সই আমাদের আশাবাদি করে তুলেছে। তাই এবার আমরা স্বর্ণ জয়ের আশায় নেপাল যাবো।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।