মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
৫ আগস্টের পর সবচেয়ে বড় যে তথ্য অনুসন্ধানী দল অধিকৃত কাশ্মীর সফর করেছে, তারা দেখতে পেয়েছে যে, সেখানকার বিচার ব্যবস্থা মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে, ব্যাপক মাত্রায় নির্যাতনের পুনরাবৃত্তির অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং জনগোষ্ঠির একটা বিপুল সংখ্যক অংশ মানসিক ট্রমায় আক্রান্ত হয়েছে।
এই টিমে ছিলেন মানবাধিকার আইনজীবী মিহির দেশাই, লারা জেসানি, ভিনা গাওদা, ক্লিফটন ডি’রোজারিও, আরতি মুন্ডকুর এবং সারাংগা উগালমুগলে, ছিলেন মনোরোগবিদ অমিত সেন, ট্রেন ইউনিয়ন নেতা গৌতম মোদি এবং ব্যাঙ্গালুরু-ভিত্তিক অধিকার কর্মী নাগারি বাবাইয়াহ, রামদাস রাও ও স্বাতি সেশাদ্রি। ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত উপত্যকার পাঁচটি জেলা সফর করেছেন তারা। তাদের রিপোর্টে নির্যাতন অধ্যায়ে এমন অভিযোগের বর্ণনা রয়েছে যে, যেখানে আটককৃতদের পেটানো হয়েছে এবং তাদের চিৎকার রেকর্ড করে লাউডস্পিকারে বাজানো হয়েছে, যৌনাঙ্গে ইলেকট্রিক শক দেয়া হয়েছে এবং নারী ও বালকদের যৌন নির্যাতন করা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার অভিযোগকারী প্রতিহিংসার ভয়ে কেউই তাদের নাম বলতে রাজি হননি।
সংবাদ সম্মেলনে উগালমুগলে বলেন, ‘বিবিসি নির্যাতন নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রচার করেছিল, যেখানে শোপিয়ান গ্রামে এক নির্যাতিত ব্যক্তি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার পর সশস্ত্র বাহিনী আবার তার উপর নির্যাতন চালায় এবং তাকে বলে, কত বড় সাহস, তুই মিডিয়ার সাথে কথা বলিস?’ এই টিমের ভাষ্যমতে, আদালতের দ্বারস্থ হওয়াটা উপত্যকার মানুষের জন্য অসম্ভব হয়ে গেছে।
টিমের রিপোর্টে বলা হয়েছে, হাইকোর্টের আইনজীবীরা আমাদের জানিয়েছেন যে, যোগাযোগ বন্ধ থাকায় এবং চলাফেরায় বিধিনিষেধ থাকায় পুরো বিচার ব্যবস্থা যেখানে অকার্যকর হয়ে গেছে, এ অবস্থায় আইনজীবীরাও সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা, রাষ্ট্র কর্তৃক দমন অভিযান, এবং আইনজীবী ও বার অ্যাসোসিয়েশানের বিশিষ্ট সদস্যদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে নিয়মিত আলাদত বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বার অ্যাসোসিয়েশান জরুরি বিষয়গুলো দেখভালের জন্য আদালতে যাওয়ার জন্য ছয়জন আইনজীবীকে বাছাই করেছে। মূলত পিএসএ’র (পাবলিক সিকিউরিটি অ্যাক্ট) অধীনে আটকাদেশকে চ্যালেঞ্জ করা, বন্দী প্রদর্শন বা আটক ব্যক্তিদের সাথে পরিবারের সদস্যদের দেখা করার মতো জরুরি বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছেন তারা।
কিছু বন্দী প্রদর্শন আবেদন করা হচ্ছে, যেগুলোর অর্থ হলো বন্দীকে আদালতের সামনে উপস্থিত করে এটা জানানো যে, তাকে অবৈধভাবে আটক করা হয়েছে কি না। পিএসএ আইনের অধীনে বিনা বিচারে দীর্ঘকাল আটকে রাখা যায়।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘আমাদেরকে বলা হয়েছে যে, ৫ আগস্টের আগে প্রায় ২০০টি বন্দী প্রদর্শন মামলা অনিষ্পন্ন ছিল। এখন এ ধরনের আবেদন রয়েছে ৬০০রও বেশি। ৫ আগস্ট থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩৩০ এরও বেশি এ ধরনের আবেদন করা হয়েছে।’
আইনবহির্ভূতভাবে আটকের সংখ্যা রয়েছে অগণিত। এখন রাষ্ট্র ছাড়া আর কেউ জানে না যে, কত মানুষকে অবৈধভাবে বন্দী করে রাখা হয়েছে। কাশ্মীরের অধিবাসীরা বলেছে, তারা জানতে পেরেছে যে, ১৩ হাজারেরও বেশি মানুষকে অবৈধভাবে বন্দী করে রাখা হয়েছে। যাদের আটক করা হয়েছে, তাদের পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কের মধ্যে আছে যে, তারা যদি বন্দি করার বিষয়ে অভিযোগ করেন বা আদালতে বন্দী প্রদর্শনের জন্য আবেদন করে বা অন্য কোন উপায়ে তাদের মুক্তির চেষ্টা করে, তাহলে তাদেরকে পিএসএ আইনের অধীনে আটক দেখানো হবে এবং তখন তাদের মুক্তি পাওয়া অসম্ভব হয়ে যাবে।’
গাওদা জানান, বন্দীদের ব্যাপারে কোন এফআইআর নিবন্ধন করছে না পুলিশ এবং বন্দীদের কোন রেকর্ড রাখছে না। তিনি বলেন, ‘হিসাব নিকাশের ব্যাপারে অভাব রয়েছে এবং মানুষ এমনকি শিশুদের জন্যেও জামিনের আবেদন করতে পারছে না কারণ সেখানে কোন এফআইআর নেই। মানুষ আইনের সহায়তা নিতে অক্ষম। ইউএপিএ আদালত হলো শ্রীনগরে এবং অন্যান্য জেলার মানুষের সেখানে যাওয়ার জন্য কোন যানবাহন নেই।’
রিপোর্টে কাশ্মীরের মানসিক চাপের মধ্যে থাকা মানুষদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে একটি অধ্যায় রয়েছে। উপত্যকার মানুষের সাথে কথা বলে এটি তৈরি করেছেন দিল্লী-ভিত্তিক মনোরোগবিদ সেন। এতে বলা হয়েছে, শিশু ও কিশোর-কিশোরীরা দুটো জেলাতে মানসিক চিকিৎসা নিতে এসেছে এবং তারা সশস্ত্র বাহিনীর ভয়ঙ্কর সহিংসতা ও রাত্রিকালিন অভিযানের বিবরণ দিয়েছে। এই সব অভিযান শিশু কিশোর আর তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ত্রাস আর আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। তাদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক, চরম উদ্বেগ, প্যানিক অ্যাটাক, ডিপ্রেসিভ ও ডিসোসিয়েটিভ লক্ষণ, পোস্ট-ট্রমাটিক লক্ষণ, আত্মহত্যার প্রবণতা ও তীব্র ক্ষোভের বহিপ্রকাশের মতো লক্ষণ দেখা দিয়েছে। জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ মানুষের মধ্যে মানসিক বিষাদের মাত্রা বেড়ে গেছে। সূত্র: এসএএম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।