Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শাকিবের জন্য কোটি টাকা ক্ষতির মুখে কয়েক প্রযোজক

বিনোদন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

চিত্রনায়ক শাকিব খান ও অপু বিশ্বাসের ডিভোর্স-এর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকটি নির্মাণাধীন সিনেমার কাজ বেশ কয়েক বছর ধরে আটকে আছে। তাদের ডিভোর্সের রেশ ধরে শাকিব অপুর সাথে সিনেমা করতে অনীহা প্রকাশ করছেন। এতে বিপাকে পড়েছেন তিন সিনেমার প্রযোজক। সিনেমাগুলোতে কয়েক কোটি টাকা লগ্নি করা হয়েছে। শাকিব সিনেমাগুলোর শূটিং শেষ করা নিয়ে টালবাহানা করায় সিনেমাগুলোর প্রযোজকরা চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। তারা কোটি টাকা লোকসানের শঙ্কায় আছেন। শাকিবের সাথে যোগাযোগ করে এবং চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সমিতিগুলোর সাথে যোগাযোগ করেও উক্ত প্রযোজকরা কোনো কূলকিনারা করতে পারছেন না। তারা এখন নিরুপায় হয়ে বসে আছেন। তাদের কেউ কেউ শাকিবের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার চিন্তা-ভাবনা করছেন। যদিও অপু বিশ্বাস সিনেমাগুলো শেষ করে দিতে ইচ্ছুক। তবে শাকিবের অনীহার কারণে তা শেষ করা যাচ্ছে না। শাকিব অপুকে নিয়ে শুরু করা অসমাপ্ত সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে লাভ ২০১৪, মা এবং মাই ডার্লিং। মনতাজুর রহমান আকবরের পরিচালনাধীন মাই ডার্লিং সিনেমার প্রযোজক মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, পাঁচ বছর আগে ২০১৪ সালে সিনেমাটির কাজ শুরু করেছিলাম। আজও শেষ হয়নি শুধু নায়কের খামখেয়ালিতে। এটা মানা যায়? আমার কোটি টাকার লোকসান হবে, আর বসে বসে তা দেখতে পারি না। কেউই এই লোকসান দেবে না। তাই বাধ্য হয়ে মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মনিরুজ্জামান বলেন, শাকিব যেখানে ১৭ দিনে একটি সিনেমার কাজ শেষ করে তা মুক্তি দিয়ে দিতে পারেন, সেখানে আমার সিনেমায় ২৮ দিন কাজ করেও শুটিং শেষ করে দিতে পারেননি। তার মতো পেশাদার একজন অভিনেতার কাছে এমন আচরণ কেউ প্রত্যাশা করে না। তিনি বলেন, সবাই শুধু প্রযোজকদের দোষ দেন যে আমরা সিনেমা বানাই না। কিন্তু সিনেমা করতে এসে আমরা যে কত রকম হেনস্তার শিকার হই তা কেউ জানে না। তিনি বলেন, ১৫ লাখ টাকা পারিশ্রমিকে চুক্তি হয় শাকিব খানের সঙ্গে। সাইনিংয়ের সময়ই ১৫ লাখ টাকার চেক তাকে দেয়া হয়। কিছুদিন শুটিং করেই নানা টালবাহানা শুরু করেন শাকিব। এ নিয়ে অনেক মিটিং পরামর্শ করেও কোনো সুরাহা হয়নি। এরপর ২০১৭ সালের দিকে শাকিব-অপুর স¤পর্কে ফাটল ধরে। তখন থেকে অপুর সঙ্গে কাজ করতে চান না শাকিব। ফলে মাই ডার্লিং সিনেমাটির কাজ আর শুরু করা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, শাকিবকে তার পারিশ্রমিকের ১৫ লাখ টাকা একবারে দিয়ে দিয়েছি। কিছুদিন কাজ করেই তিনি শিডিউল নিয়ে টালবাহানা শুরু করেন। আরো পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে বসেন। অপু বিশ্বাসও বিষয়টি জানেন। তাকে ২ লাখ টাকা দিলে শুটিংয়ে অংশ নেন। এরপর আবার টালবাহানা। পরবর্তীতে তাকে আরও তিন লাখ টাকা দিয়েছি। তারপরও শিডিউল দেয়নি। এটি ছিল অপু বিশ্বাস প্রেগনেন্ট হওয়ার আগের ঘটনা। এর মাঝে সে অপু বিশ্বাসের সঙ্গে অন্য সিনেমায় কাজ করলেও আমাকে শিডিউল দেননি। শিডিউল চাইলে বলতো দিচ্ছি, দেব। এখন পর্যন্ত শিডিউল দেয়নি। আমার এত টাকার ক্ষতিপূরণ কে দেবে? এখন তো সিনেমার দর্শকই নেই। তবুও সিনেমাটার কাজ শেষ করে রিলিজ দিতে পারলে কিছু টাকা ফেরত পাওয়া যেত। কিন্তু শুটিং শেষ না করলে সেটা কি করে সম্ভব? মনিরুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে চলচ্চিত্রের সংগঠনগুলোতে অভিযোগ করেও কোনো ফলাফল পাইনি। কয়েক দফায় প্রযোজক সমিতিকে জানিয়েছি। লাভ হয়নি। শিল্পী সমিতিতেও বিষয়টি নিয়ে গিয়েছি। তারা দেখবো-দেখছি বলে পাশ কাটিয়ে গেছে। সম্প্রতি নির্বাচিত প্রযোজক সমিতিতে আবার অভিযোগ করেছি। তারা আশা দিয়েছেন মিটমাটের। দেখি কি করেন। তারাও তো প্রযোজক। আমার দুঃখটা নিশ্চয়ই বুঝবেন। আমার কোনো রাগ বা ক্ষোভ নেই কারোর প্রতি। আমি চাই যে টাকা লগ্নি করেছি সেই টাকার একটা ব্যবস্থা হোক। সিনেমাটি শেষ হোক এবং মুক্তি পাক। পরিচালক সমিতির কাছে গিয়েছি। তারা পরামর্শ দিয়েছেন আইনি ব্যবস্থা নিতে। সাংগঠনিকভাবে তাদের যা করণীয় সেটুকু দিয়ে আমাকে সাহায্য করবেন বলে কথা দিয়েছেন। তিনি বলেন, অপু বিশ্বাস শুটিং করতে রাজি আছেন। যদি শাকিব রাজি না হন তাহলে তিনি আমার ক্ষতিপূরণ দেবেন। এই সিনেমার জন্য আমি ২ কোটি টাকা ক্ষতির মুখে। ক্ষতিপূরণ না পেলে আমি মামলা করবো।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শাকিব


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ